বাউ মুরগি পালনে স্বাবলম্বী চিলাহাটির নারীরা

আপেল বসুনীয়া, নীলফামারী প্রতিনিধি ||

সর্ব উত্তরের জেলা নীলফামারীর সীমান্তবর্তী এলাকা চিলাহাটির নারীরা সাংসারিক কাজের পাশাপাশি গরু, ছাগল,হাঁস ও মুরগি পালন করে নিজেরাই হচ্ছে স্বাবলম্বী। দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে পুরুষের পাশাপাশি বড় ভূমিকা রাখছেন নারীরা। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তারা।

পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) এর অর্থায়নে ও সেলফ-হেল্প এন্ড রিহেবিলিটেশন প্রোগ্রাম (শার্প) এর সহযোগিতায় সমন্বিত কৃষি ইউনিট প্রাণিসম্পদ খাতের নিরাপদ মাংস উৎপাদনে জলবায়ু সহিষ্ণু বাউ মুরগি পালনের জন্য নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটির বিভিন্ন এলাকার বেশ কিছু মহিলাকে বেছে নেয়। তাদের প্রত্যেককে ৪৩ দিনের জন্য ১৫০টি করে মুরগি পালনের জন্য দেয়া হয়। তারা গৃহস্থালী কাজের পাশাপাশি বাউ মুরগি পালন করে নিজেরাই এখন স্বাবলম্বী হয়েছেন।

মুরগি পালনকারী চিলাহাটির ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নের কাঠালতুলী গ্রামের আব্দুর সাত্তারের স্ত্রী পারভীন আক্তার বলেন- প্রশিক্ষণ শেষে সংস্থা থেকে আমাকে ১৫০টি বাউ মুরগি পালনের জন্য দেয়া হয়েছিল। বাউ মুরগি পালনে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। রোগ-বালাই নেই বললেই চলে। এই মুরগি পালনে সুবিধা হলো দেশি মুরগির তুলনায় অল্প দিনে বাজারজাত করা যায় এবং অন্য মুরগির তুলনায় ওজন ভালো আসে।

চিলাহাটির আবুল মেম্বারের চৌরাস্তার মনি আক্তার নামের অপর এক নারী খামারি জানান- আমার স্বামীও আমার এ কাজে যথেষ্ট সহযোগিতা করে। আর্থিকভাবে উন্নতি হচ্ছি বলেই স্বামী এ সহযোগিতা করছে। আমার মুরগি গুলি পাইকাররা এসে বাসা থেকে নিয়ে গেছে এবং এতে আমি বেশ লাভবান হয়েছি। এ মুরগির নষ্ট হবার বা মারা যাবার ভয় নেই। এছাড়াও আমাদের স্থানীয় বাজারে এর যে চাহিদা তৈরি হয়েছে তাই আবারো বড় আকারে এ মুরগির খামার করবো আমি।

সেলফ-হেল্প এন্ড রিহেবিলিটেশন প্রোগ্রাম (শার্প) এর প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোশারফ হোসেন বলেন- বাউ মুরগি এখন সবার কাছেই পরিচিত। খেতে সুস্বাদু, মৃত্যুহার কম, উৎপাদন বেশি হওয়ারর কারণেই খামারি ও ভোক্তা পর্যায়ে এর চাহিদাও অনেক। পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় এ মুরগি লালন-পালনের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

ডোমার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন- পিকেএসএফ ও শার্প প্রাণিসম্পদ বিষয়ে ব্যাপক কাজ করে। তারই ধারাবাহিকতায় ১০০ জন মহিলাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে বাউ মুরগি পালনে উদ্বুদ্ধ করেছে। বাউ মুরগির বাচ্চা বড় হয় সন্তোষজনকভাবে এবং মৃত্যুর হার কম। ৪৩ দিনের মধ্যে এ বাচ্চা ৯০০গ্রাম থেকে ১ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়ে থাকে।

তিনি আরও জানান- একেকটি মুরগি ২ থেকে ২.৫ কেজি  মতো খাদ্য গ্রহণ করে। সব মিলিয়ে একটি মুরগি পালনে ব্যয় হয় ২০০ থেকে ২১০ টাকা। সেটা বিক্রি হয় কেজি প্রতি ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা। এভাবে যদি কেউ ১০০ মুরগি পালন করে তাহলে ব্যয় বাদে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা লাভ হবে। এ মুরগি পালনে গ্রামীণ পুষ্টি ও আমিষের অভাব পূরণসহ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে।



--

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন