বুলবুল আহমেদ, নবীগঞ্জ হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:-
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় বছর ঘুরে আসতে না আসতেই রক্তাক্ত সংঘর্ষে ২/১ জন প্রাণ ঝরে! এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩দিন পূর্বে টমটম ও সিএনজি অটোরিকশা চালকদের ভাড়া ও যাত্রী নিয়ে ১৫/২০ দিনের টানটান উত্তেজনার পর সংর্ঘষে প্রাণ গেল দুই সন্তানের জনক দিন মজুর কৃষক এক যুবকের। গত মঙ্গলবার সকালে মাইকিং করে জামারগাও থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা দিয়ে ঐ গ্রামের নারী পুরুষ দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র লাটি- সোটা, পিকল, দা, রামদা, তীর ফিকল নিয়ে ডাকাডাকি করে চৌ-রাস্তার মূখে আসা মাত্র দুপক্ষের ভয়াবহ সংঘর্ষে নিহত হন নিরপরাধ কৃষক। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত শতাধীক লোকজন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছিল গত ১৫/২০ পূর্ব থেকে। গত মঙ্গলবার সকাল থেকেই মাইকিং করে লোকজন জড়ো করা হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই লাঠি-সোটা, দা, কিরিচ ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শুরু হয় সংঘর্ষ। রণক্ষেত্রের মতো পরিস্থিতিতে মুহূর্তেই দুই ইউনিয়নের গ্রামের মানুষের মধ্যে নানান আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এ ব্যাপারে নিহতের স্বজনদের সাথে কথা হলে তারা জানান, নিরীহ কৃষক সাব্বির খুবই শান্তসৃষ্ট ছিল। জীবিকার তাগিদে সে মাঠে কাজ করতে গিয়েছিল। সংঘর্ষের পর বিনা অপরাধে তাকে রাস্তায় ফেলে অমানবিক নির্যাতন করে প্রতিপক্ষের লোকজন। সে সবার কাছে হাত জোড় করে প্রাণ ভিক্ষা চাওয়ার পরও পাষন্ডদের হৃদয় একটুও মায়া লাগিনি। মারস যাওয়ার পর ইট ভর্তি ট্রাক তার পায়ের উপর দিয়ে নিয়ে যায়। কি দূষ ছিল তার? কোন অপরাধে তাকে এভাবে প্রকাশ্যে দিবালোকে হত্যা করা হলো। তার দুটি অবুঝ সন্তানকে আজ বাবা হারা করলো। তার স্ত্রীকে বিধবা করলো? তাদের সংসারটা পুরো এলোমেল করে দিল এই মারামিরিটা। এ হত্যাকান্ডের পর থেকে এখন পর্যন্ত নিহতের স্ত্রী, সন্তানসহ পরিবারটি হয়ে পড়েছে দিশেহারা।
সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে অনেকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহতদের স্বজনদের কান্নায় তাদের বাড়ি ঘর সহ আশপাশ লোকজনের কান্নায় আকাশ বাগাস ভারী হয়ে ওঠে হাসপাতাল প্রাঙ্গণ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ব্যক্তিগত বিরোধকে রাজনৈতিক হিংসা প্রতিহিংসায় উসকাইয়া দেওয়া হচ্ছে। প্রভাবশালীদের ক্ষমতার লড়াইয়ের বলি হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। প্রতিবার সংঘর্ষে প্রাণহানি ঘটলেও কয়েকদিন পর সবকিছু আবারও স্বাভাবিক হয়ে যায়। এরপর আবার নতুন করে উত্তেজনা, সংঘর্ষ আর লাশের মিছিল। আর কত মায়ের কুল খালি হবে? আর কত সন্তান তাদের মা বাবাকে হারাবে? আর কত স্ত্রী তার স্বামীকে হারিয়ে বিধবা হবে?
এমন পরিস্থিতিতে নবীগঞ্জের সাধারণ মানুষের প্রশ্ন? আর কত লাশ পড়লে অশান্ত নবীগঞ্জ শান্ত হবে? জানতে চায় নবীগঞ্জবাসী।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন