সিদ্ধান্তটা তোমার। নিজেকে ধ্বংস না করে, আবার নির্মাণ করো। তবে ভুল মানুষের সামনে মাথা নোয়াতে যেও না।
রাজু আহমেদ, প্রাবন্ধিক।
একলা একলা কেঁদে, ভেঙে, ছিন্নভিন্ন হয়ে আবার নিজেকে গড়ো। মনে রেখো, যে মানুষ অনুভবের মানে বোঝে না, যে আবেগের মূল্য দিতে জানে না—তার সামনে কখনো নত হবে না। যে একবার তোমাকে পেয়েছে বলে মনে করে যত্নের প্রয়োজন নেই, তার কাছে নিজেকে আবার কখনো সঁপে দিও না। আজ যদি চোখের জল ফেলে, ভুল পথ বন্ধ করে, শিক্ষাটা শুরুতেই গ্রহণ করো—তবে সারা জীবন আর কাঁদতে হবে না। সহ্য করতে হবে না কোনো দানবীয় আচরণ।
সিদ্ধান্তটা তোমার। নিজেকে ধ্বংস না করে, আবার নির্মাণ করো। তবে ভুল মানুষের সামনে মাথা নোয়াতে যেও না।
ভদ্রতা তাকেই দেখাও, যে তা দুর্বলতা ভাবে না। কোমল সুরে কথা বলো তার সাথেই, যে ইশারাও বুঝতে পারে। নিজের ব্যথা, নিজের ক্ষত—সব বন্ধুদের কাছেও তুলে ধরো না। কারণ, যদি কখনো সেই বন্ধু শত্রু হয়ে যায়, তবে অপরিচিত শত্রুর চেয়ে সে অনেক বেশি ব্যথা দেয়। আজ রাতটা নিঃশব্দে জেগে থেকো, ভাবো, সিদ্ধান্ত নাও। সঠিক সিদ্ধান্ত একবার নিতে পারলে প্রতিটি রাত এমন নির্ঘুম যাবে না। এমনকি, যন্ত্রণায় নিজেকে শেষ করে দেওয়ার চিন্তাও আর জাগবে না।
আবেগ থাকুক, তবে বিবেকের হাতে তার লাগাম দাও। মনে রেখো, পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ—তোমার নিজের মঙ্গল।
অন্য কারো সাথে নিজেকে তুলনা করো না। তুমি একক, অনন্য। আত্মসম্মান আর ব্যক্তিত্ব ধরে রাখতে সারাজীবন লড়াই চালিয়ে যাও। তোমার সম্পদ তুমি ছেড়ে দিতে পারো, কিন্তু সম্মানের অধিকার কখনো নয়। যে মুখে হাসে আর কথায় খোঁচা দেয়, তার থেকে দশ হাত দূরে থাকো। যে উপকার করে খোঁটা দেয়, তার থেকে দ্বিতীয়বার সাহায্য নিও না।
'না' বলতে শেখো। দৃঢ়ভাবে, পরিষ্কারভাবে। এই একটিমাত্র শব্দ তোমাকে অসংখ্য যন্ত্রণার হাত থেকে রক্ষা করবে।
কিছু কিছু ব্যথা নিজের মধ্যে কবর দাও। কারণ, যে কষ্টের চিকিৎসা কারো কাছে নেই, তা শেয়ার করা মানে—তোমার ভবিষ্যতের চাবি অন্যের হাতে তুলে দেওয়া। বলো, আল্লাহর কাছে। রাতের শেষভাগে তাহাজ্জুদের সময় ডাকো তাকে। জেনে রাখো, তোমার সমস্যা ও সমাধানের দূরত্ব—তোমার থেকে রাতের শেষভাগ যতটুকু দূরে, ঠিক ততটাই।
আপনজন আসলে শর্তসাপেক্ষ। যতদিন তুমি তাদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারবে, ততদিনই তুমি প্রিয়। মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় ব্যথা—আপন মানুষের কথায় আর আচরণে সৃষ্ট হয়। তাই নিজেকে গড়ো। যিনি তোমায় সৃষ্টি করেছেন, তিনিই তোমাকে পরম যত্নে গড়েছেন। নিজের উপর অত্যাচার করো না। ভালো থাকতে যা লাগে, যতটা সম্ভব করো।
তোমার ওপর যাদের অধিকার আছে, তাদের সেই অধিকার বুঝিয়ে দাও—তবে নিজেকে বিসর্জন দিয়ে নয়। আমানত রক্ষা করো। বিশ্বাসযোগ্য হও। দায়িত্বশীল হও। নিজের ভালো থাকার জন্য ভুলপথে গেলে, ব্যথা দ্বিগুণ হয়ে ফিরে আসবে।
নিজের চোখের জলকে মূল্যবান করে তোলো। যত্রতত্র তা ঢালো না। আত্মসম্মান রক্ষার জন্য দরকার হলে পরিচয় পাল্টাও। আত্মসমালোচনা করো, শোধরাও। আত্মিক প্রশান্তি অমূল্য। মনে রেখো, তুমি মূল্যহীন নও—তোমারও মূল্য আছে।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন