তেল-তুলা দিয়ে, মিথ্যা প্রশংসা করে ইবলিশের হৃদয় প্রশান্ত হতে পারে! ইদানীং মানুষের হৃদয় হচ্ছে! কান কথা শুনে গুনে গুনে যারা মানুষের সাথে বে-ইনসাফ করে তাদের সাথে স্রষ্টার ইনসাফ হবে!
রাজু আহমেদ। কলামিস্ট। জিবি নিউজ ||
ঘুমাতে যাওয়ার কালেও যদি অনুশোচনা হয়-কোন ব্যক্তিগত আক্রোশ, দ্বন্দ্বে কাউকে নীতিহীনভাবে হারিয়ে দিয়েছেন কিংবা কোন সম্পর্ক, স্বার্থের পক্ষ থেকে কাউকে যুক্তিহীন জিতিয়ে দিয়েছেন তবে সেটা প্রতিদানে ফিরবে! নিশ্চয়ই অনুরূপে নয়; ভিন্নরূপে। অবৈধপথে যে চাওয়াতিরিক্ত পেয়েছে তার হাসির এই আলোতো কী মূল্য আছে সেটা বিতর্কাধীন করতে পারেন কিন্তু যে যোগ্য বঞ্চিত হয়েছে-তার দীর্ঘশ্বাসের খেসারত কোথাও না কোথাও দিতেই হবে!
বিন্দুমাত্র অ-ন্যায্যতা শোধহীন যাবে না। অপরাধী অপরাধের উত্তেজনায় ভুলের গভীরতা উপলব্ধি করতে পারে না বটে কিন্তু অমানুষের বিবেকও ক্ষণকালের জন্য হলেও জাগ্রত হয়। সেই সময়ে দংশন যে মানসিক অস্থিরতার সৃষ্টি করে সেটা শাস্তি হিসেবে ক্ষুদ্র হতে পারে কিন্তু ক্ষতি হিসেবে বৃহত্তর! তাছাড়াও, ছেড়ে দেয়া মানে ছাড় দেয়া নয়! আমার যেটুকু ভালো সেটুকুর আলো প্রতিদানে ফিরবে। যেটুকু পাপ সেটুর পরিতাপ পোহাতে হবে! ইহজনম শেষ কথা নয়! কুকুর-গরুর পরজনম নাই হয়তো কিন্তু মানুষের কিছু একটা আছে। দাঁড়িপাল্লা দাঁড়াবে! প্রশান্তিতে জড়াবে নয়তো অগ্নিকুন্ডে তাড়িয়ে বেড়াবে!
যোগ্য কাউকে রুখে দেয়ার জন্য যখন সব অপদার্থ-বিষাক্তরা এক কাতারে দাঁড়ায়, ফাঁদ পাতে তখন সততা-ন্যায়পরায়নতার বুলি মিটমিট করে ইঙ্গিতপূর্ণ হাসে! সে অপরাধের, সব অপবাদের শাস্তি কিংবা পুরস্কার এই আলোতে মিটবে না বটে তবে আত্ম-কেফিয়তের তীর বিবেকের জাগ্রতক্ষণে কুঁড়ে কুঁড়ে খাবে! এক প্রজন্মের অপরাধের দায় আরেক প্রজন্মকে মূল্য দিয়ে শোধরাতে হবে! চুকাতে হবে ঋণ।
সামান্য সামন্য বঞ্চনা যোগ্যদের যাত্রা থমকে দিতে পারে কিন্তু থামিয়ে দিতে পারে না। অযোগ্যরা সাময়িক প্রশংসিত হলেও পরিনামে পর্যুদস্ত হয়! অসততায় যে বলিরেখার ছাপ আঁকে তাতে শ্রদ্ধা নষ্ট হয়ে যায়। শিক্ষা-বিবেক এবং বাকপটুতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে!পৃথিবীর সব চোখ অন্ধ নয়, সব বিবেক ঘুমিয়ে নেই! কাজেই স্বার্থের জন্য সত্যকে হারিয়ে দিলেও মিথ্যা স্থায়ীভাবে জয়লাভ করতে পারে না!
বিবেকের চেয়ে আমার জন্য বড় কোন বিচারালয় নাই। ঘুমুতে যাওয়ার আগে একবার যদি চোখ বন্ধ করি তবেই বীজ থেকে গজানো চারার মত ভুলগুলো উঁকি মেরে তাকাবে! ক্ষমা চাওয়াই শেষ কথা নয়! ক্ষমা পাওয়ার যৌক্তিকতাও থাকতে হবে! ভুল হওয়া এবং ইচ্ছে করে ভুল করার মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে আঘাত করা/কষ্ট দেয়ার বিবেচনায় তারতম্য নাই বটে কিন্তু অপরাধ হিসেবে বিশাল ব্যবধান থেকে যায়! চোখের জলে, কলিজার জ্বলনে, বুকের আগুনে যে নালিশ উর্ধ্বগামী হয় তা বিনিময় না নিয়ে ফেরে না! কখনোই পাপীকে ছাড়ে না!
তেল-তুলা দিয়ে, মিথ্যা প্রশংসা করে ইবলিশের হৃদয় প্রশান্ত হতে পারে! ইদানীং মানুষের হৃদয় হচ্ছে! কান কথা শুনে গুনে গুনে যারা মানুষের সাথে বে-ইনসাফ করে তাদের সাথে স্রষ্টার ইনসাফ হবে! সে ইনসাফ কোন সুপারিশে প্রভাবিত হবে না! যাকে ধরার সে ছাড়া পাবে না! মানুষের কাছে চাওয়ার পরেও আরও উর্ধ্বে চাওয়া যায়! যেখানে যাওয়া যায় না কিন্তু চাওয়া পাওয়া যায়! নালিশের জন্য সেটাই নিরাপদ জায়গা! জালিম এবং মাজলুম-কৈফিয়ত দিতে হবে এবং প্রত্যাশাও পুরস্কার হয়ে ফিরে আসবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন