তিনি ক্রিকেটারদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। শুধু আলোচনা নয়। খেলোয়াড়দের কাছ থেকে অনেক কিছুই জানতে চেয়েছিলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। দেশের ক্রিকেট উন্নয়নে বিশেষ করে জাতীয় দলের মঙ্গল ও কল্যাণে করণীয় কী, কী হচ্ছে কি হয়নি আর কী কী হওয়া দরকার; এসব সব লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছিল ক্রিকেটারদের।
ক্রিকেটাররা তা লিখে জানিয়েছেন। মাইক্রোফোন হাতে কথা বলেছেন। বিষয়-ইস্যুর বাইরেও নিজেদের মতামত দিয়েছেন মুশফিক, লিটন, শান্ত, মিরাজ, সৌম্য, হৃদয়রা।
ক্রিকেটারদের সাথে এমন প্রাণখোলা আলাপে খুব খুশি বিসিবি প্রধান। আর তাই তার মনে হয়েছে প্রতি ৩ মাস পরপর বোর্ড প্রধান তথা বোর্ডকর্তাদের সাথে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের এমন আন্তরিক ও খোলামেলা বৈঠক হওয়া দরকার।
বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা হলো, আমরা খেলোয়াড়দের কতটুকু সাহায্য করতে পারছি। সেই সহায়তায় এই মুহূর্তে কতটুকু ঘাটতি রয়েছে, ওই জায়গাটা কীভাবে পূরণ করব যাতে আমাদের ক্রিকেটাররা নিশ্চিন্তে মাঠে খেলতে পারে। আমরা আজকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি প্রতি তিন মাস পরপর এরকম একটা সেশন করবো ক্রিকেটারদের সঙ্গে। আমাদের জায়গা থেকে যে সমস্ত জায়গায় উন্নতির দরকার রয়েছে, ক্রিকেটারদের সহায়তার জন্য সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি।’
বিসিবি প্রধান বুলবুলের অনুভব, ক্রিকেটের যত স্টেকহোল্ডার আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডার হলেন ক্রিকেটাররা। তাই তার মনে হয় সেই ক্রিকেটারদের দেখভাল করার দায়িত্ব বিসিবির। এবং সে দায়িত্বটা যথাযথভাবে হচ্ছে কিনা, ক্রিকেটাররা তাদের প্রয়োজনীয় ও অত্যাবশ্যকীয় উপাদান এবং লজিস্টিক সাপোর্ট ঠিকমত পাচ্ছেন কিনা, তা নিশ্চিতের লক্ষ্যেই তাদের মুখের কথা শোনা।
বুলবুলের কথা, ‘যারা মাঠে খেলে, তাদের দেখভাল করা আমাদের দায়িত্ব। শুধু চিকিৎসাকে বোঝাচ্ছি না। এছাড়া মাঠে কোচরা যে দেখভাল করেন, সেটিই সবকিছু নয়। এখানে লজিস্টিক, পিচ কন্ডিশন, অনুশীলন সুবিধা, চিকিৎসাসহ সব বিষয়ে কতটুকু সহায়তা করতে পারছি, সেসব জানতেই নানা প্রশ্ন দেওয়া হয়েছিল ক্রিকেটারদের কাছে। এসব বিষয়ে ক্রিকেটাররা মন খুলে লিখেছেন, সাজেশন দিয়েছেন। সেখান থেকে জানতে পারছি আমরা আসলে কোথায় অবস্থান করছি। সে অনুযায়ী আমরা কাজ করবো।’
বিসিবি সভাপতি বুলবুল ক্রিকেটারদের সাড়া দেখে খুবই সন্তুষ্ট। জাতীয় দলের এ সাবেক অধিনায়ক বলেন, ‘মজার বিষয় হলো আমাদের যে আলোচ্যসূচি ছিল, তার বাইরেও ক্রিকেটাররা নিজে এসে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে কথা বলেছে। তারা তাদের মনের কথাগুলো প্রকাশ করছিল, এটাই সবচেয়ে আনন্দের ব্যাপার। তখন মনে হচ্ছিল আমরা একটি টিম, এই টিম একসঙ্গে কাজ করলে সামনের দিকে যে এগিয়ে যেতে পারব, তার একটি প্রতিচ্ছবি আজ দেখতে পেরেছি।’
খেলোয়াড়দের সঙ্গে আরও আলোচনা হয়েছে কীভাবে পারফরম্যান্স বাড়ানো যায়, আরও উন্নতি করা যায় সেসব বিষয় নিয়ে। বুলবুলের ভাষায়, ‘আমাদের কাছে মনে হয়েছে একেকজন খেলোয়াড় হিউজ পাওয়ার হাউজ। তারা কীভাবে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় হতে পারেন সেই আত্মবিশ্বাস দেওয়া হয়েছে, আলোচনা হয়েছে।’
‘আমরা জরিপ করেছি, খেলোয়াড়রা তাদের মনের কথা লিখেছে। সবথেকে ভালো লেগেছে মনের কথা লেখার পরেও আজ তারা শারীরিকভাবে এসেছে। তাদের সমস্যাগুলো, সফলতাগুলো শেয়ার করেছে। তারা এটাও বলেছে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড থেকে তারা যে যে সহায়তা পাচ্ছে, তাতে খুশি। আরও কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে উন্নতি করা যায়। ’
বিসিবি প্রধানের শেষ ভালো লাগা ছিল যে, তিনি ক্রিকেটারদের সাথে কথা বলে বোঝাতে পেরেছেন যে সবাই মিলেই একটা দল। বুলবুল বলেন, ‘জাতীয় দল হারলে শুধু ক্রিকেটাররাই হারে না, কর্মকর্তারাও হারে। কারণ সবাই মিলেই আমরা একটা দল। দিনশেষে এটা আজকে বোঝাতে পেরেছি।’
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন