জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
পড়াশোনা কখন উত্তম? সকালে না রাতে, খাবার আগে না পরে? ইন্টারেস্টিং এ প্রশ্নের উত্তর মাঝেমধ্যে অনেক শিক্ষার্থী যেমন জানাতে চান, তেমনি অনেক অভিভাবকও।
আমাদের ছেলে বেলায় আব্বা বলতেন শিশুদের লেখাপড়া বা হোম ওয়ার্কের উত্তম সময় হলো সকাল বেলা। আবার পড়া ভালো মুখস্ত বা হৃদয়স্থ হয় খানিকটা খালি পেটে। সব সময় ঠাসা উদর পুর্তি করে খেয়ে পড়তে বসলে পড়া তেমন মনে থাকে না।
বাল্যকালে আব্বার সেই উপদেশ বাণী আমরা পালন করার চেষ্টা করতাম অক্ষরে অক্ষরে। আব্বার সে উপদেশ ছিলো সায়েন্টিফিক্যালী প্রুভড।
কিভাবে?
একটা পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যকর ঘুমের পর সকাল বেলা ব্রেইন থাকে এনার্জি বা শক্তিতে ঠাসা। ফলে সকাল বেলা শিশুরা বা শিক্ষার্থীরা যা পড়ে খুব সহজে এবং স্বল্প সময়ে তা ব্রেইনের মেমোরি সেন্টারে (হপোক্যাম্পাস) গ্রথিত হয়। দিনের অন্য সময়ে পড়াশোনা করলে সাধারণত তেমন একটা হয় না। তাই শিশু বা শিক্ষার্থীদের সকাল বেলা পড়াশোনা বা হোম ওয়ার্ক করতে উৎসাহিত এবং অভ্যাস করতে হবে।
দ্বিতীয় প্রশ্ন, পড়াশোনা বা হোম ওয়ার্ক কখন করা ভালো, উদর পূর্তি বা ঠেসে খাবার পর নাকি হালকা খাবার পর?
পড়াশোনা বা হোম ওয়ার্ক যাই বলেন, উদর পূর্তি করে ঠেসে খেয়ে নিয়ে পড়াশোনা বা হোমওয়ার্ক করলে সেটা খুব একটা হৃদয়স্থ হয় না। এর সায়েন্টিফিক ব্যাখ্যা হলো, বেশি খেলে সেই খাবার কে হজম করার জন্যে রক্ত সরবরাহ পাকস্থলীতে বেশী হয়। স্বাভাবিকভাবে ব্রেইনে সে সময়ে রক্ত সরবরাহে খানিক ভাটা পড়ে। আর রক্ত সরবরাহ ভাটা পড়া মানে হলো, ব্রেইনে পুষ্টি সরবরাহে ভাটা পড়া। ফলে ঠাসা ভরা পেটের পড়াশোনা ব্রেইন ঠিকমতো ধরে রাখতে পারে না।
তবে একেবারে খালি পেট বা ক্ষুধা নিয়ে পড়াশোনা করার চেয়ে হালকা খাওয়া খেয়ে নেয়া ভালো। কারণ একেবারে খালি পেট হলে ব্রেইনে গ্লুকোজ সরবরাহ কম থাকবে ফলে পড়াশোনা ঠিকমতো মেমোরাইজ না হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
আবার আমাদের বাল্যকালে অনেকে বলতো পরীক্ষার আগের রাতে ডিম খেলে নাকি পরীক্ষায় ডিম পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি। এ ব্যাপারটিও আসলে কুসংস্কার। তবে বদহজম যাতে না হয় সে জন্যে পরীক্ষার আগের রাতে ঢাউস করে খাওয়া দাওয়া না করাই উত্তম।
ডা. সাঈদ এনাম
(ডিএমসি,কে-৫২)
সহকারী অধ্যাপক, সাইকিয়াট্রি। সিলেট মেডিকেল কলেজ।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন