মাদকের চেয়ে ধর্ষণ নিকৃষ্ট

সিরাজী এম আর মোস্তাক, ঢাকা ||
মাদক কারবার ও ধর্ষণ দুটোই নিকৃষ্ট অপরাধকর্ম। মাদকে ব্যক্তি নিজেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ধর্ষণে শুধু ধর্ষিতা নয়; নারী, সমাজ ও দেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। মাদকে কতিপয় রোগের প্রতিষেধক রয়েছে, ধর্ষণে তা নেই। ধর্ষণ শুধুই অপরাধকর্ম। সুতরাং মাদকের চেয়ে ধর্ষণ নিকৃষ্ট ও ঘৃণ্য।
সম্প্রতি বাংলাদেশে মাদক বিরোধী অভিযানে অসংখ্য নাগরিক ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছে। টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর একরাম হত্যাকান্ড ভাইরাল হয়েছে। সিরাজগঞ্জ জেলায় কামারখন্দে আসান আলীকে তারাবীহ নামাজ শেষে তুলে নিয়ে ক্রসফায়ার দেয়া হয়েছে। ক্রসফায়ারের ২বছর আগেই সে মাদক কারবারি ছেড়ে দিয়েছিল। এভাবে পূর্বে কখনো মাদক মামলায় সংল্লিষ্ট থাকায়, বহু ব্যক্তি নির্মম ক্রসফায়ারের শিকার হয়েছে। হত্যাকান্ডের শিকার পরিবারগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের কষ্ট দেখে পাষন্ড হৃদয়ও বিগলিত হয়। মাদক বিরোধী অভিযানের নামে এ নির্মমতা দেখে জাতি হতবাক।
মাদকের চেয়ে ধর্ষণ নিকৃষ্ট। মাদকে পরিণতি ক্রসফায়ার হলে, ধর্ষণে প্রকাশ্যে ফাঁসি বা আরো দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রযোজ্য। ধর্ষণের শাস্তি অবৈধ যৌনকর্ম তথা যেনার চেয়ে গুরুতর। পবিত্র কোরআনে যেনা একটি নিকৃষ্ট কর্ম হিসেবে, এতে কঠিন শাস্তি বর্ণিত হয়েছে। বিবাহিত নারী বা পুরুষ যেনায় লিপ্ত হলে শাস্তি– পাথর মেরে হত্যা করা। অবিবাহিতদের ক্ষেত্রে একশ চাবুক মারা। ধর্ষণের শাস্তি আরো কড়া। সম্প্রতি নোয়াখালী জেলায় সুবর্ণচরে ধানের শীষে ভোট দেয়ার অভিযোগে দুর্বৃত্তরা ৪সন্তানের এক মাকে ধর্ষণ করেছে। এ জঘন্য কর্মকান্ড বিবেকে নাড়া দিয়েছে। সরকার মাদক বিরোধী অভিযানে নির্বিচার ক্রসফায়ার দিলেও চিহ্নিত ধর্ষকদের এখনো জীবিত রেখেছে এবং অনেককে আটক করেনি। এর চেয়ে লজ্জা ও ব্যর্থতা আর নেই।
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে নির্বাচন পরবর্তী নির্লজ্জ ধর্ষণের ঘটনাটি দেশ–বিদেশে ভাইরাল হয়েছে। জনগণ ক্রমে প্রতিবাদমূখর হচ্ছে। সরকার ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দিলে, এ প্রতিবাদ আরো তীব্র হবে। কান টানলে মাথা আসার মতো, নির্বাচনও বাতিল হতে পারে। বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। কিছুদিন আগে একজন নারী সাংবাদিককে শুধু মুখে চরিত্রহীন বলাতেই ব্যরিষ্টার মঈনুল মামলা, আটক, আদালতে হেনস্থার শিকার ও চরমভাবে লান্থিত হয়েছেন। (অথচ চরিত্রহীন শব্দটি পুংলিঙ্গবাচক। এটি মাসুদা ভাট্টির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তার ক্ষেত্রে চরিত্রহীনা শব্দ প্রযোজ্য)। এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত। ধর্ষণের ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পরও সরকার অপরাধীদের শাস্তি না দিয়ে শুধু মুখে বলছে– অপরাধী যেই হোক, ছাড় পাবেনা। জনগণ এ প্রহসন মানেনা। জনগণ ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কার্যকর করে প্রমাণ করবে– মাদকের চেয়ে ধর্ষণ নিকৃষ্ট।