সাইদা মুনা তাসনিমকে অভিনন্দন ‘ডিপ্লোম্যাট অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার' লাভের জন্য

gbn

দে লো য়া র  জা হি দ ||

যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমকে প্রানঢালা অভিনন্দন তার ‘ডিপ্লোম্যাট অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কারে ভূষিত হওয়ার জন্য। যুক্তরাজ্যের স্বনামধন্য সাময়িকী ‘ডিপ্লোম্যাট’ তাকে এ পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে জলবায়ু কূটনীতিতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতির মাধ্যমে বাংলাদেশকেও সম্মানিত করেছে। গত ২৫ এপ্রিল সোমবার লন্ডনের বিল্টমোর মেফেয়ারে ২৫০ জনেরও বেশি কূটনীতিকের উপস্থিতিতে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে ‘ডিপ্লোম্যাট’ ম্যাগাজিনের সম্পাদক  ভেনিশা ডি ব্লক ভ্যান কাফেলার হাইকমিশনারের হাতে এ পুরস্কারটি তুলে দেন। এ প্রথম কোনো বাংলাদেশী কূটনীতিককে যুক্তরাজ্যে এমন স্বীকৃতি দেয়া হলো।

" হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমকে পুরস্কার প্রদানের সময় ‘ডিপ্লোম্যাট’ যুক্তরাজ্যের সম্পাদক ভেনিশা ডি ব্লক ভ্যান কাফেলার বলেন, “লন্ডনে জলবায়ু কূটনীতিতে অসামান্য অবদান ও নেতৃত্বের পাশাপাশি বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে অব্যাহত উদ্যোগ ও সাফল্যের জন্য তাঁকে এই সম্মাননা দেয়া হয়েছে।

‘ডিপ্লোম্যাট অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার গ্রহণকালে হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম  বলেন, এই স্বীকৃতি যা বিশেষ করে জলবায়ু কূটনীতির জন্য প্রদান করা হলো তা আমার এবং আমার দেশের জন্য একটি বড় গর্বের বিষয়। আমি আমার প্রিয় রাষ্ট্রদূতদের কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ যে তাঁরা আমাকে এই অ্যাওয়ার্ড-এর জন্য মনোনীত করেছেন।

হাইকমিশনার আরো বলেন, এই অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তির ক্ষেত্রে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেও গভীরভাবে কৃতজ্ঞ যিনি আমাকে কোপ-২৬ এবং ‘ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামে’ বাংলাদেশের প্রেসিডেন্সির গুরুত্বপূর্ণ বছরে লন্ডনে বাংলাদেশের পক্ষে জলবায়ু কূটনীতির সুযোগ দিয়েছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী কোপ-২৬ এ জলবায়ু বিপর্যয়ে সবচেয়ে ঝুঁকির মুখোমুখি মানুষের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর এবং অন্যতম প্রভাবশালী জলবায়ু নেতার ভূমিকাই কেবল পালন করেননি, এক্ষেত্রে আমাদেরও অশেষ অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। বিশেষ করে জলবায়ু কূটনীতি বিষয়ে তিনি আমাদের শিক্ষক স্থানীয়।

হাইকমিশনার তাঁর অ্যাওয়ার্ডটি লাখো জলবায়ু অভিবাসী এবং বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে জলবায়ু বিপর্যয়ের শিকার অগণিত মানুষের প্রতি উৎসর্গ করেন।(২৮ এপ্রিল, ২০২২ (বাসস)

 লন্ডনে এক বর্ণিল অনুষ্ঠানে ১৬৫টিরও বেশি দেশের রাষ্ট্রদূতদের মনোনয়ন ও ভোটের ভিত্তিতে প্রতিবছর ‘ডিপ্লোম্যাট অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়।

বাংলাদেশি কূটনীতিক হিসেবে এ পুরস্কারে ভূষিত হওয়ায় কেন প্রবাসীদের নিকট এতোটা আনন্দের বিষয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না।  খুব স্বল্প সংখ্যক বাংলাদেশি কূটনীতিক প্রবাসে তাদের পেশাদারিত্বের নজির রাখতে পারেন। বিশ্বরাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা বাংলাদেশ; দ্রুত পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক নিরাপত্তার প্রেক্ষাপট রচনার পথিকৃৎ ও বাংলাদেশ। এর বিপুল অগ্রগতি থমকে যাচ্ছে আমলাতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদ ও দুর্নীতি প্রতিকারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে বিলম্ব বা ব্যর্থতার জন্য।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘এ অঞ্চলে রাজনীতিকদের তুলনায় আমলারা অনেক বেশি কর্তৃত্ববাদী। আমাদের দেশেও আমলারা কর্তৃত্ববাদী। অদ্ভুত ধরনের আমলাতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদ আছে। রাজনীতিকদের চেয়ে আমলাদের কর্তৃত্ববাদ বেশি। আমলাতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদের কারণে উন্নয়নের গতি থমকে যাচ্ছে।’( দৈনিক প্রথমআলো, ডিসেম্বর ৩০)  

বাংলাদেশে আমলাতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদ যে জেঁকে বসেছে তা পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান অকপটে স্বীকার করে নিয়েছেন। দেশের উন্নয়ণ ও রাজনৈতিক ময়দান এখন আমলাদের নিয়ন্ত্রণে মন্ত্রীর এ বক্তব্যের সাথে আরো একটি বিষয় যোগ করতে চাই তা হলো বাংলাদেশের হাইকমিশনগুলোতে ও এ আমলাতন্ত্র ভর করেছে। জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও  স্বাধীনতাত্তোর আমলাদের কর্তৃত্ববাদী আচরণের বিরুদ্ধে শক্ত মনোভাব ও অবস্থান নিয়েছিলেন সে সময়ে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দূতাবাসগুলো ছিলো সেবামুখী।  

হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম পেশাদারিত্বের অনন্য এক নজির স্থাপন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোপ-২৬ এবং ‘ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামে’ বাংলাদেশের প্রেসিডেন্সির গুরুত্বপূর্ণ বছরে লন্ডনে বাংলাদেশের পক্ষে জলবায়ু কূটনীতির যে সুযোগ  দিয়েছেন হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমকে এর জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। প্লেটোর মতে  কৃতজ্ঞতা হল আপনার নিজের ইচ্ছাগুলিকে একপাশে রাখার প্রয়োজন হলেও কেউ আপনাকে যে সুবিধাগুলি দিয়েছে তার জন্য স্বীকৃতি দেওয়া এবং কৃতজ্ঞতা দেখানো যা একটি দায়িত্ব ও কর্তব্য। এরিস্টটলের মতে আমাদের মানবিক মর্যাদা, "আমাদের মধ্যে যে সেরা" তার প্রতি কৃতজ্ঞতার একটি সম্পর্ক নির্দেশ করে । অধিকন্তু, এই সম্পর্কটি আমাদের শেখায় যে কৃতজ্ঞতা নিছক ধন্যবাদের চেয়ে বেশি কিন্তু নিজেকে দেওয়ার ধারণার সাথে অনন্য ভাবে তা আবদ্ধ। সাইদা মুনা তাসনিমকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা।

/
লেখক : দেলোয়ার জাহিদ, সাবেক রিসার্চ ফ্যাকাল্টি মেম্বার ইউনিভার্সিটি অব ম্যানিটোবা, (সেন্ট পলস কলেজ) কানাডা, জন হাওয়ার্ড সোসাইটি অফ ম্যানিটোবা, সাবেক বোর্ড অব ডিরেক্টরস মেম্বার প্রাবন্ধিক ও রেড ডিয়ার (আলবার্টা) নিবাসী।

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন