এমিরেটসের বিরুদ্ধে সত্তরোর্ধ্ব নারী যাত্রীকে হয়রানির অভিযোগ

gbn

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ও ইতালির মিলান বিমানবন্দরে ৭১ বছর বয়সী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক মার্কিন নাগরিককে (নারী) হুইলচেয়ার সুবিধা না দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, হুইলচেয়ারের জন্য এমিরেটস কাস্টমার সার্ভিসে জরুরি সহায়তা চেয়েও কোনো প্রতিকার পাননি। এয়ারলাইন্সটির এমন কর্মকাণ্ডে ওই নারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

 

গত ১০ জুলাই ঢাকা থেকে নিউইয়র্ক রুটে যাওয়ার সময় লায়লা হুসেইন নামে ওই নারী যাত্রীর সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটে। ওই যাত্রীর মেয়ে ইশরাত জাহান শনিবার (১২ জুলাই) সাংবাদিকদের জানান, একজন বয়স্ক যাত্রী হিসেবে লায়লা হুসেইন হুইলচেয়ার সুবিধা প্রাপ্য। আগে থেকে এয়ারলাইন্সকে হুইল চেয়ারের চাহিদা জানানোও হয়েছিল। ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে হুইলচেয়ার সুবিধা পেলেও দুবাই বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তাকে হুইলচেয়ার সুবিধা দেওয়া হয়নি। ক্রুদের জানানো সত্ত্বেও প্রতিশ্রুত হুইলচেয়ার পাননি।

একপর্যায়ে ওই যাত্রী প্রতিবাদ করলে এমিরেটসের গ্রাউন্ড স্টাফ তাকে ‘অল্প পথে হেঁটে যাওয়ার’ অনুরোধ করেন। তবে দীর্ঘক্ষণ বিমানবন্দরে হাঁটার পরও কোনো হুইলচেয়ার সহায়তা পাননি। দুবাই বিমানবন্দরের এক টার্মিনাল থেকে অন্য টার্মিনালে যেতে ট্রেন ব্যবহার করতে হয়। ৭১ বছরের ওই নারীকে পায়ে হেঁটে ট্রেনে ওঠানামা করানো হয়েছে।

 

ইশরাত জাহান আরও বলেন, নিউইয়র্ক যাওয়ার পথে ইতালির মিলান বিমানবন্দরে স্টপওভার ছিল। এ দুই ঘণ্টার স্টপওভারের সময় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। এ স্টপওভারে সাধারণত নিউইয়র্কগামী যাত্রীদের বিমান থেকে নামতে হয় না। তবে সেখানে সব যাত্রীদের প্লেন থেকে নামিয়ে আনা হয়, কিন্তু তাদের বসার জন্য কোনো আসন ব্যবস্থা রাখা হয়নি। লাইলা হুসেইন বয়স ও শারীরিক অবস্থার কারণে দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হন এবং এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। লায়লা হুসেইনের মতো ইকে-২০৫ ফ্লাইটের সব যাত্রীকে বিমানবন্দরে দুই ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখে এমিরেটস।

মায়ের অসুস্থতার বিষয়টি জানতে পেরে নিউইয়র্কে অবস্থানরত অসুস্থ যাত্রীর মেয়ে ইশরাত জাহান তাৎক্ষণিকভাবে এমিরেটস কাস্টমার সার্ভিসে মায়ের জরুরি সহায়তা চেয়ে যোগাযোগ করেন। তবে তারাও সমাধান দিতে পারেনি। ইশরাত জাহান জানান, এমিরেটসের কাস্টমার কেয়ার সেন্টারের +১৮০০৭৭৩৯৯৯ এ নম্বরে ফোন করলে একজন এজেন্ট বলেন, ‘এ বিষয়ে তিনি কোনো সাহায্য করতে পারবে না। কারণ তিনি এখন মিলান বিমানবন্দরে নেই।

এবিষয়ে আজ শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমিরেটস জানায়, ‘আমরা মিলান মালপেনসা বিমানবন্দরে চলাচল সহায়তা সংক্রান্ত গ্রাহকের অভিযোগ তদন্ত করছি। আমরা এ ধরনের বিষয়গুলোকে গুরুত্বসহকারে নেই এবং পরিস্থিতি বোঝার জন্য আমাদের বিমানবন্দর এবং গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি এবং গ্রাহকদের সরাসরি সাড়া দেবো। আমরা আমাদের সব যাত্রীর জন্য সহজলভ্য এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

 

শাহজালাল বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বিমানবন্দরে বয়স্ক বা শারীরিকভাবে অক্ষম যাত্রীদের হুইলচেয়ার সেবা দেওয়া একটি আন্তর্জাতিকভাবে গৃহীত বাধ্যতামূলক ব্যবস্থা, আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা (আইকাও) ও ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন (আয়াটা) উভয়ের নীতিমালায় যাত্রীর হুইলচেয়ার সুবিধা দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সকে।

আইকাওয়ের অ্যানেক্স-৯ (ফ্যাসিলিটেশন) -এর অধ্যায়-৮ এর স্ট্যান্ডার্ড ৮.৩৯ -এ বলা হয়েছে, হুইলচেয়ার এ সেবা দেওয়ার দায়িত্ব বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, এয়ারলাইন্স ও অন্যান্য সেবাদানকারীদের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে।

আয়াটা রেজ্যুলিউশন ৭০০ অনুযায়ী, একটি এয়ারলাইন্সকে পারসনস উইথ রিডিউসড মবিলিটি (পিআরএম) হিসেবে চিহ্নিত যাত্রীকে যাত্রীসেবা দিতে হবে। এরই মধ্যে হুইলচেয়ার উল্লেখযোগ্য।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন