গুলিতে আহত হয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গুলি তার কান ঘেঁষে গেছে। পেনসিলভানিয়ায় রক্তাক্ত অবস্থাতেই বক্তৃতা দেন ট্রাম্প। বলেন, সব যুক্তরাষ্ট্রবাসীর সংঘবদ্ধ হওয়ার সময় এসেছে।
গুলির ঘটনার পরই মার্কিন সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টরা অপরাধীকে গুলি করে হত্যা করে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, গুলি চলার আগেই কেন নিরাপত্তারক্ষীরা অপরাধীকে চিহ্নিত করতে পারলেন না।
সিক্রেট সার্ভিস এজেন্টরা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি যে গুলি চালাতে পারেন, তা তারা বুঝতেই পারেননি। ওই ব্যক্তি তাদের সন্দেহের তালিকাতেই ছিল না।
গুলি চলার পরই তারা ওই ব্যক্তিকে চিহ্নিত করেন। অপরাধীর নাম থমাস ম্যাথিউ সি। কেন তিনি গুলি চালালেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়। ওই বন্দুকধারীর সব তথ্য জানার চেষ্টা করছে এফবিআই।
সামাজিক যোগাযগ মাধ্যমে তার অ্যাকাউন্ট, ব্যক্তিগত জীবন—সব কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেখান থেকে সন্দেহজনক কিছু খুঁজে পায়নি পুলিশ।
এদিকে ঘটনার পর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ট্রাম্পের নিরাপত্তা নতুন করে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে সামনে রিপাবলিকানদের কনভেনশন আছে। সেখানে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
সাবেক দমকলপ্রধানের মৃত্যু
নিজের পরিবারকে বাঁচাতে গিয়ে নিহত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক দমকলপ্রধান কোরি কমপেরেটোর। স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে এদিন ট্রাম্পের মিছিলে গিয়েছিলেন তিনি। গুলির আওয়াজ পাওয়ার পরই তিনি মেয়ে ও স্ত্রীকে আড়াল করার চেষ্টা করেন। গুলি ধেয়ে আসছিল তার মেয়ের দিকে। মেয়ের সামনে শিল্ডের মতো দাঁড়ান ৫০ বছরের এই সাবেক অগ্নিযোদ্ধা। মৃত্যুবরণ করেন।
জো ও জিল বাইডেনও আলাদা করে কোরির পরিবারের প্রতি সমবেদনে জানিয়েছেন। গুলিতে আহত আরো দুজন এখনো হাসপাতালে ভর্তি। তাদের অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক।
এদিনের ঘটনার পর গোটা যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ভয়ের আবহ তৈরি হয়েছে। বছরের শেষ পর্বে নির্বাচন। তার আগে আরো এমন সংঘাত ও অশান্তির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। রবিবারের ঘটনার পর ওভাল অফিস থেকে বাইডেন একটি টেলিভিশন বিবৃতি দেন। সেখানে তিনি বলেন, সবাইকে সতর্ক হতে হবে। রাজনীতির চড়া সুর নামাতে হবে। এমন সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। মার্কিন রাজনীতিতে এই সহিংসতার কোনো জায়গা নেই।
বাইডেনের কথায়, ‘যা ঘটেছে, তা থেকে আমাদের সবাইকে শিক্ষা নিতে হবে। সবাইকে এক পা করে পিছিয়ে আসতে হবে। ইতিমধ্যে রাজনৈতিক সংঘাত চরম জায়গায় পৌঁছেছে। এই উত্তাপ কমাতে হবে।’
বাইডেন এদিন জানিয়েছেন, আক্রমণকারীকে হত্যা করা হলেও আক্রমণের কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। ওই ব্যক্তির পেছনে অন্য কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন আছে কি না, তা-ও পরিষ্কার নয়।
গোটা ঘটনার স্বাধীন তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বাইডেন। বস্তুত, ক্ষমতায় আসার পর এই নিয়ে তৃতীয়বার ওভাল অফিস থেকে এমন টেলিভিশন বিবৃতি দিলেন বাইডেন। খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছাড়া এমন বিবৃতি তিনি খুব বেশি দেননি।
এদিকে রবিবারই ট্রাম্পের ছেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প হেলিকপ্টারে যাচ্ছেন। ট্রাম্পের ছেলে জানিয়েছেন, তার বাবা রিপাবলিকান কনভেনশন যেখানে হবে, সেখানে পৌঁছে গেছেন। এদিন দুপুরে ট্রাম্প অবশ্য বলেছিলেন, তিনি কনভেনশনে যাওয়া কিছুটা পেছাতে চান। অন্তত দুদিন। পরে তিনি মত বদল করেন।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন