জার্মানি রাশিয়ার বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংঘাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে। জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে পাওয়া কিছু গোপন নথির বরাত দিয়ে বিল্ড সংবাদপত্র এ সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
গণমাধ্যমটি দাবি করেছে, রাশিয়া আগামী বছর ন্যাটোর মিত্র দেশগুলোতে আক্রমণ করে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ প্রসারিত করতে পারে, যা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাব্য সূচনার দিকে ইঙ্গিত করছে। রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান সংঘাত দুই বছর পূরণ হওয়ার কাছাকাছি আসার সময় এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ পেল।
এদিকে রুশ কর্মকর্তারা বিল্ডে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তাঁরা এটিকে ‘ভুয়া’ বলে অভিহিত করেছেন।
প্রতিবেদনে আরো অভিযোগ করা হয়েছে, ইউরোপের সশস্ত্র বাহিনী ন্যাটোর পূর্ব দিকে রাশিয়ার আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, যার মধ্যে সাইবার আক্রমণ অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রের বরাত দিয়ে বিল্ড আরো বলেছে, মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হবে এবং কয়েক হাজার জার্মান সেনাকে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হবে।
জার্মান গণমাধ্যমটি বলছে, যেহেতু পশ্চিমাদের থেকে তহবিল হ্রাস পাচ্ছে, রুশ বাহিনী ‘বসন্তকালীন আক্রমণ’ হিসেবে ইউক্রেনের সেনাদের ওপর আঘাত হানবে। পত্রিকাটি ধাপে ধাপে, মাসে মাসে, কিভাবে রুশ বাহিনী এগিয়ে যাবে এবং ন্যাটো কিভাবে তার মিত্রদের রক্ষা করবে তা বর্ণনা করেছে।
গোপন নথি অনুসারে, সেপ্টেম্বরে সংঘর্ষ বাড়বে এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পশ্চিম রাশিয়া ও বেলারুশে প্রায় ৫০ হাজার রুশ সেনাকে নিয়ে একটি বড় আকারের সামরিক মহড়া শুরু করতে প্ররোচিত হবেন। রাশিয়া তখন কালিনিনগ্রাদে সেনা এবং মধ্যপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠাতে পারে।
কালিনিনগ্রাদ এমন একটি রুশ অঞ্চল, যা ন্যাটোর সদস্য পোল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়ার মধ্যে অবস্থিত।
বিল্ড আরো বলেছে, ডিসেম্বরের মধ্যে, রাশিয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে তার পক্ষপাতমূলক প্রচার এবং আরো সহিংসতাকে ইন্ধন দেওয়ার সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।
নথিতে বলা হয়েছে, ন্যাটো ২০২৫ সালের মে নাগাদ ‘বিশ্বাসযোগ্য প্রতিরোধের ব্যবস্থা’ নেবে, যার লক্ষ্য হবে রুশ সেনাদের প্রতিক্রিয়া দেওয়া এবং রুশ ও পশ্চিমা সেনাদের মধ্যে যুদ্ধ প্রতিরোধ করা।
এদিকে রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাস ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভকে প্রতিবেদনটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিল। তবে তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ‘সম্প্রতি এই সংবাদপত্রটি নিয়মিতভাবে বিভিন্ন ভুয়া খবর এবং ভিত্তিহীন গল্প প্রকাশের দিকে ঝুঁকেছে।’
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা প্রতিবেদনটিকে ‘গত বছরের রাশিফল’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন