শাবি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ‘বেহায়াপনা-নোংরামির’ অভিযোগে ভূতুড়ে স্মারকলিপি!

gbn

জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য বরাবরে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ‘বেহায়াপনা-নোংরামির’ অভিযোগ জানিয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ স্মারকলিপি পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করলেও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে কারা এটি দিয়েছে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. আলমগীর কবির এ স্মারকলিপি পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশ্ববর্তী কয়েকজন বাসিন্দা এ স্মারকলিপি দিয়েছেন।

 

উপাচার্য বরাবর লিখিত ওই স্মারকলিপিতে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী আখালিয়া এলাকার বাসিন্দা মো. আনোয়ার হোসেনসহ আর কয়েকজনের নাম ও স্বাক্ষর যুক্ত রয়েছে।

এতে বলা হয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ওলির নামে, এখানে ছাত্র-ছাত্রীদের অবাধ চলাফেরা ও ‘অবৈধ’ মেলামেশা মেনে নেয়া হবে না। ছাত্র-ছাত্রীদের এসব ‘অবৈধ’ কর্মকাণ্ড দমনে উপচার্য কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখে পড়লে স্থানীয়রা ‘কাফনের কাপড় পরে’ তার পাশে থাকবেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘শাবিপ্রবি আমাদের পূর্বপুরুষের সম্পত্তির ওপরে একজন ওলির নামে প্রতিষ্ঠিত। বিশ্ববিদ্যালয়টি আমাদের গর্ব এবং এর সঙ্গে আমাদের আত্মার সম্পর্ক। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, একজন মহান ওলির নামের বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাম্পাসে সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ছেলে-মেয়েরা টিলার ওপরে, সেন্ট্রাল অডিটরিয়ামের আশেপাশে এবং পুরো ক্যাম্পাসজুড়েই আপত্তিকর ও অনৈতিকভাবে ছাত্র-ছাত্রীরা চলাফেরা এবং অবাধ মেলামেশা করেন। বিষয়টি কোনো সুস্থ ও বিবেকমান মানুষ মেনে নিতে পারে না’।

এতে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘ছাত্র-ছাত্রীদের অসংলগ্ন চলফেরা ও আচরণে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও আশেপাশে চলাফেরা করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের এ ধরনের কাজে আমরা এলাকাবাসী ধিক্কার জানাচ্ছি। এমন কর্মকাণ্ডে মহান ওলি নামকে কলুষিত করাসহ আধ্যাত্মিক নগরী সিলেটের মানুষের অনুভূতিতিতে আঘাত করা হচ্ছে। সিলেটের মানুষ এমন কর্মকাণ্ড বেশিদিন চলতে দেবে না। প্রয়োজনে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে’।

স্মারকলিপির মাধ্যমে শাবিপ্রবি উপাচার্যকে এমন কর্মকাণ্ড কঠোর হাতে দমন করার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচির ডাক দেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তারা।

স্মারকলিপিতে অভিযোগকারী ‘এলাকাবাসীর’ নাম ও স্বাক্ষর থাকলেও তাতে কারো ঠিকানা বা ফোন নম্বর দেওয়া হয়নি। এমনকি স্মারকলিপি পর্যবেক্ষণে একই হস্তাক্ষরের একাধিক স্বাক্ষর চোখে পড়ে।

অনুসন্ধানে আখালিয়ার নিহারি পাড়ায় মো. আনোয়ার হোসেন নামের এক বাসিন্দাকে পাওয়া গেলেও স্মারকলিপি লেখা বা জমা দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন। এমনকি স্মারকলিপিতে দেওয়া স্বাক্ষরটিও তার নয় বলে জানান।

এছাড়া স্থানীয় এলাকাবাসী দাবি করে স্মারকলিপিতে যাদের নাম ও স্বাক্ষর দেওয়া হয়েছে তাদের কারো সন্ধানই পাওয়া যায়নি। প্রশ্ন ওঠেছে, উপাচার্যের বরাবর কে বা কারা দিল এই ‘ভূতুড়ে’ স্মারকলিপি?

এ বিষয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, স্মারলিপিতে উল্লেখিত অভিযোগ অবমাননাকর। বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে অজ্ঞতা থেকে কেউ এ ধরনের অভিযোগ করতে পারে কিংবা এটি বানোয়াটও হতে পারে। বর্তমান উপাচার্যকে টিকিয়ে রাখার একটা কৌশল হতে পারে এ ধরনের স্মারকলিপি।

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন