সাতক্ষীরায় শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় বাদী ও বিবাদীপক্ষের যুক্তিতর্কের পঞ্চম দিন শেষ

gbn

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) বিকালে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের পঞ্চম দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। আগামি কাল বুধবার আবারও দুই পক্ষ তাদের যুক্তিতর্ক তুলে ধরবেন। সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সাতক্ষীরার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবিরের আদালতে এই যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। আদালত উভয়পক্ষের বক্তব্য রেকর্ড করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মঙ্গলবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহিন মৃধা, সাতক্ষীরার পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ, সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট এসএম হায়দার, সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট ওসমান গনি প্রমুখ। অপরদিকে বিবাদীপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট শাহানারা আক্তার বকুল, অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ, অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান পিন্টু ও অ্যাডভোকেট তোজাম্মেল হোসেন। অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ পিপি আরও জানান, রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে গিয়ে ১৮ জন সাক্ষীর জবানবন্দী পৃথকভাবে তুলে ধরেন। এসময় বলা হয় সাক্ষীদের জবানবন্দীতে এই মামলার অভিযোগ পুরোপুরি প্রমানিত হয়েছে। প্রত্যক্ষ সাক্ষীদের জবানবন্দী পর্যালোচনা করে রাষ্ট্রপক্ষ আরও বলেন ১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার পর তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে হত্যার জন্য বারবার চেষ্টা করে ঘাতকরা। কলারোয়ায় ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সংঘটিত শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা তারই অংশ উল্লেখ করে তারা বলেন ন্যায়বিচার হলে আসামীরা প্রত্যেকে দোষী প্রমানিত হবেন এবং সর্বোচ্চ সাজা পাবেন। অপরদিকে বিবাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুল মজিদ বাদী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিনের মামলার আরজি, পুলিশের চার্জশীট ও সাক্ষীদের জবানবন্দী ব্যাখ্যা করে বলেন এর মধ্যে অভিযোগের তথ্যগত অসংলগ্নতা ও অসংগতি রয়েছে। সাক্ষীদের জবানবন্দীতে আসামীরা কোনভাবেই দোষী প্রমানিত হননি। কয়েকটি ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, তৎকালিন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবের পরামর্শ ও নির্দেশ মোতাবেক তার অনুসারীরা এই হামলা চালিয়েছে। তারা কেউ প্রমান করতে পারেননি যে তিনি ঘটনার দিন কলারোয়ায় উপস্থিত ছিলেন । ন্যায় বিচার হলে সকল আসামি খালাস পাবেন বলে বিবাদী পক্ষ উল্লেখ করেন। এদিন আদালতে অভিযুক্ত ৫০ আসামির মধ্যে ৩৪ জন উপস্থিত ছিলেন। অপর ১৬ জনের মধ্যে একজন অন্য মামলায় আটক রয়েছে। এ ছাড়া ১৫ জন পলাতক রয়েছে। মামলার বিবরনে বলা হয় ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালিন বিরোধীদলীয় নেতা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে কলারোয়ার এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা পত্নীকে দেখে মাগুরা ফিরে যাচ্ছিলেন। এসময় কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে তার গাড়িবহর পৌছালে একদল সন্ত্রাসী লাঠিসোটা, ধারালো অস্ত্র, বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তারা গুলিবর্ষন করে এবং বোমা বিস্ফোরন ঘটায়। এসময় বিরোধীদলীয় নেতা প্রাণে রক্ষা পেলেও তার গাড়িবহরে থাকা সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেত্রী ফাতেমা জাহান সাথী, জোবায়দুল হক রাসেল, শেখ হাসিনার ক্যামেরাম্যান শহীদুল হক জীবন সহ অনেকেই আহত হন। বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও এ ঘটনায় আহত হন। কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ মোসলেম উদ্দিন এ ঘটনায় কলারোয়া থানায় ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন। থানা মামলাটি রেকর্ড না করায় ২ সেপ্টেম্বর ২০০২ তারিখে তিনি সাতক্ষীরার আমলী আদালতে মামলাটি করেন। এ মামলা খারিজ হয়ে যাবার পর পরবর্তীতে হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর পুনরুজ্জীবিত হয়। এসময় তদন্ত করে পুলিশ তৎকালিন বিএনপি দলীয় সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দেয়। ##

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন