ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় পরিবর্তন এনেছে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি নতুন স্থানকে এই তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু স্থান প্রাকৃতিক এবং কিছু স্থান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ। ইউনেস্কোর এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলো বিশ্ব দরবারে আরও পরিচিতি লাভ করবে।
ইউনেস্কোর মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় বেশ কয়েকটি নতুন সংযোজনের মধ্যে একটি জার্মানির নিউশওয়ানস্টাইন দুর্গ। এটি জার্মানির বাভারিয়ার একটি বিখ্যাত দুর্গ। এটি জার্মানির অন্যতম জনপ্রিয় একটি পর্যটনকেন্দ্র এবং বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত দুর্গগুলোর মধ্যে অন্যতম।
জার্মানির ফুসেন শহরের কাছে পোল্লাট গিরিখাতের উপরে এটি অবস্থিত। এই দুর্গটি রাজা দ্বিতীয় লুডভিগ-এর আদেশে নির্মিত হয়েছিল। ১৮৬৯ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল এবং এটি ছিল একটি কল্পনাবাদী স্থাপত্যের নিদর্শন। যদিও এটি সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই রাজা মারা যান, তবুও এটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
দুর্গটি রোমান্টিক স্থাপত্যশৈলীর একটি চমৎকার উদাহরণ এবং এর ভেতরের কক্ষগুলোও দারুণ কারুকার্য করা।
পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় এই দুর্গ। প্রতি বছর এখানে অসংখ্য মানুষ আসে। এটি জার্মানির অন্যতম বিখ্যাত ল্যান্ডমার্ক।
ইউনেস্কো প্রতি বছরই নতুন স্থান বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় যুক্ত করে। চলতি বছরও এর ব্যতিক্রম নয়। এই স্থানগুলো বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত এবং এদের মধ্যে কিছু স্থান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, কিছু স্থান প্রাকৃতিক ঐতিহ্য এবং কিছু স্থান উভয় ধরনের ঐতিহ্য বহন করে। এবার ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় আরও বেশ কিছু নতুন স্থান যুক্ত হয়েছে, যার মধ্যে ২১টি মানবিক কারণে সাংস্কৃতিক গুরুত্ব বহন করে। যেসব নতুন স্থান ইউনেস্কোর তালিকায় স্থান পেয়েছে সেগুলো হলো-
মুরুজুগা সাংস্কৃতিক ভূদৃশ্য, অস্ট্রেলিয়া।
ক্যাভারনাস দো পেরুচু জাতীয় উদ্যান, ব্রাজিল।
কম্বোডিয়ান স্মৃতিস্তম্ভ: দমন-পীড়নের কেন্দ্র থেকে শান্তি ও প্রতিফলনের স্থান, কম্বোডিয়া।
মান্দারা পর্বতমালার দি-গিদ-বি সাংস্কৃতিক ভূদৃশ্য, ক্যামেরুন।
জিক্সিয়া ইম্পেরিয়াল সমাধি, চীন।
মাউন্ট কুমগাং—সমুদ্র থেকে হীরা পর্বত, গণতান্ত্রিক গণপ্রজাতন্ত্রী কোরিয়া।
মোনস ক্লিন্ট, ডেনমার্ক।
কার্নাকের মেগালিথ এবং মরবিহানের তীর, ফ্রান্স।
বাভারিয়ার রাজা দ্বিতীয় লুডভিগের প্রাসাদ: নিউশওয়ানস্টাইন, লিন্ডারহফ, শাচেন এবং হেরেনচিমসি, জার্মানি।
মিনোয়ান প্রাসাদ কেন্দ্র, গ্রীস।
বিজাগোস দ্বীপপুঞ্জের উপকূলীয় এবং সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র—ওমাতি মিনহো, গিনি-বিসাউ।
ভারতের মারাঠা সামরিক ল্যান্ডস্কেপ, ভারত।
খোররামাবাদের প্রাগৈতিহাসিক উপত্যকা, ইরান।
সার্ডিনিয়ার প্রাগৈতিহাসিক জানাসের আস্তানা, ইতালি।
১৭ শতকের পোর্ট রয়েলের প্রত্নতাত্ত্বিক সমাহার, জ্যামাইকা।
মাউন্ট মুলানজে সাংস্কৃতিক ল্যান্ডস্কেপ, মালাউই।
বন গবেষণা ইনস্টিটিউট মালয়েশিয়া বন উদ্যান সেলাঙ্গর, মালয়েশিয়া।
উইক্সারিকা রুট, মেক্সিকো।
পানামার ঔপনিবেশিক ট্রানজিস্টমিয়ান রুট, পানামা।
বাঙ্গুচিয়ন স্রোতের ধারে পেট্রোগ্লিফ, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র।
শুলগান-তাশ গুহার শিলা চিত্র, রাশিয়ান ফেডারেশন।
গোলা-তিওয়াই কমপ্লেক্স, সিয়েরা লিওন।
প্রাচীন খুত্তালের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী স্থান, তাজিকিস্তান।
সার্ডিস এবং বিন টেপের লিডিয়ান তুমুলি, তুরস্ক।
ফায়া প্যালিওল্যান্ডস্কেপ, সংযুক্ত আরব আমিরাত।
ইয়েন তু-ভিনহ এনঘিয়েম-কন সন, স্মৃতিস্তম্ভ এবং কিপ বাক কমপ্লেক্স, ভিয়েতনাম।
ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকা হালনাগাদ করার মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের গুরুত্ব তুলে ধরে এবং এই ঐতিহ্যগুলো সংরক্ষণে উৎসাহিত করে। নতুন স্থানগুলো এই তালিকায় যুক্ত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলো তাদের ঐতিহ্য রক্ষার জন্য আরও বেশি মনোযোগ দেবে এবং বিশ্ববাসীও এই স্থানগুলো সম্পর্কে জানতে পারবে।
ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় পরিবর্তন আনার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরছে এবং সেগুলোর সংরক্ষণ ও সুরক্ষায় উৎসাহিত করছে।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন