ইস্ট লন্ডন মসজিদের বিবৃতি : ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া বৃটেনের ঐতিহাসিক পদক্ষেপ, তবে কার্যকর পদক্ষেপ জরুরী
লন্ডন, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ||
যুক্তরাজ্য সরকারের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ইস্ট লন্ডন মসজিদ । ২২ সেপ্টেম্বর সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলা হয়, এ ঘোষণার মাধ্যমে ব্রিটেন এখন বিশ্বের ১৯৩টি জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৫০টির সাথে একাত্ম হলো, যারা ইতোমধ্যেই ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়েছে। এটি আন্তর্জাতিক আইন এবং বিশ্ব ঐক্যমতের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং ফিলিস্তিনি জনগণের রাষ্ট্রীয় অধিকার ও আত্মনিয়ন্ত্রণের স্বীকৃতি। এই সিদ্ধান্ত শুধু নৈতিক দায়িত্বই নয়, বরং একটি ঐতিহাসিক ঋণের পরিশোধও বটে। কারণ শতাধিক বছর আগে ১৯১৭ সালে 'ব্যালফোর' ঘোষণার মধ্য দিয়েই বৃটেন ফিলিস্তিনিদের অধিকার হরণ শুরু করেছিলো। তবে এই স্বীকৃতি এসেছে ফিলিস্তিনের ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার সময়ে । ইসরায়েল যখন গাজায় গণহত্যা এবং দখলীকৃত পশ্চিম তীরে জাতিগত নিধন চালিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) ইতোমধ্যেই এ দখলকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। বিবৃতিতে ইস্ট লন্ডন মসজিদ আরো বলেছে, শুধু স্বীকৃতি যথেষ্ট নয় । যুক্তরাজ্য সরকার এখনো ইসরায়েলের এই হামলাকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকার করতে অস্বীকার করছে। এ অস্বীকারের কারণে ব্রিটেন ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে, যা চলমান হত্যাযজ্ঞকে টিকিয়ে রাখছে। জাতিসংঘ কমিশন, শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থা ও বিশ্বখ্যাত গণহত্যা বিশেষজ্ঞরা স্পষ্ট করে বলেছেন, ইসরায়েলের কার্যক্রম আইনি সংজ্ঞায় গণহত্যার আওতায় পড়ে। তবুও ব্রিটিশ সরকার এ সত্য অস্বীকার করছে। ইস্ট লন্ডন মসজিদ সতর্ক করে বলেছে, কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ছাড়া এ স্বীকৃতি মুল্যহীন । তাই তারা যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন অবিলম্বে ইসরায়েলের অপরাধকে আনুষ্ঠানিকভাবে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। অস্ত্র বিক্রি, সামরিক সহযোগিতা ও বাণিজ্য বন্ধ করে ব্রিটেনের সহযোগিতা ও দায়মুক্তি বন্ধ করা হয় এবং ব্যাপক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুদ্ধাপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনা হয়। ইস্ট লন্ডন মসজিদ বিবৃতিতে আরো বলেছে, ব্রিটেনকে প্রমাণ করতে হবে যে, এই স্বীকৃতি কেবল কাগজ-কলমের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। গাজায় গণহত্যা ও পশ্চিম তীরে জাতিগত নিধন বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ না নিলে, এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত মূল্যহীন হয়ে থাকবে—আর প্রতিদিন অসংখ্য প্রাণহানি চলতেই থাকবে।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন