পশ্চিম তীরে আজও ইসরায়েলের ব্যাপক অভিযান, বেড়েছে নিহতের সংখ্যা

ইসরায়েল দখলকৃত পশ্চিম তীরে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো ব্যাপক সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। এতে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতিসংঘ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, এ অভিযান ‘ইতিমধ্যেই সৃষ্ট বিপজ্জনক পরিস্থিতিকে আরো উত্তেজিত করছে’।

অন্যতম প্রধান ফিলিস্তিনি অঞ্চল গাজা উপত্যকায় সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযানটি শুরু হয়েছিল।

ইসরায়েল হামাসের ৭ অক্টোবরের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে ওই অঞ্চলটিতে যুদ্ধ চলছে। ইসরায়েল স্থানীয় সময় বুধবার ভোরে পশ্চিম তীরের উত্তরাঞ্চলীয় শহর জেনিন, তুবাস ও তুলকারেমে সমন্বিত অভিযান শুরু করে, যাকে সামরিক বাহিনী ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ অভিযান বলে অভিহিত করেছে। অভিযানের জন্য প্রথমে ইসরায়েলি সাঁজোয়া যানগুলোর বহর, সেনা ও যুদ্ধবিমান পাঠানো হয়। এরপর সেনারা তাবাস, তুলকারেম ও জেনিনে শরণার্থীশিবিরগুলো ঘিরে ফেলে এবং ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সঙ্গে গোলাগুলি হয়।

 

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা বৃহস্পতিবার তুলকারেমে পাঁচ যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। এতে পশ্চিম তীরে অভিযান শুরুর পর থেকে মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ জনে। ওই পাঁচ যোদ্ধা তুলকারেমে একটি মসজিদের ভেতরে লুকিয়ে ছিল। গোলাগুলির পর তাদের মৃত্যু হয়।

ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদ তুলকারেমের নুর শামস শরণার্থশিবিরের কমান্ডার মুহাম্মদ জাব্বারের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে, যিনি আবু সুজা নামেও পরিচিত।

 

এ সহিংসতায় উল্লেখযোগ্য ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে, বিশেষ করে তুলকারেমে। সেখানকার গভর্নর অভিযানগুলোকে ‘অভূতপূর্ব’ ও ‘বিপজ্জনক সংকেত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এএফপিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে, বুলডোজারগুলো শহরের রাস্তায় পিচ তুলে ফেলছে। অবকাঠামোতে, বিশেষ করে পানি ও ড্রেন নেটওয়ার্কে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।

 

‘বিপজ্জনক পরিস্থিতি’
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, তুবাসের আল-ফারার শরণার্থীশিবির থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সেনা প্রত্যাহার করেছে, যেখানে বুধবার বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অভিযানের প্রথম দিনে ১২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ ছাড়া ফিলিস্তিনি প্রিজনার্স ক্লাব জানিয়েছে, ইসরায়েলি অভিযান শুরুর পর থেকে পশ্চিম তীরে অন্তত ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অন্যদিকে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস এক বিবৃতিতে ‘এই অভিযানগুলো অবিলম্বে বন্ধ করার’ আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা ও ‘শিশুসহ প্রাণহানির’ নিন্দা করেছেন। জাতিসংঘের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই বিপজ্জনক ঘটনাগুলো অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইতিমধ্যে সৃষ্ট একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতিকে উসকে দিচ্ছে এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে আরো দুর্বল করছে।’

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বুধবার সংকট মোকাবেলায় তার সৌদি আরব সফর সংক্ষিপ্ত করেছেন। জর্দানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ সহিংসতার বিস্তার বন্ধ করতে গাজায় যুদ্ধবিরতির আবেদন করেছেন।

জাতিসংঘের মতে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকর ইসরায়েলি সেনা বা বসতি স্থাপনকারীদের হাতে পশ্চিম তীরে কমপক্ষে ৬৩৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরায়েলের সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ফিলিস্তিনি হামলায় বা সেনা অভিযানে সেনাসহ ১৯ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন