অসম্মানের দুনিয়াটা বড্ড অসুন্দর!

প্রিয়জনকে তো বটেই, অন্যকাউকেও কোনভাবে অসম্মান করবেন না যদি কারণ উপস্থিত না হয়। পরিস্থিতি তৈরি হলেও সীমার মধ্যের সবচেয়ে কম অসম্মান করুন।

=====================================

রাজু আহমেদ।  প্রাবন্ধিক। |

.........................................................

যে মানুষটি আপনার সাথে, আপনার জীবনের সাথে এবং আপনার অস্তিত্বের সাথে মিশে গেছে তাকে কোনভাবেই, কোন পরিবেশেই এবং কারো কাছেই ছোট করবেন না। তার সম্মান আপনার  সম্মান হয়ে গেছে। দূরের মানুষ তো পরের কথা বরং ঘরের মানুষদের কাছেও তাকে অসম্মান করবেন না। অবহেলায় দু'বেলা খোয়াবেন না। প্রয়োজন হলে নিজেকে ছোট করেন, নিজেকে অপরাধী সাজান তাও তাকে নয়।

 

 ঘরে এবং বাইরে আপনি তাকে সম্মান দিলে আপনাদের সন্তানেরা সঠিক শিক্ষা পেয়ে বড় হবে এবং অন্যরা আপনাদের সম্পর্ককে রেসপেক্ট করবে। তারচেয়েও বড় কথা, একজন আরেকজনকে যথার্থ সম্মান না দিলে মনের মধ্যে বসবাসের জন্য বাসা বাঁধা হয় না; বড়জোর ইট-পাথরের একঘরে থাকা হয়! বাইরে বাইরে তো কতকিছুই থাকে! ভেতরে ভেতরে সম্মানটুকু অটুক রাখতে হয়। এতে ভালোবাসার বন্ধন মজবুত হয়, অনুভবের দৃঢ়তা বাড়ে এবং বিশ্বাসের মূল আরও গভীরে বাড়ে! 

 

পান থেকে চুন খসলেই যারা আকাশ মাথায় তোলে, জনে জনে বলে বেড়ায়, এরে-ওরে ডেকে দেখায় কিংবা যাকে-তাকে স্বাক্ষী বানায় তারা স্বস্তিতে কাটাবে? সেটা ভাববেন না। যৌথচলার জীবনে পরস্পরকে সহযোগীর বদলে প্রতিযোগী বানিয়ে বেশিদূরে এগোনো যায় না এবং বেশিদিন একসাথে থাকাও হয় না! তাকে ছোট করলে, খোঁটা মারলে তাতে আপনি ছোট হন না? তাঁর অসম্মান যদি আপনার অসম্মান না হয় তবে এখনো সম্পর্কের রসায়ন ঠিকঠাক জমেনি। সম্পর্ক মধুর করতে, বন্ধন সুদৃঢ় করতে এবং আস্থা স্থির করতে সময় দিন। 

 

'তুমি চলে গেলেও ঢেউগুলো থেমে যাবে না' তবে তুমি থেকে গেলে ঢেউগুলো সুন্দর লাগবে এবং উপভোগ্য হবে। এই উপলব্ধি রক্ষা করতে,  দ্বৈত সত্তা ভুলে একক সত্তায় পৌঁছাতে এবং জীবন উপভোগ করতে পারস্পরিক সম্মান অটুট রাখতে হয়, বিশ্বাস বাঁচিয়ে রাখতে হয় এবং ভরসায় জিইয়ে থাকতে হয়। অসম্মানের দুনিয়াটা বড্ড অসুন্দর। সেখানে ব্যাধি বাসা বাঁধে। উল্টো স্রোতে হারিয়ে যায় সময়। যখন অনুশোচনা জাগে তখন আর প্রায়শ্চিত্তের সময় থাকে না। বেলা ফুরিয়ে আসে, সন্ধ্যা ঘনিয়ে জাঁকে!

 

প্রিয়জনকে তো বটেই, অন্যকাউকেও কোনভাবে অসম্মান করবেন না যদি কারণ উপস্থিত না হয়। পরিস্থিতি তৈরি হলেও সীমার মধ্যের সবচেয়ে কম অসম্মান করুন। প্রিয়জনকে কাছে টেনে গোপনে বোঝান-এটা এভাবে না করে, না বলে এভাবে এগুলে ভালো হয়? যে মানুষ আপনা মানুষ, যে জুড়ে আছে গোটা অস্তিত্বে তাকে ভরসমাজে অপমান করলে সেটার শোধ সে সুযোগ পেলেই তুলবে! তখন নিশ্চয়ই আপনার ভালো লাগবে না। অনুরূপ অনুভব অন্যদেরও হয়-যখন আপনি ভুল পথে বাড়েন! ভুল কথা বলেন এবং ভুল কিছু করেন! 

 

পরস্পরের মধ্যে অনেক কথা চলুক। জমানো কথা বারুদ হতে দিবেন না। রোজ ফুটিয়ে দিবেন। তার অনুপস্থিততে-অজ্ঞাতে বন্ধু মহলে, পরিচিত গন্ডিতে তাঁর প্রশংসার পঞ্চমুখীতায় মাতুন। সঙ্গী সম্মানের জায়গা পেলে আপনি আপনাআপনি বড় হয়ে ওঠেন। সময়টা সেখানেই ব্যয় হোক যে মূল্য বোঝে এবং ব্যস্ততার মাঝেও আপনাকে খোঁজে। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ অকুণ্ঠ থাকতে হবে। অনুভব বাড়ন্ত করতে হয়। তবেই ভালোবাসা আমাদের চাদর হবে। যত্ন-খেয়াল বাড়তে থাকবে। অবহেলায় বাঁচা যায় না বরং দায় হয়! তাদেরকে সাহসী হয়ে ওঠতে হয়!নিজেকে শেষ করে দেওয়ার খেলায় মাততে হয়! অথচ প্রভূ একটা জীবন জিততে দিয়েছিলেন!

 

 

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন