নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জের
নবীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিশেষ আইন শৃংখলা কমিটির সভা গতকাল (১০ নভেম্বর) সোমবার বিকালে উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রুহুল আমিন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জানাযায়, গত (৩ নভেম্বর) নবীগঞ্জ উপজেলার।১০নং দেবপাড়া ইউনিয়নের গোপলার বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত একটি সালিশ বিচার নিয়ে ফেসইবুকে ছবি ও ভিডিও আপলোড করায় দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে প্রতিবাদমূখি হয়ে ওঠে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসী, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক- শিক্ষিকা ও সাংবাদিক মহলের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির ঘটনায় চড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, মহাসড়ক অবরোধ করে উত্তপ্ত হয়ে উঠে পুরো এলাকার জনপদ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে
পাল্টাপাল্টি অভিযোগ নিয়ে স্থবির হয়ে পড়ে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম। এতে, জরুরী ভিত্তিতে উপজেলা প্রশাসন বিশেষ আইন শৃংখলা কমিটির একটি বৈঠক করেন। উক্ত বৈঠকে ১২ ঘন্টার মধ্যে বিদ্যমান সকল পক্ষকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে আপলোডকৃত ছবি ও ভিডিও দ্রুত ডিলিট করা, শিক্ষক, অভিবাবক, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী সমন্বয়ে সৌহর্দ্যপূর্ণ পরিবেশে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা, ডিজিটাল সুরক্ষা আইনে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়।এসময় সামাজিক যোগোযোগ মাধ্যমে ভিডিও ও ছবি আপলোডের জন্য সাংবাদিক এম এ আহমদ আজাদ ভিডিও কলে বক্তব্য দেন। তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষার পরিবেশ সুন্দর রাখতে সকল ভুল বুঝাবুঝির অবসান করার আহবান জানিয়ে দুঃখ জনক ঘটনার জন্য মর্মাহত হন। এছাড়াও শিক্ষক, অভিবাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভুলবুঝা বুঝির অবসান হয়েছে।।সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা শেষে সার্বিক বিষয়ে নিস্পত্তিতে বিদ্যমান পক্ষের লোকজন ঐক্যমত পোষণ করেন। সমাপনী বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, গোপলার বাজার উচ্চ বিদ্যালয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসইবুকে আপলাডকৃত সকল ছবি এবং ভিডিও ১২ ঘন্টার মধ্যে ডিলিট করতে হবে। আগামীতে বিদ্যালয় নিয়ে ফেসইবুক পোষ্টে কোন প্রকার অস্থিতিশীলতা বা উত্তেজনাকর কিছু আপলোড দিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করলে কঠোর আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে। এসময় তিনি বলেন, আর কয়েক দিন পরেই বার্ষিক পরীক্ষা। শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠিয় দ্রত শিক্ষা বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষকদের প্রতি আহবান জানান। এছাড়াও ডিজিটাল সুরক্ষা আইনে সাংবাদিক এম এ আহমদ আজাদসহ ৫জনের বিরোদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রতাহারে সম্মত হয়ে মামলার বাদী গোপলার বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজী শিক্ষক শেখ মারজান আহমদ
প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। এ ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ায় উপজেলা প্রশাসনের প্রতি উপস্থিতি সকলেই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। এতে, উপস্থিত জনপ্রিতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক, অভিবাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য দেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ আলম, কুর্শি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদুর রহমান খালেদ, দেবপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান শাহরিয়ার নাদিম সুমন, দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার ষ্টাফ রিপোর্টার ও নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক এম এ বাছিত, গোপলার উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও পজিপ কর্মকর্তা শাকিল আহমদ, শিক্ষক কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ও হীরা মিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ রঞ্জন দাশ, গোপলার বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল ইসলাম, শিক্ষক সমন্বয় পরিষদের সদস্য সচিব ও তাহিরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ সোহেল আহমদ, তাহিরপুর আলীয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আফজল হোসেন, নয় মৌজা রুস্তমপুর সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা লোকমান খাঁন, গোপলার বাজার ব্যবসায়ি সমিতির সভাপতি আলী আকবর, সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন, জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির যুগ্ম আহবায়ক মোঃ আরিফ সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন। এসময় শিক্ষার্থীরাও সম্মানজনক সমাধানে সন্তোষ প্রকাশ করে। আইন শৃংখলা কমিটির সভা শেষে মামলা প্রত্যাহার বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদুর রহমান খালেদ, সাংবাদিক এম এ বাছিত সহ উপজেলা শিক্ষক বর্মচারী সমন্বয় পরিষদের নেতৃবৃন্দ ও গোপলার বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, গোপলার বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ ও মামলার বাদী শেখ মারজান আহমদ
নবীগঞ্জ থানায় গিয়ে মিমাংসার বিষয়ে ওসি শেখ মোঃ কামরুজ্জামানকে অবহিত করেন। সার্বিক বিষয় অবহিত হয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি আইনী প্রক্রিয়া শেষে দ্রুত মামলাটি নিস্পত্তির নিশ্চয়তা দিয়ে কোন আসামীকে হয়রানী করা হবেনা মর্মে আশ্বাস দেন।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন