জিবি নিউজ প্রতিনিধি//
জুলাই বিপ্লবের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে সিলেটে স্থাপন করা হয়েছে ‘জুলাই বিপ্লব ভিজ্যুয়াল করিডর- স্মৃতির পথ।’ অথচ সেই স্মৃতির পথে স্থাপিত ব্যানারে ঠাঁই হয়নি সিলেটের শহিদ সাংবাদিক এটিএম তোরাবের! এটা ইচ্ছাকৃত না নিতান্তই অবহেলা- এমন প্রশ্ন উঠছে সচেতন মহলে। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে অনেকে ক্ষোভ ঝাড়ছেন ।
তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন, কাজটি চলমান। মূল প্রোগ্রাম ৩ আগস্ট থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। ২ আগস্ট শনিবারই শহিদ তোরাবকে নিয়ে ব্যানার ফেস্টুন যথাযথ মর্যাদায় সাঁটানো হবে।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে দেশব্যাপী ‘জুলাই বিপ্লব ভিজ্যুয়াল করিডর- স্মৃতির পথ’ নামক কর্মসূচি পালনের অংশ হিসাবে সিলেট মহানগরীর কিনব্রিজের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে উত্তর প্রান্ত হয়ে বন্দরবাজার এবং সুরমার তীর পর্যন্ত বিশেষ করিডর হিসাবে নানা ব্যানার ফেস্টুনে সাজানো হয়েছে।
এসব ব্যানার ফেস্টুনে শহিদ আবু সাঈদের ছবিসহ জুলাই বিপ্লবের নানা ঘটনার ছবি সংযুক্ত করা হয়েছে।
কিন্তু সংযুক্ত করা হয়নি সিলেটে শহিদ সাংবাদিক এটিএম তোরাবের কোনো ছবি। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন সিলেটের সচেতন মহল। বিশেষ করে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ, শহিদ তোরাবের সহকর্মীসহ অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
সিনিয়র জুনিয়র অনেকেই এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করেছেন। কেউ ফেসবুকে, কেউবা বক্তব্য দিয়ে। আন্দোলনের দিনগুলোতে তোরাবের খুব কাছাকাছি ছিলেন ঢাকা পোস্টের সিলেট প্রতিনিধি মাসুদ আহমদ রনি।
তিনি খুব ব্যথিত কন্ঠে বলেন, সারাদেশের লোকজন জানে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাংবাদিক হিসাবে প্রথম শহিদ আমাদের তোরাব। সিলেটের জেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন ও সিলেট জেলা পরিষদও বিষয়টি খুব ভালোভাবে অবগত। সংশ্লিষ্ট তিনটি দফতরই এ ব্যাপারে অবগত। তবু এটা কেন হলো? এটা ভুল না ইচ্ছাকৃত? যাই হোক, আসলে এ ধরনের কাজ করতে হলে প্রশাসনকে সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ বা পরামর্শ করলে এরকম হতোনা। আমি আশা করছি, ভবিষ্যতে বিষয়টি প্রশাসন সতর্কভাবে বিবেচনা করবে।
তিনি এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
শহিদ তোরাবের ঘনিষ্ঠ সহকর্মী সাংবাদিক আজমল আলী তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, আমি প্রতিবাদ করলাম। তারুণ্যের আইডিয়ার গনঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি পালন. আমার চোখ জুলাই বিপ্লব ভিজ্যুয়াল করিডোর ব্যানারে শহীদ সাংবাদিক এটিএম আবু তোরাবের ছবি রাখা উচিৎ ছিল।
তিনি এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন, সিলেট সিটি কর্পোরেশন ও জেলা পরিষদ কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
এছাড়াও করিডরে যাতায়াতকারী একাধিক ব্যক্তির সাথে আলাপ হয় সিলেটভিউর। তারা সবাই প্রশ্ন তুলেছেন। এমনকি, কেউ কেউ এমন প্রশ্নও করেছেন, ভাই, তোরাবর ছবি নাই কেনে?
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের বক্তব্য জানতে সিলেটের জেলা প্রশাসকের মোবাইলে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (সার্বিক) মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এই প্রোগ্রামে অর্থনৈতিক সমর্থন দেওয়া প্রতিষ্ঠান সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজা-ই রাফিন সরকার বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে জেলা পরিষদের সাথে আমার কথা হয়েছে। প্রধান নির্বাহী জানিয়েছেন, মূল প্রোগ্রামতো ৩ থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। শুক্রবার প্রথম দিন হিসাবে এটা হয়েছে। শহিদ তোরাবের ব্যানার ফেস্টুন কালই সাঁটানো হবে। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
সিলেট জেলা পরিষেদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সিংহ এ বিষয়ে বলেন, আজ প্রথম দিন ছিল। আমরা অবশ্যই শনিবার শহিদ সাংবাদিক তোরাবের ব্যানার ফেস্টুন করবো।
তিনি বলেন, শহিদ তোরাব এই সিলেটের সন্তান। বিষয়টি অনিচ্ছাকৃত ছিল এবং কালই অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে তার ছবি সংবলিত ব্যানার বা ফেস্টুন রাখা হবে।
তবে কেন শুক্রবারই তা করা হলোনা- এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান তিনি।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন