শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় মৌলভীবাজারের দুইটি আসনের নৌকা প্রতীকের হেভিওয়েট দুই প্রার্থী নির্ভার রয়েছেন।
ফলে এই দুই আসনে নিরুত্তাপ প্রচারণা চলছে। উঠোন বৈঠক, ছোটখাটো সভা সমাবেশ, পঞ্চায়েত কমিটির সাথে লিঁয়াজো করেই দিনের কার্যক্রম শেষ করছেন। দুইটি আসনের শহর এলাকাজুড়ে ব্যানার, পোস্টার দেখা গেলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে এসবের চিহ্ন না বললেই চলে। শুধুমাত্র মাঝে মাঝে প্রার্থীর জয়গান নিয়ে মাইকিং করতে দেখা গেছে।
মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা-জুড়ী) আসনে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। তিনি এ আসন থেকে পঞ্চম বারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী এবাদুর রহমান চৌধুরীকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে এবাদুর রহমান চৌধুরীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে হেরে যান। এরপর ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে তিনি ওই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১০ম জাতীয় সংসদের হুইপের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৮ সালে ৩০ ডিসেম্বর সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারী বর্তমান সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
অপরদিকে মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগ এর সাবেক সভাপতি, জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ। এ আসন থেকে ৬ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সপ্তম বারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তিনি ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে একটানা এ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৭৩ সালে জেলার কমলগঞ্জ গণ মহা বিদ্যালয়ে যোগদান করে শিক্ষকতা পেশা শুরু করেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শিশু একাডেমী কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি। আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডয়িাম সদস্য। তিনি প্যানেল স্পিকার হিসেবে ও দায়িত্ব পালন করেছেন।
এই দুইজন হেভিওয়েট প্রার্থীর বিপক্ষে যারা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় রয়েছেন তাঁদের পরিচিতি ও জনসমর্থন তেমন নেই। ভোটারদের কাছে এই প্রার্থীরা অপরিচিত এবং গ্রহণযোগ্যতা ও নেই।
শুধু মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা-জুড়ী) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আহমদ রিয়াজ এর মোটামুটি পরিচিতি রয়েছে। তিনি নির্বাচনে নৌকার হেভিওয়েট প্রার্থীর বিপক্ষে বিজয়ী হওয়ার মতো শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে পারবেন না বলে ভোটাররা মনে করছেন।
এই দুই আসনে ৬৯টি চা বাগান রয়েছে। তাই নির্বাচনে চা শ্রমিকদের ভোট একটা ফ্যাক্টর। বরাবরের মতো চা শ্রমিকরা নৌকা প্রতীকেই ভোট দিয়ে থাকে। এই হিসেবে নৌকার প্রার্থীরা অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন।
দুই আসনের দুই প্রার্থীর ব্যাপক জনসমর্থন, ব্যক্তিগত অবস্থান, নৌকা প্রতীক ও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় তাঁদের বিজয় প্রায় সুনিশ্চিত বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ভোটাররা।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন