সেরা শেফের পুরস্কার পেলেন টনি করিম খান আমেরিকান কারি অ্যাওয়ার্ডের জমকালো ও বর্ণাঢ্য আসর

gbn

হাকিকুল ইসলাম খোকন, 
ব্রিটিশ কারি অ্যাওয়ার্ডের আদলে এবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো ‘আমেরিকান কারি অ্যাওয়াডনুষ্ঠান। গত ২৪ মে ২০২৫,শনিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের অভিজাত কনভেনশন হল টেরেস অব দ্য পার্কে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেওয়া হয়।  অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন আরও ৫ শতাধিক।


বর্হির্বিশ্বে বাংলাদেশি খাবারকে জনপ্রিয় করার পাশাপাশি বহুজাতিক সমাজের খাবারের কারিগরদের সম্মাননা জানানোর অনুষ্ঠান বিভিন্ন পেশাজীবীদের মিলনমেলায় পরিণত হয় জমকালো ও বর্ণাঢ্য এ আসরটি। অনুষ্ঠানটি পরিণত হয় এক রঙিন উৎসবে, যেখানে রন্ধনশিল্পের ছোঁয়ায় মঞ্চজুড়ে ছিল গৌরব, গ্ল্যামার আর গর্বের অপূর্ব সমন্বয়। রেড কার্পেটে সম্মানিত হন সেরা রন্ধনশিল্পীরা। আমেরিকান কারি অ্যাওয়ার্ডের পরবর্তী আসরগুলো আরো ব্যতিক্রমী আরো জমজমাট করার প্রত্যাশা আয়োজকদের।
নিউইয়র্কের জনপ্রিয় বাংলাদেশি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান খলিল গ্রুপের কর্ণধার খলিলুর রহমান এবং আশা গ্রুপের যৌথ উদ্যোগে জমকালো এ আয়োজনটি দেখতে পেরে বেশ উচ্ছ্বসিত নিউইয়র্কবাসী। অনুষ্ঠানের টাইটেল স্পন্সর ছিল আশা রেস্টুরেন্ট ও খলিল বিরিয়ানি হাউস। 
অনুষ্ঠানের শুরুতেই নৃত্যাঞ্জলির শিল্পীরা দলগত নাচ পরিবেশন করেন। এছাড়াও নৃত্য পরিবেশন করেন বাংলাদেশ একাডেমী অব ফাইন আর্টস-বাফার শিল্পীরা। সংগীত পরিবেশন করেন সারেগামাপা খ্যাত বলিউডের সংগীত শিল্পী প্রিয়ানী ভানী পান্ডীত ও দিব্যরাজ বোস। সাদিয়া খন্দকারের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন আমেরিকান কারি অ্যাওয়ার্ডসের যৌথ আয়োজক যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় শেফ, খলিল গ্রুপ অব কোম্পানিজের প্রেসিডেন্ট খলিলুর রহমান ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আশা গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ও সিইও আকাশ রহমান। এরপরই শুরু হয় এওয়ার্ড প্রদান। ১৮টি ক্যাটাগরিতে ২৬ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।

 


আমেরিকান কারি অ্যাওয়ার্ডসে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পান বেস্ট রেস্টুরেন্ট সান সু কাপ সান  (কোরিয়ান), আলাদিন সুইটস এন্ড রেস্টুরেন্ট (বাংলাদেশি আমেরিকান), বেস্ট ক্যাটারিং সার্ভিস গোল্ডেন প্যালেস (ব্রঙ্কস, নিউইয়র্ক), বেস্ট শেফ প্রফেশনাল মাহবুবুর রহমান (যুক্তরাষ্ট্র), বেস্ট শেফ ইন্টারন্যাশনাল বিল্লাল হোসেন (কাতার এয়ারওয়েজ) ও ড. মানিন্দার সাধু (কানাডা), রাইজিং স্টার অব দ্য ইয়ার নূর হোসেন (যুক্তরাষ্ট্র), বেস্ট ফিউশন কারি ইনোভেশন মাস্টারশেফ লওরেন্স গোমেজ (ভারত), ফ্লেভারস অব দ্য ফিউচার হাবিবুর রহমান জহির (বাংলাদেশ), কালিনারি ওয়েলনেস চ্যাম্পিয়ন প্রফেসর ডা. মজিবুল হক (টেক্সাস), হসপিটালিটি আইকন সাখাওয়াত হোসেন (বাংলাদেশ), কালিনারি লিজেন্ড টিপু রহমান (ইউকে), বেস্ট ফুড ব্লগার (এথনিক ফুডস) আদনান ফারুক হিল্লোল এবং বেস্ট ফুড ব্লগার (মডার্ন এন্ড ফিউশন ফুডস) নুসরাত ইসলাম। দেশ-বিদেশে রন্ধনশিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য অস্ট্রেলিয়ান শেফ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত টনি খানকে লাইফটাইম এচিভমেন্ট এওয়ার্ড প্রদান করা হয়। প্রত্যেকের হাতে পুরস্কার তুলে দেন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের সিনেটর শেখ রহমান চন্দন ।
অনুষ্ঠানে হোম শেফ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন আয়োজনের বিচারকরা। পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন- মেইন কোর্স বিভাগে তিনটি পুরস্কার আলমা ফেরদৌস লিয়া (প্রথম পুরস্কার), তাসনুভা ইসলাম (দ্বিতীয়) ও মাকসুদা আহমেদ (তৃতীয়), অ্যাপেটাইজার বিভাগে দুটি পুরস্কার জাহানারা বেগম (প্রথম) ও ফারাহ তাজ (দ্বিতীয়) এবং আফটার কোর্স (ডেসার্ট) বিভাগে তিনটি পুরস্কার মেহনাজ ভূঁইয়া (প্রথম), হাইজিয়া রহমান (দ্বিতীয়) ও শাহানা বেগম (তৃতীয়)। এছাড়াও বিশেষ বিবেচনায় আরও তিনজন হোম শেফকে পুরস্কার দেওয়া হয়। তারা হলেন- কৃষ্ণা তিথি (ইনোভেশন এন্ড প্রেজেন্টেশন), শায়লা রশীদ (ডেডিকেশন এন্ড সার্ভিস) ও ওয়াসিয়া ইসলাম (ডেডিকেশন এন্ড সার্ভিস)। উপস্থিত বিচারকরা ছিলেন বাংলাদেশের সুপরিচিত রন্ধনশিল্পী রাহিমা সুলতানা রীতা, লবী রহমান, মেরীনা খন্দকার, শাহীন আফরোজ ও ওয়াশিংটন ইউনির্ভাসিটি সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির স্কুল অব বিজনেসের এসিসটেন্ট প্রফেসর কালিনারি বিশেষজ্ঞ গোলাম মোস্তফা। এ সময় বিচারকদের সবার হাতে সম্মাননা স্মারক তুলেন দেন সিনেটর শেখ রহমান চন্দন ।
অনুষ্ঠানে সাবেক সংসদ সদস্য ও ঠিকানা গ্রুপের চেয়্যারম্যান এম এম শাহীন, মাস্টার অব ল মোহাম্মদ এন. মজুমদার, অ্যাটর্নি রাজু মহাজন, বাংলা পত্রিকা সম্পাদক ও আইপি  চ‍্যনেল টাইম টিভির সিইও  আবু তাহের, আশা গ্রুপের চেয়ারপারসন নারী উদ্যোক্তা এশা রহমান, খলিল গ্রুপের চেয়ারপারসন  রিমা খাতুন, কি-ম্যাক্স রিয়েলিটির রিয়েলটর মোহাম্মদ কবীর, সাংবাদিক হাবিবুর রহমান, এটিভি ইউএসএ’র স্টেশন চিফ শামীম আল আমিন, সাপ্তাহিক সাদাকালোর নির্বাহী সম্পাদক মোহাম্মদ কাশেম, আশা গ্রুপের জিএম বোরহানুস সুলতান, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট নূরে আলম জিকু এবং বাংলাদেশে খলিল কালিনারি আর্টস সেন্টারের ভাইস প্রিন্সিপাল ও আমেরিকান কারি এওয়ার্ডসের সমন্বয়ক ফাতেমা শিরিন। 
সিনেটর শেখ রহমান চন্দন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উত্তোরোত্তর উন্নতি ও সমৃদ্ধিতে বাংলাদেশিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। তারা মূলধারার বিভিন্ন অঙ্গনে নিজেদের প্রতিভার সাক্ষর রাখছেন। প্রথমবারের মতো আয়োজিত আমেরিকান কারি এওয়ার্ডস অনুষ্ঠানটিও মূলধারায় কালিনারী শিল্পে এশিয়ান ও বাংলাদেশি ফুডকে জনপ্রিয় করে তুলতে সহায়তা করবে।


খলিলুর রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে রন্ধনশিল্প জগতে কারি এওয়ার্ডসের আয়োজন ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। আজকের এই গালা নাইটে ৬শ মানুষের উপস্থিতি এটিই প্রমাণ করেছে। আগামীতে দেশ-বিদেশের রন্ধন শিল্প জগতের আরও ব্যক্তিত্বের সমাবেশ ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।  


আকাশ রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো হলেও আয়োজনটিকে আন্তর্জাতিকমানের করার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। এওয়ার্ডের ইউনিক ডিজাইন ও অনুষ্ঠানের স্বতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্য আয়োজনকে সফল ও সার্থক করে তুলেছে। আগামী বছর এ আয়োজন আরও বড় পরিসরে করার ঘোষণা দেন তিনি। 
অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেটের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, রাজনীতিবিদ, আইনপ্রণেতা ও রন্ধনশিল্পীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ডিনারের মান ছিল নিম্ন মানের বলেছেন অংশগ্রহণকারীজন ।

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন