মাইলি নির্বাচনে হেরে গেলে আর্জেন্টিনাকে সহায়তা বন্ধের হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

gbn

আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মাইলির দল যদি এই মাসের মধ্যবর্তী সংসদীয় নির্বাচনে জয়ী না হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র আর্জেন্টিনাকে আর সহায়তা দেবে না। মঙ্গলবার এক ঘোষণায় এ কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তিনি বলেন, ‘যদি মাইলি জেতে, আমরা তার সঙ্গে থাকব। কিন্তু যদি না জেতে, আমরা আমাদের সময় নষ্ট করব না।

’ হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ট্রাম্প ও মাইলির সাক্ষাৎ হয়। এর কয়েক দিন আগেই যুক্তরাষ্ট্র আর্জেন্টিনার জন্য একটি বিশাল আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল।

 

ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এই মানুষটির পাশে আছি, কারণ তার দর্শন সঠিক। তিনি হয়তো জিতবে, হয়তো হারবে, তবে আমি মনে করি তিনি জিতবেন।

যদি জিতে, আমরা থাকব। যদি না জেতে, আমরা চলে যাব।’

 

ট্রাম্পের এই মন্তব্যে আর্জেন্টিনার বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টের ঘোষণা করা ২০ বিলিয়ন ডলারের মুদ্রা বিনিময় চুক্তির কারণে দেশটির বাজারে যে আশাবাদ তৈরি হয়েছিল, তা মুহূর্তেই নড়বড়ে হয়ে গেছে।

ট্রাম্পের মন্তব্যের পর আর্জেন্টিনার প্রধান শেয়ারবাজারে ২ শতাংশ পতনও ঘটেছে।

 

বেসেন্ট জানান, এই সহায়তা প্যাকেজের পূর্ণ বিবরণ এখনো প্রকাশ করা হয়নি, তবে এটি ট্রাম্প প্রশাসনের পছন্দের অর্থনৈতিক নীতিগুলোর ধারাবাহিকতা রক্ষার শর্তে নির্ভর করছে। এর আগে ইলন মাস্কের ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি’ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সরকারি খাতে ব্যয় সঙ্কোচন শুরু করার অনেক আগে মাইলি নিজ দেশে ‘চেইনস’ চালিয়ে সরকারি খরচ কমিয়েছিলেন।

তিনি দশ হাজারেরও বেশি সরকারি চাকরি ছাঁটাই করে দীর্ঘমেয়াদি বাজেট ঘাটতি মোকাবেলার চেষ্টা করেন। একই সঙ্গে তিনি একটি ‘ডিরেগুলেশন মন্ত্রণালয়’ গঠন করেন, যার লক্ষ্য ছিল প্রতিযোগিতার অভাবে অতিমূল্যবান স্থানীয় বাজারগুলো সংস্কার করা।

 

বেসেন্ট বলেন, ‘যদি আর্জেন্টিনা পুরনো পেরোনিস্ট নীতিতে ফিরে যায়, তাহলে এই সহায়তা নিয়ে পুনর্বিবেচনা করতে হবে।’ তিনি আরো জানান, এই চুক্তি আর্জেন্টিনার চীনের সঙ্গে থাকা মুদ্রা বিনিময় ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল নয়।

 ট্রাম্প প্রশাসন সাধারণত বিদেশে বড় ধরনের হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থেকেছে। কিন্তু আর্জেন্টিনাকে দেওয়া এই আর্থিক সহায়তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বিরল। লাতিন আমেরিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্রকে স্থিতিশীল রাখার প্রচেষ্টা হিসেবে হোয়াইট হাউস একে একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে। তবে অভ্যন্তরীণভাবে এই পদক্ষেপের সমালোচনা উঠেছে। 

অনেক ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা অভিযোগ করেছেন, ট্রাম্প প্রশাসন বিদেশি বেইলআউট ও বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দিচ্ছে, অথচ যুক্তরাষ্ট্র সরকার নিজ দেশেই বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। আমেরিকান কৃষকরাও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কারণ চীন এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তে আর্জেন্টিনা থেকে সয়াবিন কিনছে। যদিও পুরো চুক্তির বিস্তারিত এখনো পরিষ্কার নয়, তবু বিশ্লেষকদের মতে এই সহায়তা মাইলির জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সহায়তা হতে পারে। তিনি গত মাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাদেশিক নির্বাচনে পরাজিত হন এবং আসন্ন মধ্যবর্তী ভোট তার জন্য একটি বড় পরীক্ষা।

বুয়েনস আইরেসের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইগনাসিও লাবাকুই বলেন, ‘নির্বাচনের আগে মুদ্রা বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা, পেসোর মান না কমানো এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ অক্ষুণ্ণ রাখা সরকারের জন্য বড় সুবিধা।’ গত সপ্তাহে বুয়েনস আইরেসে মাইলির নতুন বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে তার সমর্থকেরা বলেন, ট্রাম্পের কাছ থেকে সহায়তা চাওয়া কেবল একটি কৌশল, এটি রাজনৈতিক ইস্যু নয়।

২৪ বছর বয়সী কেভিন নেহুয়েন বলেন, ‘কোনো দেশ বাইরের সাহায্য ছাড়া এগোতে পারে না।’ তিনি উল্লেখ করেন, আগের সরকারগুলোও চীনের সঙ্গে মুদ্রা বিনিময় চুক্তি করে রিজার্ভ বাড়িয়েছিল। তবে আর্জেন্টিনার বামপন্থীদের মধ্যে এই সহায়তা নিয়ে তীব্র সমালোচনা চলছে।

দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত সাবেক প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা কির্শনার এক্সে লিখেছেন, ‘উত্তরের শক্তিগুলোর এই ‘সহায়তা’ আজকের খাদ্য, কিন্তু আগামী দিনের ক্ষুধা।’ 

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন