১২০ ওভার কিপিংয়ের পর লিটনের দুর্দান্ত হাফ সেঞ্চুরি

তার কিপিং নিয়ে কোনো প্রশ্ন ছিল না। প্রতিটি ম্যাচেই গ্লাভস হাতে নতুন নতুন চমক উপহার দিয়ে আসছিলেন তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের বন্যা বইয়ে দেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দলে অবস্থানটা দৃঢ় করতে পারেননি ব্যাটিংটার কারণেই। ব্লুমফন্টেইন টেস্টে ৬৫ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর নাইটওয়াচম্যান তাইজুল ইসলামকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ান তিনি। ১২০ ওভার পরিশ্রমসাধ্য কিপিংয়ের পর প্রায় টি-টোয়েন্টি স্টাইলে ব্যাট চালিয়ে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন এই তরুণ। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলতে ৫৩ বলে ৯টি চার হাঁকিয়েছেন তিনি। তাইজুলের সঙ্গে তার জুটিতেও এসে গেছে ৫০ রান। বাংলাদেশ ৬ উইকেটে ১১৫।
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই মহাবিপদে পড়ে বাংলাদেশ। দলীয় ১৩ রানে ধসের শুরু হয় সৌম্য সরকারের আউট দিয়ে।
ইনজুরি কাটিয়ে দ্বিতীয় টেস্টে ফেরা এই ওপেনারকে ব্যক্তিগত ৯ রানে বোল্ড করে দেন প্রোটিয়া পেস সেনসেশন রাবাদা। এরপর উইকেটে এসেই একটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে অলিভারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মুমিনুল হক। অলিভারের দ্বিতীয় শিকার অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম (৭)। মুক্তভাবে ব্যাটিং করার জন্যই তার হাত থেকে কিপিং গ্লাভস খুলে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু উদ্দেশ্য সফল হলো কই?
মুশফিকের বিদায়ের পর মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ আবারও নিজেকে প্রমাণে ব্যর্থ হন। মাত্র ৪ রান করে পারনেলের বলে কুইন্টন ডি ককের গ্লাভসবন্দি হন তিনি। বাংলাদেশের পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটে ৬১ রানে। তামিমের অনুপস্থিতিতে ওপেনিংয়ে নেমে বেশ কিছুক্ষণ লড়াই করেছেন ইমরুল কায়েস। তবে চা বিরতিপর পরেই রাবাদার বলে ২৬ রানেই থামে তার ইনিংস। ৪ রানের ব্যবধানে শুন্য হাতে ফিরে যান সাব্বির রহমান।
এর আগে ৪ উইকেটে ৫৭৩ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে প্রোটিয়ারা। ৩ উইকেটে ৪২৮ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করেছিল ডু-প্লেসিসের দল। বৃষ্টির কারণে দেড় ঘণ্টা দেরিতে খেলা শুরুর পরপরই তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরি করেন হাশিম আমলা। ১১৩ বলে ক্যারিয়ারের ২৮তম সেঞ্চুরি তুলে নিতে আমলা ১৪টি বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন। এর কিছু পরেই ১৪৭ বলে ১২ বাউন্ডারিতে টেস্ট ক্যারিয়ারের ৭ম সেঞ্চুরি তুলে নেন অধিনায়ক ফাফ ডু-প্লেসিস।
২৪ ওভার অপেক্ষার পর অবশেষে দ্বিতীয় দিনে উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। সেঞ্চুরিয়ান হাশিম আমলাকে (১৩২) বোল্ড করে নিজের তৃতীয় শিকার ধরেন পেসার শুভাশিস রায়। এর সঙ্গে সমাপ্তি ঘটে ২৪৭ রানের জুটির। এর আগে প্রথম দিনে ২৪৩ রানের জুটি গড়েছিলেন দুই প্রোটিয়া ওপেনার। অধিনায়ক ফাফ ডু-প্লেসিস ১৩৫ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।
অন্যদিকে বল হাতে ‘অন্যরকম’ সেঞ্চুরি করেছেন চার বাংলাদেশি বোলার। ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমান, পেসার শুভাশিস রায়, রুবেল হোসেন এবং স্পিনার তাইজুল ইসলাম প্রত্যেকেই এক শ’র উপরে রান দিয়েছেন। ২৯ ওভার বল করে ১১৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বোলার শুভাশিস রায়।