নিজেস্ব প্রতিবেদক,সুনামগঞ্জ :
সুনামগঞ্জে সীমান্ত সন্ত্রাসীদের অত্যাচারে জেলা ও উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকরাসহ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকার শতশত নিরীহ মানুষ। চরম আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে সবাই। কারণ বিভিন্ন সংবাদপত্রের সম্পাদক ও প্রশাসনকে ভুল বুঝিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করাসহ মিথ্যা মামলা-হামলা করে সাংবাদিক ও এলাকার নিরীহ মানুষকে চরম হয়রানী করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসী ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানাযায়-গত ২৯শে অক্টোরর জেলার তাহিরপুর উপজেলার টেকেরঘাট জামে মসজিদের তালা ভেংগে মোটর সাইকেল চুরি করে নেত্রকোনা পালিয়ে যাওয়ার সময় সীমান্ত কিশোর গ্যাং লিডার শিহাব সারোয়ার শিপু ও তার দুই সহযোগীকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে বিজিবি। এঘটনার প্রেক্ষিতে উদ্ধার হওয়া মোটর সাইকেল মালিক আব্দুল কাইয়ুম বাদী হয়ে ৫জনকে আসামী করে তাহিরপুর থানায় মামলা নং-২৩,তারিখ-২৯.১০.২০ইং দায়ের করেন। একারণে কিশোর গ্যাং লিডার সিহাব শিপুর বাবা সীমান্ত চোরাচালানী ও সোর্সদের গডফাদার হাবিব সারোয়ার আজাদ মিয়া ৪ থেকে ৫টি ইমেইল আইডি খুলে- আবেগ রহমান,মনোয়ারা রহমান কখনো শিপু রহমান আবার কখনো ইদ্রিস আলী ও হাবিব রহমান নাম দিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় কখনো তাহিরপুর ও সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি,আবার কখনো সিলেট প্রতিনিধি,আবার কখনো স্টাফ রিপোর্টার পরিচয় দিয়ে বিজিবি,পুলিশ,র্যাব,ডিবি ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করে এলাকার আইন শৃংখলা পরিবেশ নষ্ট করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারপর প্রকাশিত সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক,গুগল ও টুইটারে শেয়ার দিয়ে জেলা ও উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিকদেরকে প্রশাসনের কাছে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে হাবিব সারোয়ার আজাদ,তার ছেলে শিহাব সারোয়ার শিপু,ভাগিনা রাহাদ হাসান মুন্না,স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের নামে ৩০ থেকে ৩৫টি ফেইক আইডিসহ গুগল ও টুইটারের অর্ধশতাধিক ফেইক আইডি রয়েছে। তবে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের নাম ভাংগিয়ে চাঁদাবাজি করাসহ ইয়াবা বিক্রি করতে গিয়ে সীমান্তের লাউড়গড়,চাঁনপুর,বড়ছড়া ও বাদাঘাট বাজারে ইতিমধ্যে ৬বার গণধৌলাইয়ের শিকার হয়েছে আজাদ মিয়া। এছাড়া আদালতে ও থানায় ৮থেকে ১০টি চাঁদাবাজি মামলাসহ প্রধানমন্ত্রীর পোষ্টারে অগ্নি সংযোগ ও মুর্তি ভাংচুরের ঘটনায় আরো ২টি পৃথক মামলা হয়েছে। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নিকট রয়েছে এলাকাবাসীর অনেক লিখিত অভিযোগ। আর শিশু বলৎকার ও ইভটিজিং এর অভিযোগে সালিশ-বিচারে আজাদ মিয়াকে অনেকবার করা হয়েছে জুতাপেটা। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে হাবিব সারোয়ার আজাদকে তার বাবা তেজ্য করে জেলহাজতে দিয়েছিল বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। সম্প্রতি হাবিব সারোয়ার আজাদ মিয়া ও তার ছেলে শিপু দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নিজের আপন ছোট ভাই সাংবাদিক সাজ্জাদ হোসেন শাহকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। এঘটনার প্রেক্ষিতে পরিবারের লোকজন আজাদ মিয়াকে আলাদা করে দেয়। এছাড়া তাহিরপুর সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা,মদ,গাঁজা,বিড়ি,হেরুইন,গরু,কয়লা ও অস্ত্র বাণিজ্যসহ যাদুকাটা নদীর তীর কেটে বালি বিক্রি করে হাবিব সারোয়ার আজাদ মিয়া ইতিমধ্যে হয়েগেছে কয়েকশ কোটি টাকার মালিক। সেই অবৈধ টাকা দিয়ে বাদাঘাট বাজার সংলগ্ন কামড়াবন্দ গ্রামে নির্মাণ করছে বহুতল বিশিস্ট রাজকীয় বাড়ি ও মার্কেটসহ কিনেছে ৮-১০টি গাড়ি ও শতশত একর জমি। এছাড়া সুনামগঞ্জ ও সিলেটে তার একাধিক বাড়ি রয়েছে। তার অবৈধ সম্পদ দুদক কর্তৃক সরকারী হেফাজতে নেওয়ার জন্য জোর দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী। কারণ আজাদ মিয়া ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর অত্যাচারে সাংবাদিক সমাজসহ এলাকাবাসী অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। এব্যাপারে জানতে সীমান্ত চোরাচালানী ও চাঁদাবাজদের গডফাদার হাবিব সারোয়ার আজাদের বাড়িসহ তার একাধিক মোবাইল নাম্বারের যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি। প্রশাসনের চোখে ধুলা দিয়ে আজাদ মিয়া বিভিন্ন কোম্পানীর ১০ থেকে ১২টি মোবাইল সীম ব্যবহার করাসহ নিজেকে সব সময় আত্মগোপেন রাখার কারণে তাকে এত সহজে খোঁজে পাওয়া যায়না বলে এলাকাবাসী জানান।
এব্যাপারে টেকেরঘাট জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন- হাবিব সারোয়ার আজাদের ছেলে সিহাব সারোয়ার শিপু ও তার দুই সহযোগী মিলে আমাদের টেকেরঘাট মসজিদ থেকে মোটর সাইকেল চুরি করে বিজিবির হাতে গ্রেফতার হয়েছে এটা কি আমাদের অপরাধ। তার ছেলে শিপু ইয়াবা সেবন করে চাইনিজ কুরাল নিয়ে টেকেরঘাট স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্রদের ওপর হামলা চালায়। আজাদ মিয়া চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ৫বার গনধৌলাই খেয়েছে,তার বাবা তাকে তেজ্য করে জেলে দিয়েছিল। আমি তার অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করায় আমাকে শুধু হয়রানী করছে।
উপজেলার লালঘাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জামাল উদ্দিন বলেন- মোটর সাইকেল চুরির অপরাধে কিশোর গ্যাং লিডার সিহাব সারোয়ার শিপুসহ মোট ৪জন জেলহাজতে যাওয়ার পর থেকে শিপুর বাবা হাবিব সারোয়ার আজাদ ও ফুফাতো ভাই রাহাদ হাসান মুন্নাগং আমাকে মাদক, কয়লা ও অস্ত্র ব্যবসায়ীসহ ডাকাত বলে অপবাদ দিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি করছে। আজাদ মিয়ার সোর্স দুধের আউটা গ্রামের জিয়াউর রহমান জিয়া,লেংড়া বাবুল ও ইয়াবা কালামকে দিয়ে সীমান্ত এলাকায় চাঁদাবাজি,মাদক,অস্ত্র ও চোরাই কয়লার ব্যবসা করে। সোর্স জিয়াকে দিয়ে বড়ছড়া শুল্কস্টেশনের এক ব্যবসায়ীর বৈধ কয়লা বিক্রির দেড় লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করতে ছেয়েছিল। আমি তাদের অন্যায় কাজ-কর্মের প্রতিবাদ করার কারণে আমার পিছু লেগেছে।
চারাগাঁও শুল্কস্টেশনের কয়লা ব্যবসায়ী আজিজুল হক,দিন ইসলাম,শফিকুল ইসলাম বলেন-টেকেরঘাট মসজিদ থেকে চুরি হওয়া মোটর সাইকেলসহ কিশোর গ্যাং লিডার শিহাব সারোয়ার শিপু তার ২সহযোগী প্রায় ৬কিলোমিটার দূরে বাগলী ব্রিজের ওপর বিজিবি গ্রেফতার করেছে। কিন্তু এই সত্য ঘটনাটি মিথ্যা প্রমানিত করার জন্য এলাকার নিরীহ মানুষকে নানান ভাবে হুমকি-দমকি দেওয়াসহ বিজিবির বিরুদ্ধে নানান অপপ্রচার চালাচ্ছে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা। আমরা এলাকাবাসী এই হয়রানী থেকে মুক্তি চাই।
মাইটিভি ও দৈনিক মানবকণ্ঠের সাবেক সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি ও দৈনিক জনতা,দৈনিক খোলা কাগজ ও দৈনিক সংবাদ সারাবেলা পত্রিকার বর্তমান হাওরা ল প্রতিনিধি মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া বলেন-মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদেরকে বারবার নির্দেশ দিচ্ছেন-সকল প্রকার অনিয়ম-দূর্নীতি পত্রিকায় তুলে ধরতে। প্রশাসন দিয়ে ব্যবস্থা নেবেন তিনি। তাই আমি একজন সাংবাদিক হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে যারা সীমান্ত দিয়ে কয়লা ও মাদক চোরাচালানসহ চাঁদাবাজি করছে তার সংবাদ প্রকাশের কারণে আমাকে মিথ্যা মামলা ও হামলা করে বারবার হয়রানী করা হচ্ছে কিন্তু কখনোই সুবিচার পাইনি। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহযোগীতা কামনা করছি।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন