সৈয়দ নাজমুল হাসান, ঢাকা
মুসলিম উম্মাহর সার্বজনীন দুইটি উৎসবের অন্যতম একটি ঈদুল আজহা যাকে আমরা কোরবানির ঈদও বলে থাকি। এই ঈদের প্রধান আকর্ষণ পশু কোরবানি করা। এটি ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান ও শুরু থেকে শেষ-পুরোটই একটি ইবাদত। নিজের অর্থে কেনা পশুটি আল্লাহর নামে উৎসর্গ করে জবাই করার মাধ্যমে একজন প্রকৃত মুসলমান মূলত নিজেকে আল্লাহর কাছে সমপর্ণের শিক্ষা নেয়।
বর্তমানে দেশে কোরবানির পশুর দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকের পক্ষে একক ভাবে গরু কোরবানি দেওয়া অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। তাছাড়া ছাগল কোরবানি দেয়াও অনেকের পছন্দের তালিকায় থাকে না। আবার শহুরে জীবনে কয়েকজন মিলে ভাগে কোরবানি দেয়াও কঠিন হয়ে যায় অনেক সময়। তাছাড়া কীভাবে কোরবানি দেবেন, কার সঙ্গে দেবেন, সংশ্লিষ্টদেরকে খুঁজে বের করাসহ পশু কেনা থেকে শুরু করে রক্ষণাবেক্ষণ, মাংস বণ্টন ব্যবস্থাপনা অর্থাৎ প্রত্যেক অংশীদারের অংশ সমান হতে হবে। কারো অংশ অন্যের অংশ থেকে কম হতে পারবে না ইত্যাদি কাজ করা সহজ হয়ে উঠে না। এ পরিস্থিতি বিবেচনা করে রাজধানীর মোহাম্মদপুর বসিলা গার্ডেন সিটি.দয়াল হাউজিং-এ গড়ে উঠা দেশের স্বনামধন্য ও ফার্ম সেক্টরের আইকন হিসেবে পরিচিত মেঘডুবি এগ্রো ধর্মীয় অনুশাসন মেনে বাণিজ্যিক ভাবে চালু করেছে ভাগে কোরবানি।
এবছর ক্রেতাসাধারণের আর্থিক সঙ্গতির দিক বিবেচনা করে মেঘডুবি এগ্রো তিনটি (০৩) প্যাকেজের সুব্যবস্থা রেখেছে। প্যাকেজগুলো হল, ১) গরুর মাংসের পরিমান ১৯-২৩ কেজি এবং প্রতিটি ভাগের মূল্য ১৯৯০০ টাকা, ২) গরুর মাংসের পরিমান ২৫-২৯ কেজি এবং প্রতিটি ভাগের মুল্য ২৪৯০০ টাকা, ৩) খাশির মাংসের পরিমান ১১-১৩ কেজি এবং প্রতিটি ভাগের মূল্য ১৮০০০ টাকা।
এদিকে, নির্ধারিত গরুর ওজন অনুযায়ী বুকিংকৃত প্যাকেজের মাংস সম্পূর্ন পরিচ্ছন্ন ভাবে বাড়িতে পৌছে দেয়া হয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। প্রতি অংশের ধার্যকৃত মুল্যের বাহিরে অতিরিক্ত কোন সার্ভিস চার্জ নিচ্ছেন না তারা। অপরদিকে, কোরবানিকৃত মাংস সুবিধা বঞ্চিত মানুষ কিংবা এতিমখানায় দানের ক্ষেত্রে গ্রাহকের নির্দেশনা অনুযায়ী বন্টন করার ব্যবস্থা রেখেছেন মেঘডুবি এগ্রো।
মেঘডুবি এগ্রিকেয়ার লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মাদ আলী শাহীন জিবি নিউজকে বলেন, " আমরা দেশের সর্বস্তরের মানুষের চিন্তা করে কাজ করছি। আমাদের এখানে বেশ কয়েক ধরেনের সার্ভিস রয়েছে। আস্ত গরু বিক্রি শুধু একমাত্র লক্ষ্য নয়। আমরা আস্ত গরু বিক্রির পাশাপাশি গোখাদ্য উৎপাদন ও বিপণন, খামারিদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা, স্লোটার সার্ভিস এবং বিধিবিধান ও অনুশাসন মেনে বাণিজ্যিক ভাবে ভাগে পদ্ধতিতে কোরবানি করে থাকি। পশুর দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকের পক্ষে একক ভাবে গরু কোরবানি দেওয়া অনেকটা কষ্টসাধ্য। তাছাড়া ঢাকা শহরে গরু রাখা-কোরবানি করা অনেক সময় জায়গার কারনে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হয়ে ওঠেনা। অনেক ক্ষেত্রে ঈদের দিন প্রপার টাইমে কসাই পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এইসব দিক আমরা আমাদের খামারের জন্মলগ্ন থেকে মাথায় রেখেই কাজ করে যাচ্ছি।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা ইসলামিক শরীয়ত মোতাবেক স্থানিয় মসজিদের তিনজন ইমামকে দিয়ে জবাই করে থাকি এবং দক্ষ কসাইদের দ্বারা বাকি কার্যক্রম সম্পন্ন করে প্যাকেজ অনুযায়ী যার যার ভাগ স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে সংরক্ষণ করে সময় মতো গ্রাহকদের বাড়িতে পৌঁছে দেই কোন প্রকার সার্ভিস চার্জ ছাড়া।"
উল্লেখ্য, বাণিজ্যিক ভাবে ভাগে কোরবানি করার সেবা কার্যক্রম বিশ্বের বহু দেশে রয়েছে। এধরনের সেবা কার্যক্রম সত্যিকার অর্থে অনেক সুবিধাজনক বলে মনে করছেন আগ্রহীরা। এতে সহজে কোরবানিতে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি হয়। ইবাদাত আদায়ের সহজ পদ্ধতি গ্রহণে ইসলামে বাধা-নিষেধ নেই। তবে সেই সহজ পদ্ধতি অবশ্যই শরীয়াহ-সম্মত হতে হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন