মা-বউয়ের লড়াইয়ে পুরুষ যখন যুদ্ধবন্দি!

gbn

বেচারা পুরুষ যাবে কোথায়? একদিকে মা, আরেকদিকে স্ত্রী

রাজু আহমেদ,  প্রাবন্ধিক।  

সমস্যা হচ্ছে, আপনি তো শাশুড়ি ছাড়া স্বামী পাবেন না। তবে অধিকাংশ শাশুড়িরা একটু বেশি বেশি। আরও বড় সমস্যা হচ্ছে, বউটা যখন বয়স্ক হয় তখন সেও স্বভাবে একটা আস্ত শাশুড়ি হয়ে ওঠে। 'অধিকার ছাড়িয়া দিয়া অধিকার রাখিতে যাইবার মত বিড়ম্বনা আর নাই'—কবিগুরুর এই নীতিবাক্য কেউ মানতে চায় না। পুত্র কেনো বউয়ের গলা জড়িয়ে ঘুমায়— কতিপয় শাশুড়ি সেটা নিয়েও কথা শোনায়!

 

বেচারা পুরুষ যাবে কোথায়? একদিকে মা, আরেকদিকে স্ত্রী— কার চোখের পানি, কার কালো মুখ সে সহ্য করতে পারে? ব্যালেন্স করতে গিয়ে পুরুষের জীবন পাটাতন হয়ে যায়, তাও কারো মন পায় না। যে মা গর্ভে ধারণ করেছে সেও পুত্রের দুঃখ বোঝে না। আবার যে বউ সব কিছুর অধিকার নিয়ে এসেছে, সেও কিছুই ছাড়তে চায় না। লন্ডভন্ড করার পরেও ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ থেমে গেলো অথচ বউ-শাশুড়ির যুদ্ধ জীবিত অবস্থায় চলবে। আশঙ্কা করি—কেয়ামতের ময়দানেও না জানি দু-পক্ষ কাউর না বাজায়!

 

সন্তান অতিরিক্ত মা ভক্ত হলে স্ত্রী বঞ্চিত হবেই। আবার স্বামী বউ ভক্ত হলে গোটা সমাজ মায়ের পক্ষ নিয়ে ওকালতি করতে আসবে। পুরুষেরও দোষ আছে। সে যেদিকে ঝুঁকে, সেদিকে সবটুকু ঝুঁকে যায়। মাঝামাঝি থাকতে পারে না। অথচ যে পুরুষ সমন্বয় করতে পারে, কৌশলে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারে, তার সংসারে শান্তির দেখা মেলে। মা বড় না বউ— এই তর্কযুদ্ধে যারা নেমেছে, তাদের রাফাল বিমান দিয়ে বিবেক বরাবর একটা গুঁতো দিতে পারলে মন্দ হতো না।

 

ফেসবুকে বিতর্কে বউদের পক্ষ জিতে যাচ্ছে। শাশুড়িদের কম সংখ্যকই ফেসবুকে আছে। তবে বউও যে একদিন মা হবে, আরেকদিন শাশুড়ি— তা অনেকেই মনে রাখে না। পলাশ সাহার মাকে দেখে মন্তব্য করা যায়, সব মা, মা হতে পারে না! তবে সংসারে অনেক শাশুড়িও নির্যাতিত, চরমভাবে অবহেলিত। যারা খারাপ, তারা মা হিসেবেও খারাপ, বউ হিসেবেও খারাপ, আবার শাশুড়ি হিসেবেও খারাপ। তিনের মধ্যে সমন্বয় করে সমস্যার সমাধান করতে না পারলে স্বামী ব্যাটাই মস্ত খারাপ- সমস্ত দুনিয়ার রায় রেডি!

 

মা কিংবা বউ—কাকে অস্বীকার করা যায়? ইস! সবাই যদি সবার অবস্থান এবং দায়িত্ব-কর্তব্য বুঝতো তবে কতই না ভালো হতো। শাশুড়ি-পুত্রবধূর মধ্যে মা-মেয়ের মধুর সম্পর্ক হলে স্বামীটা জামাই আদরে থাকতো। ঘরে সুখ না থাকলে দুনিয়া মিছা। একটু প্রশান্তি পেতে পুরুষ ঘরে ফেরে। নয়তো পুরুষ তো নীড়ে ফেরার জাত নয়! অথচ ঘরে ফিরে যদি শাশুড়ি বনাম পুত্রবধূর যুদ্ধ দেখে, এর ওর নামে নালিশ শোনে, তবে দুনিয়া জাহান্নাম মনে হয়। নিজেকে মনে হয় যুদ্ধবন্দি! সুইট হোমের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হলে নারী ও পুরুষ—উভয়ের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত রয়।

 

 

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন