বিশ্ববাজারে কমলো জ্বালানি তেলের দাম: প্রতি ব্যারেল ৮০ ডলারেরও কম

gbn

জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //

গত ছয় সপ্তাহের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দর আজ সবচেয়ে কম। ব্যারেলপ্রতি জ্বালানি তেলের দর এখন ৮০ ডলারের নিচে নেমে এসেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, গত ৭ অক্টোবর ব্যারেলপ্রতি জ্বালানি তেলের দর ছিল ৭৯ দশমিক ২৮ ডলার। আজ একপর্যায়ে দর এর নিচে নেমে গিয়েছিল। তারপরে অবশ্য সামান্য একটু বেড়ে হয়েছে ৮০ ডলার ৫১ সেন্ট।

 

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছিল। হঠাৎ করে কমার কারণ নিয়েও চলছে নানা বিশ্লেষণ। রয়টার্স জানাচ্ছে, এটি সম্ভব হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধ চীন রেখেছে বলেই। বাইডেন প্রশাসন তার মিত্রদের কাছে অনুরোধ করেছিল যাতে দেশগুলো তাদের সংরক্ষিত (রিজার্ভ) তেল বাজারে ছেড়ে দেয়। আর সবাইকে অবাক করে দিয়ে চীন এ কাজটিই করেছে। যুক্তরাষ্ট্র-চীন অনেক দিন ধরেই বাণিজ্যযুদ্ধে লিপ্ত। কোভিড-১৯–এর সংক্রমণ ও ট্রাম্পের পরাজয় সেই বাণিজ্যযুদ্ধ কিছুটা কমিয়ে রাখলেও একেবারেই শেষ হয়ে যায়নি। কিন্তু চীন যে যুক্তরাষ্ট্রের এই অনুরোধ রাখবে তা অনেকেই আশা করেননি। তবে চীনের এই সিদ্ধান্ত বাজারকে প্রভাবিত করেছে, কমেছে তেলের দর।

তেলের দর গত অক্টোবর থেকে বাড়া শুরু করেছিল মূলত তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেকের এক সিদ্ধান্তে। তারা আগের লোকসান তুলে আনতে জ্বালানি তেলের উত্তোলন কমিয়ে দেয়। যেহেতু বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে, ফলে বাড়ছিল তেলে চাহিদা। আবার কোভিড সংক্রমণের সময় সরবরাহ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় এমনিতেই বিভিন্ন ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছিল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ চিন্তিত মূল্যস্ফীতির চাপ নিয়ে। এ রকম একসময় চাহিদা বৃদ্ধি ও জোগান কমে যাওয়ায় জ্বালানি তেলের দর ব্যারেলপ্রতি ৮৫ ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। ২০১৪ সালের পরে এটাই ছিল সর্বোচ্চ দর।

প্রতিটি দেশই আপত্কালীন সময়ের জন্য জ্বালানি তেলের একটি সংরক্ষিত অবস্থায় রাখে। মূলত এটি শুরু হয়েছিল ১৯৭০ সালে, যখন আরব দেশগুলো তেল বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। এরপর এই ধরনের আরেকবার নিয়েছিল ২০১১ সালে, যখন ওপেক সদস্য লিবিয়া যুদ্ধে জড়িয়ে যায়।

যুক্তরাষ্ট্র যে কেবল চীনকেই সংরক্ষিত রাখা তেলের ব্যবহার বাড়াতে বলেছে তাই নয়, একই অনুরোধ করা হয়েছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারতের মতো বৃহৎ তেল ব্যবহারকারী দেশগুলোকে। এর মধ্যে শুরুতেই চীন অনুরোধ রক্ষা করায় তা ওপেককে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। কেননা, বিশ্বের শীর্ষ তেল ব্যবহারকারী দেশ চীন। যদিও এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ওপেক এ নিয়ে কিছু বলেনি। তবে তারা যে বিস্মিত তা জানিয়েছে রয়টার্স। ওপেকের সদস্য এখন ১৫টি দেশ। তাদের মিত্র রাশিয়া। এই দুই মিলে তাদের বলা হয় ওপেক প্লাস। এই ওপেক প্লাসের একটি সূত্রের কথা উল্লেখ করে রয়টার্স জানায়, তেল রপ্তানিকারক দেশগুলো মনে করছে যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ দরকার ছিল না। কেননা, বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে কোভিড সংক্রমণ বাড়ছে। ফলে এমনিতেই তেলের চাহিদা আবার কমে যাবে এবং দামও কমবে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, তেলের দর আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, তা থেকে বিশ্ব কিছুটা দূরে সরে যাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়া নিয়ে চিন্তিত হয় মূলত অক্টোবর থেকেই। এর আগের সাত বছর তেলের দাম ছিল অনেক কম। তখন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) কম দামে তেল কিনে দেশের ভোক্তাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করেছে ৪৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। এই সাত বছরে সরকার মাত্র একবার দাম কমায়, তা–ও অতি সামান্য, মাত্র ৩ টাকা প্রতি লিটারে। কিন্তু দাম বাড়তে শুরু করার এক মাসের মধ্যেই বিপিসির দেওয়া প্রস্তাব মেনে ডিজেল ও কেরোসিন তেলের দাম বাড়িয়ে দেয় লিটারে ১৫ টাকা। অর্থাৎ এক লাফে বাড়ে ২৩ শতাংশ। এর প্রতিক্রিয়ায় পরিবহন খাতের ভাড়া সরকার বাড়িয়ে দিয়েছে ২৭ শতাংশ।

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন