কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশ গুলি চালিয়েছে ও জলকামান ব্যবহার করেছে। সোমবার (৭ জুলাই) ‘সাবা সাবা’ নামে পরিচিত বিক্ষোভ কর্মসূচিতে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের গুলিতে অন্তত একজন নিহত হয়েছেন এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এদিন নাইরোবি শহরে শত শত বিক্ষোভকারী অবস্থান নেন। অনেকে বাঁশি বাজিয়ে মিছিল করেন। এ সময় চারপাশে ছিল পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি।
প্রতিবছর ৭ জুলাই কেনিয়ার মানুষ একদলীয় শাসনের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত ১৯৯০ সালের আন্দোলন স্মরণে রাস্তায় নামেন। ‘সাবা সাবা’ শব্দটির অর্থ কিসওয়াহিলি ভাষায় ‘সাত সাত’ বা ৭ জুলাই।
তবে এ বছরের আন্দোলন কেবল ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং তা বর্তমান প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটোর পদত্যাগ দাবিতে রূপ নিয়েছে। দুর্নীতি, পুলিশি নিপীড়ন এবং সরকারের সমালোচকদের নিখোঁজ হওয়াকে ঘিরে দীর্ঘদিনের ক্ষোভ এরই মধ্যে বড় আকার ধারণ করেছে।
বিক্ষোভের আগেই নাইরোবির বেশিরভাগ স্কুল এবং অন্তত একটি শপিং মল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ফ্রান্সিস ওয়াসওয়া নামে এক বিক্ষোভকারী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, আমরা এখন ঘরে ফিরতে প্রস্তুত নই। কারণ আমাদের অধিকার নিয়ে তাহলে কে লড়বে? আমরা সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকবো।
গত মাসের আন্দোলনে দেশব্যাপী ১৯ জন নিহত হন বলে জানিয়েছে সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত কেনিয়া জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সেই আন্দোলনে নিহতদের মধ্যে ছিলেন শিক্ষক ও ব্লগার অ্যালবার্ট ওজওয়াং, যিনি পুলিশের হেফাজতে মারা যান। তার মৃত্যুর ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক সহিংসতায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৮০ জন মারা গেছেন, আর বহু মানুষকে বেআইনিভাবে আটক করা হয়েছে।
সরকার দাবি করেছে, নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী শান্তিপূর্ণ মিছিলকে নষ্ট করতে চাইছে এমন দুষ্কৃতিকারীদের ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্ক আছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিপচুম্বা মুরকমেন বলেন, যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিক্ষোভকারীরা দাবি করছেন, সরকার ইচ্ছা করে কিছু সশস্ত্র লোকজনকে আন্দোলনে অনুপ্রবেশ করিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, যাতে আন্দোলনকারীদের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। অন্যদিকে, সরকার এই বিক্ষোভকে ‘ব্যর্থ অভ্যুত্থানচেষ্টা’ বলেও অভিহিত করেছে।
২০২২ সালে রাজনৈতিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট রুটো এখনো শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। তিনি প্রধান বিরোধী নেতা রাইলা ওডিঙ্গার সঙ্গে জোট গড়ে তুলেছেন। ফলে ২০২৭ সালের নির্বাচনের আগে তার সামনে বড় কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন