এখন থেকে অন্য দেশের নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করবেন না যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকরা

gbn

বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকদের বিদেশি নির্বাচন সম্পর্কে মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) জারি করা এক অভ্যন্তরীণ নোটে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সব মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেটকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, তারা যেন কোনো দেশের নির্বাচনের স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা বা গণতান্ত্রিক মানদণ্ড নিয়ে আর কোনো মতামত প্রকাশ না করেন।

নির্দেশনায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, নির্বাচন সংক্রান্ত যেকোনো বক্তব্য শুধু পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা দপ্তরের মুখপাত্রের পক্ষ থেকেই আসবে। মার্কিন কূটনীতিকরা নিজেরা এ ধরনের কোনো বিবৃতি দিতে পারবেন না, যতক্ষণ না তা দপ্তরের শীর্ষ নেতৃত্বের স্পষ্ট অনুমোদনপ্রাপ্ত হয়।

 

এই নির্দেশিকাটি ওয়াশিংটনের বহির্বিশ্বে ‘মুক্ত ও সুষ্ঠু নির্বাচনের’ পক্ষে অবস্থান গ্রহণের ঐতিহ্য থেকে সরে আসার বড়ো ধরনের ইঙ্গিত দেয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অভ্যন্তরীণ এই বার্তাটিকে ‘সংবেদনশীল’ হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও তা ‘শ্রেণিবদ্ধ’ নয় বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, যখন কোনো বিদেশি নির্বাচনের ব্যাপারে মন্তব্য করা প্রাসঙ্গিক হবে, তখন বার্তাটি হবে সংক্ষিপ্ত। বিজয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানানো ও প্রয়োজনে পারস্পরিক কূটনৈতিক স্বার্থের ওপর ভিত্তি করে সীমিত থাকবে।

 

এতে আরও বলা হয়েছে, নির্বাচনের সুষ্ঠুতা, প্রকৃত বৈধতা, কিংবা সংশ্লিষ্ট দেশের গণতান্ত্রিক মান ও আদর্শ নিয়ে কোনোরকম মন্তব্য এড়িয়ে চলতে হবে।

‘পশ্চিমা হস্তক্ষেপের যুগ শেষ’- ট্রাম্পের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত

এই নির্দেশিকায় ট্রাম্পের ১৩ মে রিয়াদ ভাষণের উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে তিনি ‘পশ্চিমা হস্তক্ষেপকারীদের’ সমালোচনা করে বলেন, মধ্যপ্রাচ্য বা অন্যান্য অঞ্চলের দেশগুলো কীভাবে নিজেদের শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করবে, তা নিয়ে ওয়াশিংটনের আর কিছু বলার নেই। তিনি সেই ভাষণে জোর দিয়ে বলেন, এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্র কেবল নিজেদের কৌশলগত স্বার্থ যেখানে মেলে, সেখানে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলবে।

 

নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র নিজস্ব গণতান্ত্রিক আদর্শে অটল থাকবে এবং যখন অন্য কোনো দেশ স্বেচ্ছায় সে পথে হাঁটে, তখন আমরা তা উদ্‌যাপন করবো। তবে প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট করেছেন, এখন আমাদের লক্ষ্য হলো কৌশলগত স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র রয়টার্সকে দেওয়া এক ই-মেইল বার্তায় বলেছেন, এই নির্দেশিকাটি ট্রাম্প প্রশাসনের ‘জাতীয় সার্বভৌমত্ব’ কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাকে তার বৈদেশিক নীতির মূলস্তম্ভ হিসেবে উপস্থাপন করে এসেছে। তবে ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই নীতিগুলোর প্রতি স্পষ্টভাবে উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে, অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার যুক্তি তুলে ধরে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র প্রসারের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্যগত নেতৃত্ব থেকে পিছিয়ে এসেছে বর্তমান প্রশাসন।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নির্দেশনার ফলে যুক্তরাষ্ট্র এখন স্পষ্টতই ‘মানবাধিকার ও গণতন্ত্র প্রসারের পৃষ্ঠপোষক’ ভূমিকা থেকে সরে এসেছে।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন