প্রতিনিধি ||
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশ কারিকুলাম অনুযায়ী পরিচালিত বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ যথাযোগ্য মর্যাদায় উৎসবমূখর পরিবেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে। দিবসের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পনের মধ্যদিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।
বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের ‘বঙ্গবন্ধু-মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ’ শিরোণামে অঙ্কিত চিত্র প্রদর্শন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের জন্য রচনা প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন, কোরআন থেকে তিলাওয়াত ও বঙ্গবন্ধুর জীবননীর উপর কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
সকাল ০৭:০১ মিনিটে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রতিষ্ঠানের বোর্ড অব ডাইরেক্টর্সের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোস্তাক আহম্মদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার কনস্যুলার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এসএম রাকিবুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বোর্ড অব ডাইরেক্টর্সের কালচারাল ডাইরেক্টর সফিকুল সিরাজুল হক প্রমুখ।
.jpeg)
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এসমা আইয়ুব হিবা ও তাসনিম সিদ্দিকা মোস্তাক রিমঝিম এর যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাহেদ বিন সফিক।
স্বাগত বক্তব্যে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মোঃ আফজাল হোসেন বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানেই আমাদের প্রিয় স্বাধীন মাতৃভূমি বাংলাদেশ। দুটোই একে অন্যের পরিপূরক। আমাদের জাতীয় সত্ত্বার সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে মিশে আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
প্রধান অতিথি এসএম রাকিবুল্লাহ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া বাংলাদেশ অকল্পনীয়। একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটি কল্পনা করা যায় না। দেশে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে তিনি প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। কখনও কারাগারে থাকলেও আন্দোলন থেকে বিরত ছিলেন না। ভাষা আন্দোলন চলাকালে কারাগারে থেকেও ভাষার জন্য অনশন করেন। ০৭ ই মার্চ একটি স্বাধীন দেশের জন্য সকল রূপরেখা উপস্থাপন করেছিলেন। তার নেতৃত্বেই আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি। তিনি আরো বলেন, দিবসটি বর্তমানে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবেও উদ্যাপিত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর শিশুদের প্রতি ছিল অপরিসীম দরদ। তিনি শিশুদের সঙ্গে শিশুদের মত করে মিশে যেতে পারতেন। তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আজ শিশু দিবসে সবার ব্রত হওয়া উচিৎ শিশুদের উপর জোর নিপীড়ন নয়, শিশুর মতামতকেও গুরুত্ব দিন। শিশুর যে সকল ইতিবাচক কাজে খুব আগ্রহ সেটিকে মূল্যায়ন করুন। তাহলে আজকের শিশু আগামীদিনে জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে। তিনি প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধুকে তাঁর মা-বাবা রাজনৈতিক না বানিয়ে চাইলে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার বানাতে পারতেন, তিনি রাজনৈতিক না হলে আমরা একজন জাতির পিতা পেতাম না কিংবা এত সহজে বাংলাদেশও স্বাধীন হতোনা।
সভাপতি মোহাম্মদ মোস্তাক আহম্মদ বলেন, বাংলার রাজনীতির বরপুত্র বঙ্গবন্ধু ছিলেন আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার। বাংলার রাজনীতির পথ কখনোই মসৃণ ছিলনা কিন্ত সেই দুর্গম পথে অসাধ্যকে সাধন করে তিনিই এনে দিয়েছিলেন আমাদের মুক্তির বারতা। তাঁর তর্জনির গর্জণিতে এক ঐতিহাসিক ডাকে সমগ্র দেশ প্রেমিক জনতাকে সঙ্গে নিয়ে দেশকে শত্রু মুক্ত করে স্বাধীনতা এনেদিয়েছেন। আমরা সমগ্র বাঙালি জাতি তাঁর পরিবারের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকতে হবে। তাঁর যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে দেশরতœ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গটিও তিনি তার বক্তব্যে তুলে আনেন।
পরে দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন বিদ্যালয়ের ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে প্রধান অতিথি শিশুদের নিয়ে কেক কেটে দিবসটি উদ্যাপন করেন। পরে শিক্ষকমণ্ডলীর নেতৃত্বে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করে। সেখানে শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ (বাংলাদেশ জাতীয় কারিকুলাম) ২৪টি পুরস্কারের মধ্যে প্রতিটি ইভেন্টে প্রথম ও দ্বিতীয় পুরস্কারসহ ২০ টি পুরস্কার জিতে অনন্য কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখে।
2 Attachments
 
                            
                             
                                                                                                
 
                                                                                                     
                                                                                                    
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন