জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
সিলেট সীমান্তে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ব্যবসার দুয়ার খুলতে যাচ্ছে। আগামী মাসের মধ্যে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সীমান্তে ‘বর্ডার হাট’ (সীমান্ত বাজার) উদ্বোধন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উভয় দেশের পঞ্চাশটি দোকান নিয়ে সিলেট জেলার প্রথম এই বর্ডার হাট চলবে। বর্তমানে হাটের অবকাঠামোগত কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এই বর্ডার হাট চালু হলে উভয় দেশের স্থানীয় পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা লাভবান হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, দুই দেশের মানুষের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়তে, সীমান্ত এলাকার মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাতে এবং সীমান্তে চোরাচালান রোধ করতে বর্ডার হাট স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১০ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে উভয় দেশের মধ্যে এ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই হয়। ইতোমধ্যে কয়েকটি বর্ডার হাট চালু করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বছরের মে মাসে বর্ডার হাট নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ কমিটির দুই দিনব্যাপী বৈঠক হয়। বাংলাদেশের পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিব (এফটিএ) মো. শফিকুল ইসলাম, ভারতকে নেতৃত্ব দেন দেশটির বাণিজ্য বিভাগের তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব (বৈদেশিক বাণিজ্য, দক্ষিণ এশিয়া) ভুপেন্দর এস বাল্লা। ওই বৈঠকে সিলেট সীমান্তে বর্ডার হাট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, সীমান্তের ১২৪৮/১২ এস এবং ১১ এস পিলারের কাছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ দশ নম্বর এলাকা এবং ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খাসিয়া হিলস এলাকায় উভয় দেশের সমপরিমাণ ১ একর ৫০ শতক জায়গায় বর্ডার হাট নির্মাণ করা হচ্ছে। হাটের বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে এবং ভারতের দিকে আরেকটি ফটক থাকবে। সপ্তাহে একদিন এই হাট বসবে। তবে স্থানীয়দের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনায় একাধিক দিনও হাট বসার সিদ্ধান্ত নিতে পারবে হাট ব্যবস্থাপনা কমিটি।
সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত হাটে বেচাকেনা করা যাবে। তবে প্রশাসনের তালিকাভুক্তরাই শুধুমাত্র পণ্য বিক্রির সুযোগ পাবেন। তৈরি পোশাক, বিভিন্ন ধরনের খাদ্যপণ্য, শাকসবজি, ফলমূল, মাছ, মুরগি, শুঁটকি, সুপারি প্রভৃতি পণ্য বেচাকেনা চলবে বর্ডার হাটে। এই বর্ডার হাটে বাংলাদেশের ২৪টি এবং ভারতের ২৬টি দোকান থাকবে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, চলতি বছরের ২৬ মার্চে ভোলাগঞ্জ বর্ডার হাট উদ্বোধনের কথা ছিল। কিন্তু মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে তা পিছিয়ে যায়, কাজও বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবার পুরোদমে কাজ শুরু করেছে। বর্তমানে ওয়াশরুম নির্মাণ, পানির পাম্প বসানো প্রভৃতির কাজ চলছে। নারী ও পুরুষের জন্য পৃথক ওয়াশরুমের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়া বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থাও থাকছে হাটে। গত ১১ নভেম্বর সিলেটে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাইকমিশনার নীরাজ কুমার জাসওয়াল ভোলাগঞ্জ বর্ডার হাটের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন। তিনি ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দেন।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন