দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরের সর্বকনিষ্ঠ মেয়রকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ২৭ বছর বয়সী ব্রিজিত গার্সিয়া ও তাঁর প্রেস অফিসারকে রবিবার সান ভিসেন্টে শহরে একটি গাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। সেখানে তিনি গত বছর মেয়র নির্বাচনে জয়লাভ করেছিলেন। বিবিসি সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি এবং এর উদ্দেশ্য কী হতে পারে তা-ও স্পষ্ট নয়।
গার্সিয়া হলেন আন্দিয়ান দেশটিতে নিহত হওয়া সর্বশেষ রাজনীতিবিদ, যেখানে গত বছর প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ফার্নান্দো ভিলাভিসেনসিওকে হত্যা করা হয়েছিল।
গার্সিয়া এবং যোগাযোগ পরিচালক জাইরো লুরের মৃতদেহ স্থানীয় সময় রবিবার ভোরে পাওয়া যায়। পুলিশ বলেছে, গাড়ির ভেতর থেকে গুলি করে তাঁদের হত্যা করা হয়েছে এবং গাড়িটি ভাড়া করা হয়েছিল।
বিবিসি জানিয়েছে, গার্সিয়া পেশায় একজন নার্স। গত বছর ২৬ বছর বয়সে বিরোধী সিটিজেনস রেভল্যুশন দলের হয়ে সান ভিসেন্টের মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। সান ভিসেন্টে তিনি যে শহরটি শাসন করেছিলেন, সেটি মানবি প্রদেশে অবস্থিত। গার্সিয়াই মানবির প্রথম রাজনীতিবিদ নন, যাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
জুলাই মাসে একজন বন্দুকধারী বন্দর শহর মান্তার মেয়র অগাস্টিন ইন্ট্রিয়াগোকে গুলি করে হত্যা করে, যিনি সম্প্রতি পুনর্নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর আগে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুয়ের্তো লোপেজ শহরে ভোট শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে মেয়র পদপ্রার্থী ওমর মেনেন্দেজকে হত্যা করা হয়েছিল।
দেশটিতে সহিংসতা মানবিতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। আগস্টে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ফার্নান্দো ভিলাভিসেনসিও রাজধানী কুইটোতে একটি প্রচার সমাবেশ থেকে বের হওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হন। ফার্নান্দোর হত্যার তদন্তকারী প্রসিকিউটররা বলেছেন, অপরাধী চক্র লস লোবোসের সদস্যরা কারাগারের ভেতরে থেকে এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেছিলেন।
গণমাধ্যমটি বলেছে, ইকুয়েডরের উপকূলীয় অঞ্চল বিশেষ করে মাদকচক্রের সঙ্গে যুক্ত সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চক্রগুলো যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের লাভজনক বাজারে কোকেন পাচার করে। গ্যাংয়ের উত্থানের ফলে প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নোবোয়া জানুয়ারিতে সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য দুই মাসব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। ৭ মার্চ তা আরো এক মাস বাড়ানো হয়। সরকার বলছে, জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর থেকে নিরাপত্তা বাহিনী দেড় লাখের বেশি অভিযান চালিয়েছে এবং ১০ হাজারেরও বেশি সন্দেহভাজনকে আটক করেছে।
অন্যদিকে সরকারের সমালোচকরা বলছেন, গার্সিয়ার হত্যাকাণ্ড দেখাচ্ছে, নির্বাচিত কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আরো কিছু করা দরকার। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নোবয়ার কাছে পরাজিত হওয়া লুইসা গনজালেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘ইকুয়েডরে কেউ নিরাপদ নয়।’
জিবিডেস্ক //

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন