নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি:- হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় পুলিশের চলমান ডেভিল হান্ট অভিযানে যুবলীগ নেতা দুলাল মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা সিলেট মহা সড়কের ব্যস্ততম জনবহুল আউশকান্দি হীরাগঞ্জ মধ্যে বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ কামরুজ্জামানের নির্দেশনায় আউশকান্দি ইউনিয়নের ভিট অফিসার এসআই সুমন মিয়া গত বৃহস্পতিবার সন্ধায় তার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে আউশকান্দি হীরাগঞ্জ মধ্যে বাজার আরিফ হোটেলে অভিযান পরিচালনা করে দুলাল মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। সে উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের দেওতৈল গ্রামের মছব্বির মিয়ার পুত্র ও স্থানীয়ভাবে যুবলীগ নেতা হিসাবে পরিচিত।
এ ব্যাপারে স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিবর্গ মত প্রকাশ করে বলেন, ছাত্র- জনতার আন্দোলনে দেশ ছেড়ে সৈরাচার হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর আওয়ামী অঙ্গ সংঘটনের বড় বড় বা রাজপথের তেমন কোন নেতাকর্মীর প্রকাশ্যে ঘুরেবেড়ানো বা যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে দলীয় তেমন কোন পোস্ট না করলেও দুলাল সহ তার কিছু সাঙ্গপাঙ্গরা দেশ ও বিদেশ থেকে লাইক ও কমেন্ট করে উৎসাহ দিতেন। তার দলীয় বিভিন্ন পোস্ট ছিল ছাত্র- জনতার বিরুদ্ধে। এবং সে এআই দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার সাথে এক টেবিলে গল্প, সরাসরি জন্মদিন
কেগ কেটে জন্মদিন পালন সহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডের অপব্যবহার করে আসছিল। হাসিনা থাকাকালীন সময়ে সে দিন মজুর রিক্সা- অটোরিক্সা ও টমটম চালকদের নিয়ে একটি সংঘটন করে। কিছু দিন যেতে না যেতেই শ্রমিকদের সাথে তার স্বার্থ নিয়ে মতবিরুদ্ধ সৃষ্টি হয়। সংঘটনের নেতাকর্মী ও শ্রমিকদের সাথে ক্ষমতার অপব্যবহার করার অহরহ অভিযোগও রয়েছে। সে আওয়ামী অঙ্গ সংঘটনের তেমন কোন নেতাকর্মী না হলেও আটকের পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত সে আওয়ামী লীগের পক্ষে কথা বলা সহ বর্তমান সরকার ও ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে সুচ্ছার ছিল।
দুলালকে আটকের বিষয়ে পুলিশের কাছে জানতে চাইলে তারা জানায়, তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার ছবি'র সাথে তার ছবি এডিটিং করে হাসিনার একান্ত জন পরিচয় দিয়ে রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে প্রভাব বিস্তার করে আসছিলেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামী সরকারের সময় সে দাপট খাটিয়ে বহু নিরহ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলেছিল। তার নির্যাতন- অত্যাচারের শিকার হয়ে অনেকেই এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন।
তবে, তার গ্রেফতারের খবরে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। বাজার এলাকার কয়েকটি কলনী ও ভাঙ্গারী ব্যবসায়ীরা মনে করছেন এ অভিযানের মাধ্যমে তাদের দীর্ঘদিনের আতঙ্ক দূর হলো।
এ ব্যাপারে, নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, ডেভিল হান্ট অভিযান চলমান রয়েছে। যেসকল। এলাকায় সন্ত্রাসী, অত্যাচারী- অপরাধী, ছবি এডিটিং করে অপপ্রচার সহ সে ডেভিল হিসেবে পরিচিত। অপরাধী কাউকেই আইনের হাত থেকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমাদের এ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
পুলিশের অভিযানে ঐ এলাকার বিভিন্ন কলনীতে বসবাসকারী ও স্থানীয় মধ্যবৃত্ত সহ নিম্নবৃত্ত লোকজনের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
অপরদিকে, সচেতন সমাজের লোকজন বলছেন ভিন্ন কথা, নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের আওয়ামী, যুবলীগ, ছাত্রলীগ সহ দলের প্রায় সকল দলের সভাপতি, সাদারন সম্পাদক সহ গুরুত্বপূর্ণ ডেভিলদের আইনের আওতায় আনা হলেও আউশকান্দি ইউনিয়নের ডেভিলদের আইনের আওতায় না এনে উল্টো প্রশাসনই তাদের কথায় চলছে। এর জন্য আউশকান্দি এলাকায় মানুষ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে এখন আর আগের মতো সঠিক কোন বিচার পাচ্ছেনা। নবীগঞ্জের মধ্যে কোন ডেভিল বানিজ্য যদি হয়ে থাকে তাহলে একটি ইউনিয়নই হলো সেটা আউশকান্দি ইউনিয়ন। এ বিষয়টি প্রশাসনের প্রতি আস্থা পুনর্ব্যক্ত করে দেখার জন্য জুলাই আন্দোলনকারী সহ সচেতন নাগরিকদের।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন