সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের বহুল আলোচিত তাহিরপুর সীমান্তে যত দিন যাচ্ছে চোরাচালান বাণিজ্য ততই জমজমাট হয়ে উঠছে। চোরাকারবারীরা প্রতিদিন কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি ভারত থেকে অবাধে বিভিন্ন মালামাল পাচাঁর করছে। এই সীমান্ত দিয়ে কয়লা, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র পাচাঁর করতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে, তাড়া খেয়ে নদীতে ডুবে ও গর্তে পড়ে এপর্যন্ত শতাধিক লোকের মৃত্যু হয়েছে। তাই চিহ্নিত চোরাকারবারীদের গ্রেফতারের জন্য সেনা বাহিনীর সহযোগীতা জরুরী প্রয়োজন। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে-গতকাল মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্ভর) রাত ১টার পর থেকে জেলার তাহিরপুর উপজেলার চারাগাঁও সীমান্তের জঙ্গলবাড়ি ও কলাগাঁও এলাকা দিয়ে একাধিক চোরাচালান মামলার আসামী রফ মিয়া, আইনাল মিয়া, সাইফুল মিয়া, দীপক মিয়া, এই সীমান্তে এলসি পয়েন্ট, বাঁশতলা ও লালঘাট এলাকা দিয়ে একাধিক চোরাচালান মামলার আসামী বাবুল মিয়া, সাইকুল মিয়া, শফিকুল ইসলাম ভৈরব, রুবেল মিয়া, সোহেল মিয়া, আনোয়ার হোসেন বাবলু, শহিদুল্লাহ, ফারুক মিয়া, খোকন মিয়া, আমীর আলী, জামীর আলী, শারাফত আলী ও তোতলা আজাদগং পৃথক ভাবে ভারত থেকে পাচাঁরকৃত প্রায় ১হাজার মেঃটন চোরাই কয়লাসহ চিনি, পেয়াজ, সুপারী ও মাদকদ্রব্য পাঁচার করে ১২টি ইঞ্জিনে নৌকা বোঝাই শুরু করে। একই সময়ে পাশের বালিয়াঘাট সীমান্তে ইয়াবা কালাম, হোসেন আলী, রতন মহলদার, জিয়াউর রহমান জিয়া,মনির মিয়া, কামরুল মিয়াগং,বীরেন্দ্রনগর সীমান্তে লেংড়া জামাল, শেখ মস্তোফাগং, চাঁনপুর সীমান্তের ১২০২নং পিলার সংলগ্ন পর্যটনস্পট বারেকটিলা, আনন্দনগর ও কড়ইগড়া এলাকা দিয়ে একাধিক চোরাচালান মামলার আসামী শাহিবুর মিয়া, ফকর উদ্দিন, শফিকুল মিয়া, তোতা মিয়া, ভোটকুন মিয়া, রফিক, নিজাম মিয়া, সাইকুল মিয়া, সোলেমান মিয়া, জামাল মিয়া, বুলবুল মিয়াগং ও পাশের লাউড়গড় সীমান্তের যাদুকাটা নদী, শাহ আরেফিন মোকাম ও দশঘর এলাকা দিয়ে চোরাকারবারী বায়েজিদ, জসিম, নুরু মিয়া, জজ মিয়া, রফিক মিয়াগং পৃথক ভাবে ভারত থেকে ঠেলাগাড়ি ও নৌকা বোঝাই করে অবৈধ ভাবে চিনি,পেয়াজ, ফুছকা,সুপারী,নাসির উদ্দিন বিড়ি ও মদ-গাঁজা,ইয়াবা,কয়লা ও পাথর পাচাঁর শুরু করে। এখবর পেয়ে আজ বুধবার (১১ সেপ্টেম্ভর) ভোর ৫টায় চারাগাঁও সীমান্তের লালঘাট গ্রামের চোরাকারবারী ফারুক ও শহিদুল্লাহ বাড়ি সামনে অভিযান চালিয়ে পাচাঁরকৃত ২০মেঃটন চোরাই কয়লা জব্দ করে বিজিবি। কিন্তু ওই দুই চোরাকারবারীর প্রায় ১৫০মেঃটন কয়লা বোঝাই ৩টি ইঞ্জিনে নৌকা আটক করতে পারেনি। তবে পাচাঁরকৃত কয়লা বোঝাই প্রতি নৌকা থেকে ১০হাজার টাকা ও বালির নৌকা থেকে ২হাজার টাকা করে বিজিবি নাম ভাংগিয়ে চাঁদা উত্তোলন করেছে সোর্স শফিকুল ইসলাম ভৈরব, রফ মিয়া, আইনাল মিয়া, দীপক মিয়া ও সাইফুল মিয়া। কিন্তু এসব সোর্স পরিচয়ধারীদের ব্যাপারে নেওয়া হয়নি কোন পদক্ষেপ। এবং চাঁনপুর ও লাউড়গড় সীমান্তে কোন মালামাল আটকরে খবর পাওয়া যায়নি। এব্যাপারে চাঁনপুর সীমান্তের কড়ইগড়া গ্রামের বাসিন্দা ও উত্তর বড়দল ইউপি মেম্বার কফিল উদ্দিন বলেন- বিজিবির টহলে থাকা সদস্যরা প্রতিবস্তা চিনি ও পেয়াজ থেকে ১শ টাকা, প্রতিবস্তা ফুছকা থেকে ১৫০টাকাসহ মাদক ও বিড়ি থেকে চাঁদা নিয়ে গত ২দিনে প্রায় ২০লাখ টাকা মালামাল ভারত থেকে অবৈধ ভাবে পাচাঁর করেছে চোরাকারবারীদের দিয়ে। এব্যাপারে ক্যাম্প কমান্ডারকে বারবার জানানোর পরও কোন পদক্ষেপ নেয়নি। এব্যাপারে জানতে চাঁনপুর বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার আব্বাসের সরকারী মোবাইল নাম্বারে (০১৭৬৯-৬১৩১২৯) বারবার কল করার পর ফোন রিসিভ করেনি। চারাগাঁও ক্যাম্প কমান্ডার সুবেদার আব্দুর রহিম বলেন- আমি ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর চোরাই কয়লা বোঝাই ইঞ্জিনের নৌকা নিয়ে চোরাকারবারীরা পালিয়ে যায়,ওই সময় দুই চোরাকারবারীর বাড়ির সামনে হাওরের পাড়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৪৬০বস্তা (২০মেঃটন ) কয়লা জব্দ করি। আমাদের ক্যাম্পে নৌকা না থাকার কারণে অভিযান পরিচালান করতে সমস্যা হচ্ছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন