জিবি নিউজ প্রতিনিধি//
দেশের বিভিন্ন আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা পেতে শুরু করেছেন ‘গ্রিণ সিগন্যাল’। দলীয় হাইকমান্ড থেকে মনোনয়ন নিশ্চিত করতে মাঠে জোরালোভাবে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এমতাবস্থায় সিলেট জেলার ৬টি আসনের সবকটিতেই বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা নানাভাবে শোডাউন করে যাচ্ছেন।
সভা-সমাবেশ, গণমিছিল করে দলের হাইকমান্ডের কাছে নিজের জনপ্রিয়তা প্রমাণের চেষ্টা করছেন। গেল কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন নেতার শোডাউনে সিলেটে নির্বাচনী উত্তাপ বিরাজ করছে। এসব শোডাউনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীরাও উজ্জীবিত হয়েছেন বলে দাবি করছেন দলের নেতারা।
দেশের মর্যাদাপূর্ণ আসনগুলোর মধ্যে সিলেট-১ অন্যতম। এ আসনটি থেকে রাতের ভোটখ্যাত ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এক লাখের বেশি ভোট পেয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির। ওই সময় সাধারণ ভোটারও ও বিএনপি দলীয় নেতাকর্মীদের ধারণা ছিল ভোটাররা আরও একঘন্টা ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে ‘রাতের ভোট ভান্ডার’ ছাপিয়ে মুক্তাদিরই শেষ হাসি হাসতেন।
২০১৮ সালে বিজয়ী হতে না পারলেও মাঠ ছাড়েননি মুক্তাদির। আসনটিতে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবেই ছিলেন তিনি। কিন্তু গত ২২ অক্টোবর চেয়ারপার্সনের আরেক উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী হযরত শাহজালাল (রহ.) এর মাজার জিয়ারত শেষে শোডাউন করে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেন। এর আগে ৮ অক্টোবর হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারত শেষে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় শুরু করেছিলেন খন্দকার মুক্তাদির।
এদিকে, সিলেটে প্রতিযোগিতা করে সবচেয়ে বেশি শোডাউন চলছে সিলেট-৩ ও ৬ আসনে। রবিবার ফেঞ্চুগঞ্জে বিশাল গাড়িবহর নিয়ে শোডাউন করেছেন সিলেট-৩ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এমএ মালিক। এর আগে শনিবার দক্ষিণ সুরমার চন্ডিপুলে শোডাউন করেছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এ সালাম।
গত ১৩ অক্টোবর সিলেটের যোগাযোগ ভোগান্তি নিরসনে চন্ডিপুলে বিশাল মানববন্ধন ও সমাবেশ এবং ২০ অক্টোবর চন্ডিপ্রসাদ স্কুল মাঠে বিশাল সমাবেশ করেছেন একই আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ূম চৌধুরী। আগামী ২৮ অক্টোবর চন্ডিপুল থেকে তিনি ফের গণমিছিলের আয়োজন করেছেন।
ওই আসনে অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও কারানির্যাতিত সাবেক ছাত্রদল নেতা আবদুল আহাদ খানও সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
সিলেট-৪ আসনভূক্ত তিন উপজেলায় সমাবেশ করে প্রার্থীতার জানান দিচ্ছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী।
রবিবার গোয়াইনঘাটে বিশাল গণমিছিল করেছেন জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও দুইবারের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম চৌধুরী।
সাবেক বিএনপি নেতা এড. সামসুজ্জামান জামানও জৈন্তাপুরে শোডাউন করেছেন।
সিলেট-৬ আসনভূক্ত গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলায় দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, ২০১৮ সালে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রার্থী বিএনপি নেতা ফয়সল আহমদ চৌধুরী, জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীম বিশাল বিশাল শোডাউন করে নিজেদের জনপ্রিয়তা তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।
এ প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা শোডাউন করছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতা একাধিক হলেও দলের মধ্যে কোন বিভক্তি নেই। সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা বাড়ায় নেতাকর্মীরাও উজ্জীবিত হয়ে ওঠেছেন। তবে শোডাউন করতে গিয়ে যাতে কোন জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না হয় এ ব্যাপারে দল থেকে সবাইকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন