বিশ্বমানবতার মুক্তির সনদ, শান্তির দিশারী, রাহমাতুল লিল আলামীন হযরত মুহাম্মদ মোস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আগমনবার্ষিকী পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী উপলক্ষে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের পতাকাবাহী সংগঠন আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকের দেশব্যপী কর্মসুচির অংশ হিসেবে সেন্ট্রাল কাউন্সিলের উদ্যোগে লন্ডনের স্থানীয় একটি হলে গত ২ ডিসেম্বর রবিবার আয়োজন করেছে এক গ্রান্ড কনফারেন্সের।
আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকের প্রেসিডেন্ট আল্লামা হাফিজ আবদুল জলিলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ গ্রান্ড কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ‘র প্রেসিডেন্ট বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ হযরত আল্লামা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ছাহেবাজাদায়ে ফুলতলী।
প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাহরাইনের বিশিষ্ট বুযুর্গ, বাহরাইন ইউনিভার্সিটির প্রফেসর শায়েখ ড নাজী বিন রাশীদ আল আরাবী আল আজহারী।
কনফারেন্সে বিশেষ মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আরব আমিরাতের সাবেক বিচারপতি ও বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর সাবেক সভাপতি শায়খুল হাদীস হযরত আল্লামা হবিবুর রহমান, মিশরের বিশ্বকারী আবদুল বাছিত (রহ.) এর ছাহেবজাদা ক্বারী ইয়াসির আবদুল বাছিত।
আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকের জয়েন্ট সেক্রেটারি মাওলানা ফরিদ আহমদ চৌধুরী ও সাইদ আহমদ এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত কনফারেন্সে গুরুত্বপূর্ন আলোচনা পেশ করেন আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ব্রিকলেন জামে মসজিদের খতীব হযরত মাওলানা নজরুল ইসলাম, মাওলানা শিহাব উদ্দিন, জেনারেল সেক্রেটারি মাওলানা মোহাম্মদ হাসান চোধুরী ফুলতলী, দারুল হাদীস লাতিফিয়া নর্থওয়েস্টের প্রিন্সিপাল মাওলানা সালমান আহমদ চৌধুরী ফুলতলী, বৃটিশ মুসলিম স্কুল বার্মিংহাম এর প্রিন্সিপাল মাওলানা এম এ কাদির আল হাসান, দারুল হাদীস লাতিফিয়া লন্ডনের শিক্ষক মাওলানা মারুফ আহমদ, ম্যানচেস্টার শাহজালাল মসজিদের ইমাম ও খতীব মাওলানা খায়রুল হুদা খান প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হযরত আল্লামা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী বলেন, বিশ্বনবী (সা.) হলেন আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় রহমত ও অনুগ্রহ। আর আল্লাহর রহমত ও করুণাপ্রাপ্তির শুকরিয়া স্বরূপ খুশি উদযাপনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে কুরআনে কারীমে। এরই জন্য যুগ যুগ ধরে সত্যপন্থী উলামায়ে কিরাম আয়োজন করে আসছেন ঈদে মীলাদুন্নবীর। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূলের প্রতি যাদের মুহ্ব¦ত আছে তারাই আল্লাহর রাসূলের পরিপূর্ণ অনুসরণ করে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে শায়েখ প্রফেসর ড. নাজি ইবনে রাশীদ আল আরাবী আল আজহারী বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ভালবাসা লাভের জন্য তাঁর হাবীব (সা.) কে ভালবাসতে হয়। আর রাসূলে পাক (সা.) এর মহব্বতই ঈমান পরিপূর্ণ হওয়ার পূর্বশর্ত। আল্লাহর রাসূলের মহব্বত লাভ এবং প্রকাশের অন্যতম একটি মাধ্যম হলো ঈদে মীলাদুন্নবী (সা.) মাহফিল। তিনি বলেন, হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (রহ.) তাঁর অনুসারীদের অন্তরে আল্লাহর রাসূল (সা.) এর মুহাব্বত সৃষ্টি করে দিয়ে গেছেন।
পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী উপলক্ষে আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকের উদ্যোগে ‘‘দ্যা ফার্স্ট স্প্রিং’’ নামে একটি স্মারকেরও মোড়ক উম্মোচন করা হয়।
গ্রান্ড ঈদে মীলাদুন্নবী (সা.) কনফারেন্স উপলক্ষে রাসূলে পাক (সা.) এর উপর দশ মিলিয়ন দুরুদ পাঠের উদ্যোগ নেওয়া হলে এতে ব্যাপক সাড়া মিলে এবং এগারো মিলিয়ন এর বেশি দুরুদ পাঠের রিপোর্ট পাওয়া যায়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যারা এই মহতী উদ্যোগে শরীক হয়েছেন, আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। গ্রান্ড কনফারেন্সে ইউকের বিভিন্ন শহর থেকে আনজুমানে আল ইসলাহর নেতা-কর্মী, উলামায়ে কিরামসহ সহস্রাধিক নবী প্রেমিক মুসলিম জনতা উপস্থিত হন।
কনফারেন্স শেষে মীলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় এবং বার্মা, সিরিয়াসহ বিশ্ব মুসলিমের শান্তি, মুক্তি ও সমৃদ্ধি এবং মরহুম উম্মতে মুহাম্মদীর মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দু‘আ পরিচালনা করেন প্রধান অতিথি হযরত আল্লামা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী।