সংবাদ সম্মেলন শেষ করেই ভোঁ-দৌড় দিলেন নাঈম হাসান। কিসের এত তাড়া নাঈমের? বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার নাফিস ইকবাল জানালেন, টিম বাস তাঁর জন্য অপেক্ষা করছে। বাস ধরার জন্য তাড়া থাকলেও সতীর্থদের প্রতি নাঈমের চাওয়া, আজ যেন তিনি এবং শেষ দিকের ব্যাটাররা প্রয়োজনে লম্বা সময় ব্যাটিং করেন।
৮ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ এখন নিউজিল্যান্ডের চেয়ে ৩০ রানে এগিয়ে।
‘বিনিময়ে’ দুই টপ অর্ডার ব্যাটার মাহমুদুল হাসান জয় ও নাজমুল হোসেন শান্তর উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। জাকির হাসান ১৬ এবং মমিনুল হক শূন্য থেকে শুরু করবেন আজ। চতুর্থ দিনের উইকেটে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস কত দূর নিতে পারবে বাংলাদেশ? দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা নাঈম বলেছেন, ‘২০০ থেকে ২২০ রান করতে পারলে ইনশাআল্লাহ আমরা ডিফেন্ড করতে পারব।’
তৃতীয় দিনে বৃষ্টি আর আলোর স্বল্পতার কারণে খেলা হয়েছে মাত্র ৩২.২ ওভার।
অবশ্য এটুকু সময়েই নিউজিল্যান্ডকে আরো চেপে ধরতে পারত বাংলাদেশ, কিন্তু সেটি হতে দেননি গ্লেন ফিলিপস। ৫ উইকেটে ৫৫ রান নিয়ে গতকাল মাঠে নেমেছিল নিউজিল্যান্ড। ভেজা মাঠ শুকিয়ে খেলা শুরু হতেই চারদিকে ঝলমলে রোদ। সমান আলোকিত ফিলিপস ও ডেরিল মিচেল জুটি।
ফিলিপস দারুণ সব শট খেলেছেন। তাতে বাংলাদেশের স্পিনাররাও খেই হারান।
একটু সাবধানে খেলছিলেন যিনি, সেই মিচেলই হুট করে বড় শট খেলতে গিয়ে ১৮ রানে আউট হন। নাঈমের বলে অনেকটা দৌড়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে ক্যাচ নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তাতে দুজনের ৪৯ রানের জুটি ভাঙে।
নাঈমের টার্ন ও বাউন্সে মিচেল স্যান্টনার বিদায় নেন দ্রুতই। এরপর আবার বাধা। কাইল জেমিসনের সঙ্গে ফিলিপস জুটিটা আরো বড়—৫৫ রানের। এরপর টিম সাউদিকে নিয়ে আরো ২৮ রান যোগ করে ফিলিপস আউট হন ৮৭ রানে। তাঁর ৭২ বলের ইনিংসে ৯ চার ও ৪ ছক্কা। সাউদি ১৪ রানে আউট হলে ১৮০ রানে শেষ হয় নিউজিল্যান্ডের ইনিংস। কুড়িয়ে বাড়িয়ে প্রথম ইনিংসে এগিয়ে যায় সফরকারীরা।
১০০ রানের আগে নিউজিল্যান্ডের ৭ উইকেট, বাগে পেয়েও লিড নিতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। স্বাভাবিকভাবে হতাশা কাজ করার কথা। ফিলিপসের সঙ্গে লেজের ব্যাটারদের জুটিগুলো বাংলাদেশকে ভুগিয়েছে। ব্যাপারটিকে এক অর্থে স্বাভাবিকভাবে নিলেও লিড পেলে ভালো লাগত বলে জানিয়েছেন নাঈম, ‘একটা জুটি হতেই পারে, যে কেউই একজন ভালো খেলতেই পারে। এখন ওদের মধ্যে (ফিলিপস) ভালো খেলছে, এ জন্য ওরা লিড নিতে পেরেছে। লিড পেলে ভালো হতো…এখন দিন শেষে আমরা লিড নিয়েছি। যদি ভালো ব্যাটিং করি, ভালো একটা স্কোর হবে।’
প্রথম দিনে পড়া ১৫ উইকেটের ১৩টিই স্পিনাররা নিয়েছেন। কাল নিয়েছেন ৭ উইকেটের ৪টি। বোঝাই যাচ্ছে, স্পিন ঘূর্ণি ব্যাটারদের জীবন কঠিন করে তুলেছে। এই উইকেট ব্যাটারদের জন্য কতটা কঠিন, স্পিনাররাই তো ভালো বলতে পারবেন। অফ স্পিনার নাঈমের উত্তর, ‘উইকেট যেমনই হোক, খেলতে হবে, কোনো অজুহাত দেওয়া যাবে না।’
মিরপুরের ‘লাগ ভেলকি লাগ’ উইকেটে অজুহাত খোঁজার সুযোগও নেই নাঈমদের। সিরিজ জয়ের জন্য এমন উইকেটই তো চেয়েছে বাংলাদেশ দল, যে ২২ গজে ব্যাটিং যত বড় দুঃস্বপ্নই হোক না কেন!
সংক্ষিপ্ত স্কোর : বাংলাদেশ : ১৭২ এবং ৩৮/২ (জাকির ১৬ ব্যাটিং, মাহমুদুল ২, নাজমুল ১৫, মমিনুল ০ ব্যাটিং; এজাজ ১৩/১, সাউদি ৮/১)। নিউজিল্যান্ড : ১৮০/১০ (ফিলিপস ৮৭, উইলিয়ামসন ১৩, জেমিসন ২০; মিরাজ ৫৩/৩, তাইজুল ৬৪/৩, নাঈম ২১/২, শরিফুল ১৫/২) তৃতীয় দিন শেষে।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন