হাকিকুল ইসলাম খোকন ,,
এই প্রথম মুখোমুখি হলেন ট্রাম্প-হ্যারিস।আমেরিকায় ভোটের আর আট সপ্তাহ বাকি। ট্রাম্প না কমলা— কে হবেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট? সে নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। শুরু হয়ে গিয়েছে তোড়জোড়ও। দীর্ঘ নির্বাচনী প্রচারের পর এই প্রথম মুখোমুখি বিতর্কসভায় অংশ নিলেন তাঁরা।সভার শুরুতে একে অপরের সঙ্গে হাত মেলালেন। তার পর শুরু হল দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মুখোমুখি বিতর্ক। গর্ভপাত, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, অর্থনীতি থেকে আবাসন সংকট— বাদ গেল না কিছুই! এ ভাবেই মঙ্গলবার গভীর রাতে পেনসিলভেনিয়ায় এবিসি নিউজ় আয়োজিত মুখোমুখি বিতর্কসভায় (প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেট) প্রথম বার ডেমোক্র্যাট-প্রার্থী কমলা হ্যারিসের মুখোমুখি হলেন রিপাবলিকান-প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।আসলে ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে ট্রাম্পের দাবি ছিল, তিনি যদি আমেরিকার মসনদে থাকতেন তাহলে এতদিনে কিয়েভে পৌঁছে যেতেন পুতিন। আর তার পরই তাঁকে আক্রমণ করেন কমলা হ্যারিস। বলেন, ”পুতিন কিয়েভে বসে থাকতেন এবং তাঁর চোখ থাকত ইউরোপের দিকে। শুরু করতেন পোল্যান্ড দিয়ে। খুব তাড়াতাড়ি আপনাকে হাল ছেড়ে দিতে হত। আপনি বন্ধুত্ব বলে মনে করলেও ওই একনায়ক আপনাকে গিলেই দ্বিপ্রাহরিক খাওয়া সারত।” পাশাপাশি রাশিয়া না ইউক্রেন, কার জয় চান আপনি এপ্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ”আমার মনে হয় আমেরিকার সবচেয়ে বড় আগ্রহ থাকবে যুদ্ধ শেষ হওয়া নিয়ে।”প্রসঙ্গত, এদিন ডিবেট শুরু হলে অনন্য সৌজন্যের নিদর্শন রাখেন কমলা হ্যারিস। নিজেই এগিয়ে গিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে করমর্দন করেন আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট। তার পরেই ট্রাম্পকে বিঁধে কমলা বলেন, উনি ক্ষমতায় এলে কোটিপতি এবং বড় ব্যবসায়ীদের করছাড়ের সুযোগ করে দেবেন। নিজের মধ্যবিত্ত পরিবারের কথা মনে করিয়ে দিয়ে কমলা বলেন, “আমজনতার জন্য ট্রাম্পের কোনও পরিকল্পনা নেই।” কমলা সাফ জানান, ট্রাম্পের ‘কীর্তি’ শুধরে নিতেই চার বছর সময় লেগে গিয়েছে ডেমোক্র্যাট সরকারের। নানা বিষয়েই কথা হয় তাঁদের। রীতিমতো আক্রমণাত্মক মেজাজেই ডেমোক্র্যাট নেত্রী চাপে রাখলেন রিপাবলিকান নেতাকে।যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রথমবারের মতো সরাসরি টেলিভিশন বিতর্কে মুখোমুখি হলেন দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। বহুল আলোচিত বিতর্কটি নিয়ে গণমাধ্যমগুলোতেও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বিতর্কে কে জিতলেন? কী বলছে মার্কিন গণমাধ্যমগুলো? বেশিরভাগ মার্কিন গণমাধ্যম বলছে, কমলা হ্যারিস বিতর্কে জিতেছেন।যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের ফিলাডেলফিয়ায় স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত নয়টায় (বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল সাতটায়) সম্প্রচারমাধ্যম এবিসি নিউজের আয়োজনে এ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিতর্কের সঞ্চালক ছিলেন ডেভিড মুইর ও লিনসে ডেভিস।নিউইয়র্ক টাইমস বলেছে, হ্যারিস অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে ট্রাম্পকে শুরু থেকেই রক্ষণাত্মক ভূমিকায় রেখেছিলেন। বিতর্ক জুড়ে নিজের কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছিলেন। যেখানে হ্যারিস একটি তীক্ষ্ণ এবং স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন বিতর্কে সেখানে ট্রাম্পকে ক্ষুব্ধ এবং রক্ষণাত্মক ভূমিকায় দেখা গেছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালও একই কথা বলেছে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হ্যারিস সফলভাবে ট্রাম্পকে তার আইনি সমস্যাসহ বেশ কয়েকটি ইস্যুতে দমিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। বাইডেনের সঙ্গে গতবারের বিতর্কে ট্রাম্প যেমন চালকের আসনে ছিলেন এবারের বিতর্কে ট্রাম্পকে অন্যভাবে দেখা গেছে।
সিএনএন-এর দৃষ্টি ছিল ট্রাম্পের প্রতি হ্যারিসের সরাসরি চ্যালেঞ্জের দিকে। সংবাদমাধ্যমটি জানায়, বিতর্কে খুব সংক্ষেপেই নিজের অবস্থা তুলে ধরেছেন হ্যারিস।তার আত্মবিশ্বাসী দৃষ্টিভঙ্গিতে ট্রাম্প বিচলিত বোধ করেছেন।
এমনকি ফক্স নিউজ, যাদেরকে প্রায়ই ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন দিতে দেখা গেছে,তারাও স্বীকার করে নিয়েছে এই বিতর্কে কমলা হ্যারিস জিতেছেন।কয়েকজন বিশ্লেষকের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজ বলেছে, ‘আজ রাতে কমলা জিতেছেন।
ফক্স নিউজের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ব্রিট হিউম বলেন, ‘বিতর্ক শুনে মনে হয়েছে, কমলা খুব ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলেন। সেভাবেই প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। তিনি কী বলছেন, তা নিয়ে সচেতন ছিলেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন