সিলেটে পেশাজীবীদের সাথে মতবিনিময় যোগ্যতা বিবেচনায় ড. মোমেনকে ভোট দিন –ইনাম আহমদ চৌধুরী

সিলেট নিউজ: বিএনপি থেকে সদ্য আওয়ামীলীগে যোগ দেওয়া, সাবেক প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের চেয়ারম্যান ইনাম আহমদ চৌধুরী যোগ্যতা বিবেচনায় সিলেট-১ আসনে ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার বিকেলে সিলেটে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। সিলেট নগরীর হাফিজ কমপ্লেক্সে ড. মোমেনের নৌকা প্রতীকের সমর্থনে পেশাজীবীদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ইনাম আহমদ চৌধুরী সভায় যোগ দিলে আওয়ামীলীগ, অঙ্গসহযোগী সংগঠন ও প্রার্থী ড. এ কে মোমেন তাকে ফুল দিয়ে বরণ করেন।
বক্তব্যে বিএনপি ছেড়ে আওয়ামীলীগে যোগদান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা আমার জীবনের সবচেয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত। আমি অনেক চিন্তাভাবনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি নিশ্চিত বলতে পারি, কোন ভুল করিনি। বিএনপির বিবেচনাবোধের মৃত্যু আমি সহ্য করতে পারিনি।
তিনি বলেন, আমি বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আওয়ামীলীগে যোগ দিয়েছি। এখানে কোন ব্যক্তি স্বার্থ নেই। আমি মনে করি দেশকে উন্নয়নের পথে চূড়ান্ত লক্ষ্যে নিয়ে যাওয়ার এটাই সঠিক পথ।
সিলেট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইতিবাচক মনোভাবের কথা উল্লেখ ইনাম আহমদ চৌধুরী বলেন, গত বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) আমি যখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আওয়ামীলীগে যোগদান করি তখন প্রায় একঘন্টা সময় তিনি আমাকে দিয়েছেন। এসময় সিলেট প্রসঙ্গে অনেক কথা হয়েছে। সিলেট নিয়ে তাঁর আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি, আলাদা গুরুত্ব। তিনি মনেপ্রাণে সিলেটকে লালন করেন। এতো ইতিবাচক মনোভাব আমাকে অভিভূত করেছে।
তিনি বলেন, আমি যে দলে ছিলাম (বিএনপি) সেখানে সিলেটের এরকম স্বীকৃতি দেখিনি। এটা আমাকে অবাক করেছে।
সিলেট থেকে অর্থমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দায়িত্ব শেখ হাসিনা দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন সিলেটবাসীর দায়িত্ব হলো, শেখ হাসিনা যে প্রার্থীকে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন তাকে ভোট দিয়ে মনোনীত করা। নৌকার জয় মানে আমাদের উন্নয়ন-প্রত্যাশার জয়, শেখ হাসিনার জয়, বঙ্গবন্ধুর দর্শন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিজয়।
তিনি বলেন, একমাত্র আওয়ামীলীগই এদেশের লক্ষ্যবস্তু বাস্তবায়ন করতে পারে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়নের নিবেদিত প্রাণ। তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন, আমরা সবাই একই পথের সহযাত্রী হতে চাই। উন্নয়নের পথে আধুনিকীকরণে এগিয়ে যেতে চাই।
৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচন দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন উল্লেখ করে তিনি দেশের সামগ্রিক স্বার্থে নৌকাকে বিজয়ী করার আহ্বান জানান।
ড. এ কে আব্দুল মোমেন ইনাম আহমদ চৌধুরীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, আমরা খুবই গর্বিত যে বড় ভাই ইনাম আহমদ চৌধুরী সত্যকে উপলব্ধি করে আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন। তাঁর সাথে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক, পারিবারিকভাবেও তিনি আমাদের কাছের মানুষ।
তিনি বলেন, ইনাম চৌধুরী ব্যক্তিগতভাবে একজন সৎ ও উন্নত হৃদয়ের মানুষ। সারাজীবনই তিনি এদেশের উন্নয়ন ও মঙ্গলের স্বার্থে কাজ করেছেন। তাঁর মত ভাল লোক খুব কমই পাওয়া যায়। কিন্তু, তিনি যে দলে ছিলেন সে দল সম্মানীদের সম্মান দিতে জানে না।
বঙ্গবন্ধুকে সম্মান করা, ১৫ আগস্ট বেগম খালেদা জিয়ার ভুয়া জন্মদিন সমর্থন না করা এবং সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে বিরোধীপক্ষের মানুষের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার কারণে ইনাম আহমদ চৌধুরী বিএনপি’র চক্ষুশীল হয়েছেন বলে মনে করেন ড. মোমেন। তিনি বলেন, আওয়ামীলীগে যোগদানের মাধ্যমে তিনি সঠিক জায়গায় পৌঁছেছেন। এর মাধ্যমে তিনি নিজের মর্যাদাকে সুরক্ষিত করেছেন।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আব্দুল কুদ্দুস, কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট মৃত্যুঞ্জর ধর ভোলা, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক ড. এমএ আজিজ, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আজিজ আহমদ সেলিম।
এছাড়াও সিলেট প্রেসক্লাব, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাব, ইমজা, টেলিভিশন সাংবাদিক ইউনিয়ন, ফটো জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশন, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ, পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি সিলেট জেলা ও মহানগর, সিলেট জেলা ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদ, মধুবন ও শুকরিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি, ড. মোমেন সমর্থক ফোরাম, যুক্তরাষ্ট্র, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি (আজিজুল), বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা কৃষিবিদ পরিষদ সিলেট, ডিপ্লোমা কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন, সিলেট ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ, শাবিপ্রবি’র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।