কানাডায় ২রা সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাত নয়টায় অনুষ্ঠিত হলো ভার্চুয়াল প্রতিবাদ সভা। মুক্তিযুদ্ধ গবেষক তাজুল মোহাম্মদ’র আহ্বানে বাংলাদেশে বিচারহীনতা, মব জাস্টিস, মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা ও তাদের কারারুদ্ধ করার প্রতিবাদে ভার্চুয়াল প্রতিবাদ সভার আয়োজন হয়।
সূচনা বক্তব্যে তাজুল মোহাম্মদ স্মরন করেন বঙ্গবন্ধু, জাতীয় চার নেতা, সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা, ত্রিশ লাখ শহীদ ও সম্ভ্রমহারা মা-বোনদের। উপস্থিত সকলের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়ে স্যালুট জানান সভায় সংযুক্ত সকল মুক্তিযোদ্ধাদের।
তিনি বলেন শত শত বছরের আন্দোলন সংগ্রামের শেষে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধীনতার তরে প্রস্তুত করেন। নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির ম্যান্ডেড নিয়ে যথোপযুক্ত সময়ে স্বাধীনতা ঘোষনা করেন। নয় মাসের যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি প্রথম পেলো স্বাধীনতা। বিশ্বে প্রথম যুদ্ধের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠা পায় একটি জাতি রাষ্ট্র। বাংলাদেশেই রচিত হয় সবচেয়ে গনতান্ত্রিক সংবিধান। আর ৫৪ বছর পর স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা হরণ করে নিয়েছে সেই স্বাধীনতা। দীর্ঘ বক্তব্যে তিনি ২০২৪ এ হারিয়ে যাওয়া স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করতে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। একটি অরাজনৈতিক সংগঠন গড়ে এর মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনেরও পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরুন নবী বলেন আমাদের দেশ ছিল অসাম্প্রদায়িক আর এখন দাঁড়াচ্ছে এক অকার্যকর দেশে। দিনদুপুরে ধর্ষণ,রাহাজানি,মভ সন্ত্রাস,নেই আইনের শাসন মৌলবাদের দেশ, সাম্প্রদায়িকতার দেশ। এই অবস্থা হতে উত্তোরণের উপায় হলো আজ নয়, আগামীকাল নয় গতকাল-ই এই ইউনূস সরকারের পতন হওয়া উচিৎ ছিল।
সংহতি জানাতে বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন বলেন আজ সংবিধান ধ্বংসের মুখে। এই সরকার ৭১-র চিহ্ন,মুক্তিযুদ্ধ,স্বাধীনতা কিছুই রাখবে না। তিনি সমুদ্র বন্দর,পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আলোকপাত করতেগিয়ে আরো বলেন পাকিস্তান আমলে যুদ্ধের সময়ে টিক্কাখান বলেছিল ‘আমি মাটি চাই, দেশ দরকার নাই। আর এই ইন্টেরিম সরকার মাটিও রাখবে না, দেশও রাখবে না। সম্ভব হলে মাটি-ই বিক্রি করছে।
অধ্যাপক ডাক্তার সুধেন্দু বিকাশ দাস আক্ষেপ করে বলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে হারিয়েছি আমার দুই দাদুকে; আজ এই অবস্থায় দেশকে দেখতে হবে তা ভাবতেও কষ্ট হয়! চলচ্চিত্র নির্মাতা রওশন আরা নিপা বলেন আমাদের মুক্তিযুদ্ধ,বাংলাদেশ,পতাকা, সংবিধান এবং জাতীয় সংগীত এই সংস্কৃতির, বাঙালির যে জাতি সত্ত্বার জায়গাটা, যে কারণে অসাম্প্রদায়িক সেই জায়গাটার ন্যারেটিভ দাঁড় করাতে হবে; দখল নিতে হবে। পালন করতে হবে।
ভার্চুয়াল সভায় আরো কথা বলেন ভি এ জি,সভাপতি শাহ মোস্তাইন বিল্লাহ,অধ্যাপক ড. আব্দুল আউয়াল, ডক্টর সৈয়দ জাহিদ হোসেন, প্রবীণ রাজনীতিক আবুল কালাম আজাদ, সুশান্ত দাস প্রমুখ ।
এছাড়াও কানাডা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব দীপক ধর অপু, সাংস্কৃতিক কর্মী রঞ্জিত মজুমদার, মন্ট্রিয়ল উদীচীর সাধারণ সম্পাদক শর্মিলা ধর,সাংবাদিক সৈয়দা জোহরা শাম্মী সহ উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধা, একাত্তরের শহীদ সজনসহ কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং সমাজের সর্বস্তরের লোকজন ভার্চুয়াল সভায় সংযুক্ত হন।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন