জিবি নিউজ প্রতিনিধি//
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসলে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবে। অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে ও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হলে দেশে ব্যবসার ব্যবসার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। ইনশাআল্লাহ গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসলে সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্ঠায় বাংলাদেশর অর্থনীতি দ্রুত অগ্রগতির দিকে যাবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে ইটভাটাগুলোতে অভিযান চালিয়ে ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে। কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই হুট করে বন্ধ করে দেয়া উচিত নয়। বিকল্প না করে ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকা বিনিযোগ করে যে ব্যবসা গড়ে তুলেছেন তা বন্ধ করা যাবে না। ইটভাটার মালিকদের পর্যান্ত সময় দিতে হবে।
সিলেট বিভাগ ইট প্রস্তুতকারক মালিক গ্রুপের নেতৃবৃন্দের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতকালে তিনি এসব কথা বলেন।
শনিবার নগরীর মেন্দিবাগে অনুষ্ঠিত এ সাক্ষাতকালে ইট প্রস্তুতকারক মালিক গ্রুপের নেতৃবৃন্দ বিগত স্বৈরাচারী সরকারের সময়ে ইট উৎপাদন বন্ধের লক্ষ্যে প্রণীত কালো আইনের মাধ্যমে বর্তমানে ইটভাটা মালিকদের উপর চলমান নিপীড়নের বিষয়টি তুলে ধরেন এবং আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর হাতে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
সৌজন্য সাক্ষাত ও স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট বিভাগ ইট প্রস্তুতকারক মালিক গ্রুপের আহবায়ক হাজী দিলওয়ার হোসেন, সদস্য সচিব হাজী আব্দুল আহাদ, যুগ্ম আহবায়ক মো. সামছুল হক, যুগ্ম আহবায়ক মাওলানা কুতুব উদ্দিন, যুগ্ম আহবায়ক মো. ফয়েজ উদ্দিন আহমদ, অর্থ সচিব মো. অহিদ মিয়াসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সহ উন্নয়নশীল দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের অন্যতম উপকরণ পুড়ানো ইট। আগে যেখানে বায়ু দূষনের জন্য ইটভাটাকে ৫৮% দায়ী করা হয়েছে সেখানে এখন ১০% এ নেমে এসেছে যা সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। বাংলাদেশে ইট পুড়ানো হয় ৫/৬ মাস কিন্তু সারা বছরই বাংলাদেশে বায়ূর মান খারাপ থাকে, তাই ইট ভাটাকে বায়ু দূষনের জন্য দায়ী করা যায় না। বাংলাদেশে বায়ু দূষনের জন্য প্রায় ৫০% দায়ী পরিবহন সেক্টর কিন্তু এব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এতদসত্বেও বিগত স্বৈরাচারী সরকার ইট ভাটার উপর পরিবেশ দূষনের দায় চাপিয়ে ইটভাটা বন্ধ করার লক্ষ্যে কঠোর আইন প্রনয়ন করে যার ফলে ইটভাটা মালিকদের উপর বিভিন্ন নির্যাতনমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। জোর করে ইটভাটা ভেঙ্গে দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর বর্তমানে উপদেষ্টা পরিষদ দেশ পরিচালনা করছেন, উপদেষ্টা পরিষদে বর্তমানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ূ পরিবর্তন মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বে যে উপদেষ্টা রয়েছেন তিনি ক্ষমতা পাওয়ার পর স্বৈরাচার সরকারের আইন প্রয়োগ করে দেশের ইটভাটাকে নিঃশ্চিহ্ন করার কার্যক্রম গ্রহন করেছেন, উনি ক্ষমতা প্রাপ্তির পর কয়েকশত ইট ভাটাকে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছেন এবং আগামীতে কয়েক হাজার ইট ভাটাকে গুড়িয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে ইটভাটার মালিকগনকে ব্যবসা করার অনুমতিপত্র পরিবেশ ছাড়পত্র দিচ্ছেন না। এ অবস্থা যদি চালু থাকে তাহলে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নের অন্যতম প্রধান উপকরণ ইট শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে এবং দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হবে।
স্মরিকলিপেতে আরো বলা হয়, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের বিভিন্ন গণবিরোধী কালো আইন পরিবর্তন করা হচ্ছে সেখানে দেশের উন্নয়নের অন্যতম প্রধান উপকরণ ইট শিল্পকে বন্ধ করার লক্ষ্যে প্রণীত আইন প্রয়োগ করে দেশের মানুষের রুটি রুজির পথ বন্ধ করে প্রায় কোটি মানুষকে বেকার করার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে যা বন্ধ করা জরুরী। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে অবকাঠামো উন্নয়ন বিরোধী ইট পুড়ানো নিয়ন্ত্রন আইন অবিলম্বে স্থগিত করে দেশের ইট শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা অত্যন্ত জরুরী।
স্মারকলিপিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ইট ব্যবসার সাথে দেশের প্রায় দেড়কোটি মানুষের কর্মসংস্থান নির্ভরশীল। ইহা ছাড়াও দেশের প্রায় আট হাজার ইটভাটার মালিক কোটি কোটি টাকা বিনিয়াগ করে সরকারী অনুমোদন নিয়ে ইটভাটা প্রতিষ্ঠা করে ব্যবসা করে আসছেন, অনেকে নানাভাবে ব্যাংক ঋন নিয়ে ব্যবসা করছেন, কিন্তু ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে তারা কঠিন আর্থিক সংকটে পতিত হবেন। এছাড়া ইটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেলে দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন স্থবির হয়ে পড়বে, যা সামগ্রীক অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিবে।
স্মারকলিপিতে নেতৃবৃন্দ আগামী জাতীয় নির্বাচনের পর গণতান্ত্রিক সরকার গঠিত হওয়া পর্যন্ত যাতে স্বৈরাচারী আমলে প্রণীত আইন প্রয়োগ করে ইট ব্যবসাকে বন্ধ না করা হয় সে ব্যাপারে পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টোর সাথে আলাপ করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী’র কাছে অনুরোধ জানান।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন