এবারের ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লুমিনেন্সের নকআউট পর্বে ওঠাই ছিল চমক। কিন্তু দলটি যেভাবে লড়াই করেছে, সেটি সত্যিই অপূর্ব-অসাধারণ। শেষ ষোলো থেকে উঠেছে কোয়ার্টার ফাইনালে, সেখান থেকে সেমিফাইনালে। ততক্ষণ পর্যন্ত সবকিছু যেন স্বপ্নের মতোই হয়েছে।
সেমিতে ওঠার পর ফ্লুমিনেন্সকে নিয়ে ভক্তদের স্বপ্ন আরও বড় হয়েছে। তারা প্রত্যাশা করেছিলেন, হয়তো সেমিতেও চেলসির বিপক্ষে কোনো না কোনো চমক দেখিয়ে ফাইনালে যেতে পারবে ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটি। যে কারণে ক্লাব বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালের দিকে তীক্ষ্ম চোখ ছিল ফুটবলপ্রেমীদের।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটি পারেনি। মঙ্গলবার নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে ফ্লুমিনেন্সকে ২-০ গোলে হারিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে চলে গেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব চেলসি।
চেলসির হুয়াও পেদ্রো মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো শুরুর একাদশে খেলেই চমক দেখান। নিজের সাবেক ক্লাব ফ্লুমিনেন্সের বিপক্ষে দুটি গোল করে চেলসিতে জেতান তিনি। অর্থাৎ ঘরের ছেলের হাতেই কুপোকাত হয় ফ্লুমিনেন্স।
২৩ বছর বয়সী এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড সম্প্রতি ব্রাইটন থেকে ৬০ মিলিয়ন পাউন্ডের (৮১.৫ মিলিয়ন ডলার) বিনিময়ে চেলসিতে যোগ দেন। ম্যাচের ১৮ মিনিটে একটি দুর্দান্ত বাঁকানো শটে প্রথম গোল করেন তিনি। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই (৫৬ মিনিটে) আরেকটি দুর্দান্ত কাউন্টার-অ্যাটাকে দ্বিতীয় গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন।
চেলসি ফাইনালে রোববার মুখোমুখি হবে রিয়াল মাদ্রিদ অথবা প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি), যারা দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আজ বুধবার রাতে মুখোমুখি হবে।
রিও ডি জেনেইরোর ক্লাব ফ্লুমিনেন্স এই টুর্নামেন্টের শেষ বাদ পড়া নন-ইউরোপীয় দল। এবার টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া সব ব্রাজিলিয়ান দলই নকআউটে উঠেছিল, যার মধ্যে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল দুটি।
২০২৩ সালের ক্লাব বিশ্বকাপে ফাইনালে উঠেছিল ফ্লুমিনেন্স। কিন্তু এবার তাদের থামিয়ে দিল তাদেরই এক সাবেক খেলোয়াড়।
পেদ্রো ফ্লুমিনেন্সের যুব একাডেমি থেকেই উঠে এসেছেন। ২০১৯ সালে ক্লাবটির হয়ে ২৫ ম্যাচ খেলার পর ইংল্যান্ডের ওয়াটফোর্ডে যোগ দেন। পরে যান ব্রাইটনে এবং সেখান থেকে চেলসিতে আসেন।
প্রথম গোলটির সুযোগ পেদ্রো নিজেই তৈরি করেন। মাঝমাঠে বল কেড়ে নিয়ে বল বাড়ান পেদ্রো নেতোর দিকে। নেতোর নিচু ক্রস প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার ক্লিয়ার করলেও বল যায় পেদ্রোর পায়ে। পুনরায় বল নিয়ন্ত্রণে এনে ডান পায়ে দুর্দান্ত শটে বল জড়ান গোলের ওপর ডান কোণে।
৫৬ মিনিটে করা তার দ্বিতীয় গোলটি ছিল আরও চোখধাঁধানো। এনজো ফার্নান্দেজের একটি পাস ধরে বাঁ দিক দিয়ে ড্রিবল করে বক্সে ঢোকেন পেদ্রো। এরপর এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে জোরালো শটে ক্রসবার ঘেঁষে বল জড়ান ফ্লুমিনেন্স গোলরক্ষক ফাবিওর জালে।
ব্রাজিলে বসে ম্যাচ উপভোগ করছেন দর্শকরা। এ সময় তাদের আবেগআপ্লুত হতে দেখা যায়। ছবি: সংগৃহীত
ফাইনালে উঠেই ৮৮.৪৩৫ মিলিয়ন থেকে ১০৩.৮১৫ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত আয় করেছে চেলসি। যার পরিমাণ নির্ভর করছে ফিফার নির্ধারিত অংশগ্রহণ ফি’র ওপর, যা এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায়, প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্রের ইস্ট কোস্টে অবস্থিত নিউ ইয়র্ক জেটস ও জায়ান্টসের এনএফএল স্টেডিয়ামে ৭০,০০০ এরও বেশি দর্শক ম্যাচটি উপভোগ করেন।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন