দক্ষিণী সিনেমার সুপার স্টার কমল হাসান বরাবরই স্পষ্টবাদী মানুষ। পরিচয়ে ‘দক্ষিণী অভিনেতা’ বলা হলেও প্রায় ৬৫ বছরের অভিনয় জীবনে ৭০ বছরের এই অভিনেতা কাজ করেছেন ভারতের বিভিন্ন ভাষার সিনেমায়। বলিউডেও এ অভিনেতার বেশ খ্যাতি রয়েছে। বাংলা সিনেমায়ও প্রশংসিত হয়েছেন কমল।
কিছুদিন আগে কন্নড় ভাষাকে তামিলের সন্তান বলে উল্লেখ করে বিতর্কে জড়িয়েছেন কমল হাসান। এতে তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ হয়েছে নেওয়া হয়েছে। নিজের বক্তব্যে তবু অনড় রয়েছেন অভিনেতা। দুই দ্রাবিড় ভাষার মধ্যে এমন গোলমাল আগে তেমন ভাবে দেখা যায়নি। তবে এবার আবারও ভাষা নিয়ে মুখ খুললেন কমল। তার নতুন সিনেমা ‘ঠগ লাইফ’র প্রচারের মধ্যেই তিনি হিন্দি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বললেন।
একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কমল বলেন, ‘আমি “এক দুজে কে লিয়ে” সিনেমা অভিনেতা। কোনো আগ্রাসন ছাড়াই আমরা অন্য ভাষা শিখতে পারি। চাপিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই।’ কমল তুলে আনেন জাতীয় শিক্ষা নীতির প্রসঙ্গ। তিনি মনে করেন শিক্ষাব্যবস্থা এমন হওয়া উচিত যাতে সব থেকে সহজ পথে ছোটদের শেখানো যায়। সেই পথে যেন কোনো বাধা না থাকে।
১৯৮১ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘এক দুজে কে লিয়ে’-তে কমল এক তামিল যুবকের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। সে সিনেমার নায়ক এক হিন্দিভাষী প্রতিবেশীর প্রেমে পড়ে। এ সিনেমায় কমলকে দিয়েছিল বলিউডে প্রতিষ্ঠা। সেই সূত্র ধরেই অভিনেতা কেন্দ্রীয় হিন্দি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।
কমলের রাজ্য তামিলনাড়ুর ক্ষমতাসীন ডিএমকে সরকার জাতীয় শিক্ষা নীতির বিরোধিতা করছে। ছোটদের তিনটি ভাষা শিক্ষার বাধ্যবাধকতা মানতে তারা রাজি নয়। অভিযোগ, বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার ভারতের সর্বত্র হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কমল নিজেও এমনই মনে করেন।
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার জন্য একটা ভাষা শেখা প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে ইংরিজি শেখাই যথেষ্ট। কেউ চাইলে স্প্যানিশ বা চাইনিজ শিখে নিতে পারেন। আমরা তো গত প্রায় সাড়ে তিনশো বছর ধরে ইংরিজিটা শিখেছি, ধীরে ধীরে, কিন্তু দৃঢ়ভাবে। আজ হঠাৎ বদলাতে গেলে আবার নতুন করে শুরু করতে হবে।’
কমল মনে করেন, এখন এই নিয়মের পরিবর্তন করতে গেলে অহেতুক কিছু মানুষকে অশিক্ষিত বলে দেগে দিতে হবে, বিশেষত তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যে। কমল বলেন, ‘এখন যদি হিন্দি চাপিয়ে দেন এবং বলতে শুরু করেন হিন্দি না জানলে বিন্ধ্য পর্বতের ও পারে আর কোনো কাজ তোমার জন্য নেই, তাহলে তো মুশকিল। তাহলে সেই সব প্রতিশ্রুতির কী হবে, আমার ভাষার কী হবে? আমি কি সেই ২২টি সরকারি ভাষার সদস্য নই? এ সব প্রশ্ন তো উঠবেই।’
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন