২০২৪ সালে জাপানে জন্মসংখ্যা কমে রেকর্ড সর্বনিম্ন হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৭ শতাংশ কম। জাপানের স্বাস্থ্য, শ্রম ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ১৮৯৯ সালে তথ্য সংরক্ষণ শুরু হওয়ার পর এই প্রথমবার বার্ষিক জন্মসংখ্যা ৭ লাখের নিচে নেমে এসেছে।
যা দেশটির ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা সংকট আরও তীব্র করে তুলছে এবং অর্থনীতি ও সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে।
২০২৪ সালে মোট প্রজনন হার ছিল প্রতি নারীর গড়ে ১ দশমিক ১৫, যা আগের বছরের তুলনায় শূন্য দশমিক শূন্য পাঁচ পয়েন্ট কম (২০২৩ সালে ছিল ১ দশমিক ২০)। এটি টানা তৃতীয় বছরের মতো রেকর্ড সর্বনিম্ন হার। একটি দেশের জনসংখ্যা স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজন হয় ২ দশমিক শূন্য সাত, যা থেকে জাপান অনেক পিছিয়ে।
২০০৫ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে দেশটিতে প্রজনন হার ১ দশমিক ২৬ থেকে বেড়ে ১ দশমিক ৪৫ পর্যন্ত পৌঁছালেও ২০১৬ সাল থেকে তা অবনতির দিকে।
এদিকে ২০২৪ সালে জাপানে বিয়ের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। কোভিড-১৯ মহামারির পর এই প্রথমবার বিয়ের সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও এটি এখনো ৫ লাখের নিচে এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন।
জাপানে বিবাহবহির্ভূত সন্তানের জন্ম এখনো বিরল। ২০২৩ সালে এর হার ছিল মাত্র ২ দশমিক ৫ শতাংশ। সামাজিক রীতিনীতির কারণে বিবাহ ছাড়া সন্তান নেওয়ার প্রবণতা খুবই কম, ফলে বিয়ের হার কমে যাওয়ার সরাসরি প্রভাব পড়ছে জন্মহারে।
জনসংখ্যা হ্রাস জাপানের অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের ওপর মারাত্মক ছায়া ফেলছে। কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী (১৫-৬৪ বছর বয়সী) কমে যাওয়ায় শ্রমবাজারে সংকট দেখা দিয়েছে। যদিও নারীরা ও প্রবীণরা এখন বেশি হারে কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হচ্ছেন, তবুও তা জন্মহারের পতন রোধে যথেষ্ট নয়।
টোকিওভিত্তিক ডাই-ইচি লাইফ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অর্থনীতিবিদ তাকুয়া হোশিনো জানান, ২০২৩ সালে জাপানের শ্রমশক্তি ছিল ৬৯ দশমিক ২৫ মিলিয়ন। ২০৩৫ সাল থেকে এই সংখ্যা কমতে শুরু করবে এবং ২০৫০ সালে তা দাঁড়াবে ৬২ দশমিক ৮৭ মিলিয়নে।
তাছাড়া জনসংখ্যা হ্রাসের ফলে ভোক্তা চাহিদা হ্রাস পাবে এবং এর ফলে কোম্পানিগুলোকে বিনিয়োগ কমাতে হতে পারে, যা জাপানের অর্থনীতিকে আরও দুর্বল করে তুলবে।
সূত্র: এএফপি
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন