মৌলভীবাজারে ৯০ দিনের শিশুকে কোলে নিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে মা

শিশুর বয়স ৯০ দিন। বাবা-মায়ের বিয়ের আগেই তার জন্ম হয়েছে। তবে এ জন্ম কোনো অলৌকিক নয়। বুধবার শিশুর বাবা আশিষ বাউরী ও মা কুঞ্জুমালের বিয়ে হয়।

 

 

 

আশিষ বাউরী ও কুঞ্জুমালের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এক পর্যায়ে সে সম্পর্ক শারীরিক সম্পর্কে গড়ায়। তখন শিশুটি তার মায়ের গর্ভে আসে; কিন্তু শিশু আঁচলের বাবা বাউরী মেনে নেয়নি।

 

জানা যায়, মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ইন্দানগর চা বাগানের চা শ্রমিক কুঞ্জুমালের সঙ্গে দীর্ঘ ১২ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল চা শ্রমিক আশিষ বাউরীর। প্রেমের সম্পর্ক শারীরিক সম্পর্কে জড়ালে আঁচল তার মায়ের গর্ভে আসে।

 

 

আঁচলের মা কুঞ্জুমাল যখন ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা তখন বাবা আশিষ ভাউরী গর্ভের সন্তান নষ্ট করার চেষ্টা করেছিলেন। এ অভিযোগে কুঞ্জুমাল রাজনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় পুলিশ ২০২৩ সালের ১১ আগস্ট আশিষ বাউরীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। জেলা আদালত আশিষ বাউরীর জামিন নামঞ্জুর করেন।

 

 

পরবর্তীতে বিগত ১১ মার্চ জামিনের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করলে বাদী কুঞ্জুমালকে বিয়ের শর্তে আসামির জামিন মঞ্জুর করেন। হাইকোর্টের নির্দেশের আলোকে ধর্মীয় সব নিয়ম মেনে মৌলভীবাজার কারাগার এ বিয়ের আয়োজন করে। বিয়ে পড়ান বাগানের পুরোহিত পংকজ উপাধ্যায়। এ সময় উভয়ের স্বজন ও বাগানের পঞ্চায়েত উপস্থিত ছিলেন।
 

বিয়ের সময় ৩ মাস বয়সের আঁচলকে কোলে নিয়ে কারাগারে আসেন কুঞ্জুমাল। আঁচলকে তার মামির কোলে রেখে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা করেন কুঞ্জুমাল।

 

 

মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সহকারী কমিশনার শাওন মজুমদার।

 

আসামিপক্ষের সুজন কান্তি বিশ্বাস বলেন, হাইকোর্টের এ রায় বিচার ব্যবস্থায় একটি মাইলফলক। এ রায়ের মাধ্যমে ৩ জন ব্যক্তি নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে।

 

 

জেল সুপার মুজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, ধর্মীয় সব নিয়ম মেনে হাইকোর্টের নির্দেশের আলোকে এ বিয়ে হয়েছে। আমরা নবদম্পতির উন্নত জীবন কামনা করি।

 

 

তিনি আরও বলেন, হাইকোর্টের পরবর্তী নির্দেশনার পূর্ব পর্যন্ত আশিষ বাউরী কারাগারে থাকবেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন