রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সোমবার মিত্র দেশগুলোর সামনে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার সাফাই দিয়ে বলেছেন, এই সাড়ে তিন বছরের যুদ্ধ রাশিয়ার কারণে নয়, বরং পশ্চিমা দেশগুলোর প্ররোচনার ফল।
চীনের তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এই সংকট ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলায় শুরু হয়নি, বরং পশ্চিমা শক্তির সমর্থন ও প্ররোচনায় সংঘটিত অভ্যুত্থান থেকেই এর সূচনা।’
তিনি ২০১৩-১৪ সালের ইউক্রেনের ইউরোপপন্থী বিপ্লবের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন, যেখানে রুশপন্থী প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। এরপর রাশিয়া ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয় এবং পূর্ব ইউক্রেনে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহায়তা দেয়, যা গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়।
পুতিন আরো অভিযোগ করেন, ‘পশ্চিমা দেশগুলোর ক্রমাগত ইউক্রেনকে ন্যাটোতে টেনে নেওয়ার প্রচেষ্টা’ এই সংকটের আরেকটি বড় কারণ।
এসসিও সম্মেলনে পুতিন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান। মস্কো ও বেইজিং সাংহাই সহযোগিতা সংস্থাকে ন্যাটোসহ পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ব্লকের বিকল্প হিসেবে তুলে ধরেছে।
পুতিন বলেন, ‘বিশ্ব এখন এমন একটি নতুন ব্যবস্থার প্রয়োজন, যা ইউরোপকেন্দ্রিক ও ন্যাটোকেন্দ্রিক পুরোনো কাঠামোর বিকল্প হবে ও বৃহত্তর পরিসরের দেশগুলোর স্বার্থকে গুরুত্ব দেবে।
’
তিনি আরো জানান, চীন, ভারত ও অন্যান্য কৌশলগত অংশীদারদের ইউক্রেন সংকট সমাধানে উদ্যোগকে রাশিয়া গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মস্কো ও কিয়েভকে যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনায় বসার আহ্বান জানালেও শান্তি প্রস্তাবগুলো এখনো অচলাবস্থায় রয়েছে। পুতিন কঠোর শর্ত দিয়ে বলেছেন, কিয়েভকে পশ্চিমা সমর্থন ত্যাগ করতে হবে ও নতুন করে ভূখণ্ড ছাড়তে হবে—যা ইউক্রেন স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
পুতিন জানান, তিনি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সাম্প্রতিক আলোচনাসহ যুদ্ধের কূটনৈতিক সমাধান নিয়ে আলাপ করবেন।
তিনি সোমবারই ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি, ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করবেন।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন