আগামী বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা নেতা ভ্লাদিমির পুতিন। নির্বাচনের মুখে পুতিন তাঁর দেশের অর্থনীতির খারাপ সময় পার করতে পেরেছেন কি না তা নিয়ে বিশ্লেষকদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে প্রায় দুই বছরে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পাহাড় জমেছে। তবে নজিরবিহীন এসব নিষেধাজ্ঞার মুখেও আশ্চর্যজনকভাবে দেশটির অর্থনীতি শক্তপোক্তভাবেই চলছে।
কোনো কোনো অর্থনীতিবিদ অবশ্য বলছেন, রাশিয়ার যুদ্ধকালীন অর্থনীতি হয়তো অতিসক্রিয়তার লক্ষণ প্রদর্শন করছে। পশ্চিমা নেতারা আশা করছেন, তাঁদের নিষেধাজ্ঞা রুশ অর্থনীতিকে শেষ পর্যন্ত কাবু করতে পারবে। ফ্রান্সের একটি কূটনৈতিক সূত্র বলেছে, তিনি আশাবাদী, ২০২৪ সালের শেষে কিংবা ২০২৫ সালের শুরুর দিকেই রাশিয়া তার ‘অর্থনৈতিক সাজা’ ভোগ করতে শুরু করবে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মস্কো ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান নামের যুদ্ধ শুরু করার পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাশিয়ার ওপর ১১ দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
ইউরোপীয় কাউন্সিলের বিশ্লেষক আগাথে ডেমারাইস বলেন, রাশিয়ার ওপর আরোপিত শাস্তির মূল লক্ষ্য বিশ্বের নবম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিকে ধ্বংস করা নয়। কারণ তাতে বৈশ্বিক সংকটের সূচনা হতে পারে। রাশিয়ার সরকার পরিবর্তনও তাদের উদ্দেশ্য নয়। তাদের নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য হলো, রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতাকে সীমিত করে তোলা।
কার্নেগি রাশিয়া ইউরেশিয়া সেন্টারের বিশ্লেষক আলেজান্ড্রা প্রোকোপেনকো বলেন, রাশিয়ার অর্থনীতি ভালোভাবেই চলছে, তবে এর কর্মক্ষমতার সূচকগুলো বিভ্রান্তিকর। এগুলো সবই ‘অতি উত্তপ্ত’ অর্থনীতির লক্ষণ। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির এক-তৃতীয়াংশ আসছে সামরিক খাত থেকে। কাজেই অর্থনীতি সামরিক খাতের ওপর খুব নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে।
প্রোকোপেনকো আরো বলেন, তেলের ওপর নির্ভরতাও যুদ্ধের আগের সময়ের তুলনায় বেড়েছে।
চীন ও ভারতের মতো বড় ক্রেতাদের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, রাশিয়ার প্রধান রপ্তানি আয় এখনো তেল-গ্যাস বিক্রি থেকে আসে। পরিবেশ বিষয়ক পর্যবেক্ষক সংগঠন গ্লোবাল উইটনেস জানায়, চলতি বছরের সাত মাসে ইইউ দেশগুলো রাশিয়ার তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি ৪০ শতাংশ বাড়িয়েছে, যা প্রায় ৫৭০ কোটি ডলারের সমতুল্য।
কাজাখস্তানসহ সাবেক সোভিয়েতভুক্ত বিভিন্ন দেশ এবং তুরস্ক, চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার বাধা এড়াতে মস্কোকে সহায়তা করার পরিকল্পনায় যুক্ত আছে। গবেষণায় দেখা গেছে, চীনের মতো বিভিন্ন দেশের সহায়তায় পশ্চিমা অস্ত্র প্রযুক্তিও সংগ্রহ করতে পারছে রাশিয়া। কার্নেগির বিশ্লেষক প্রোকোপেনকো বলেন, এমনকি ইউরোপীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যেতেও প্রস্তুত আছে।
সূত্র : এএফপি
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন