ব্রিকসে যুক্ত হতে চীনের সমর্থন চাইবে বাংলাদেশ

gbn

চার বছর পর বৈঠকে বসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠেয় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দুই শীর্ষ নেতার বৈঠক হতে যাচ্ছে। বৈঠকে পাঁচ দেশের আঞ্চলিক অর্থনৈতিক জোট-ব্রিকসে যুক্ত হতে বেইজিংয়ের সমর্থন চাইবে ঢাকা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কূটনৈতিক সূত্র বলছে, জোহানেসবার্গে আগামী ২২ থেকে ২৪ আগস্ট ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

ব্রিকস সম্পর্কিত সর্বশেষ খবর | BRICS

ব্রিকস সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ হলেও আনুষ্ঠানিক বৈঠক নিয়ে এখনও নিশ্চিত বার্তা মিলছে না। তবে আগামী মাসে (সেপ্টেম্বরে) নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠেয় জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা। তখন নয়াদিল্লিতে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসবেন হাসিনা-মোদি।

 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, প্রধানমন্ত্রী ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দেবেন। আগামী ২২ থেকে ২৪ আগস্ট জোহানেসবার্গে ব্রিকস সম্মেলন চলবে। ওই সময়ে প্রধানমন্ত্রী ব্রিকসের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কার্টেসি কল অন করবেন। সেখানে চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক হবে। চীন সেপ্টেম্বরে এশিয়ান গেমসে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ করেছিল, কিন্তু ওই একই সময়ে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের কারণে সেটা সম্ভব হচ্ছে না।

মন্ত্রণালয়ের এ কর্মকর্তা বলেন, ২০১৯ সালের চার বছর পর চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক হবে। সেই বিবেচনায় বৈঠকটি অবশ্যই খুব গুরত্বপূর্ণ। দুই শীর্ষ নেতা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন। বৈঠকে নির্দিষ্ট অ্যাজেন্ডা নেই। দুই দেশের সম্পর্ক কীভাবে আরও এগিয়ে নেওয়া যায়, সেই বার্তা হয়ত দুই নেতা দেবেন।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, করোনা মহামারি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধসহ ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যু নিয়ে ভূ-রাজনৈতিক যে প্রেক্ষাপট দাঁড়িয়েছে, সেখানে হাসিনা-জিনপিংয়ের বৈঠক বেশ গুরত্বপূর্ণ। এছাড়া বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে পশ্চিমাদের অব্যাহত চাপের মধ্যে এই দুই শীর্ষ নেতার বৈঠক হবে অনেক বড় বার্তা।

ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র বলছে, দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছাড়াও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনার সুযোগ থাকবে। এর ফলে দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। ঢাকা-বেইজিংয়ের মধ্যে অফিসিয়াল পর্যায়ের বিষয় আলোচনাধীন রয়েছে, সেগুলো রাজনৈতিক আলোচনায় সমাধান সম্ভব হবে।

আরও পড়ুন- ব্রিকস জোটে বাংলাদেশকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত চীন

চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুনশি ফায়েজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক গভীর। এ রকম সম্পর্ক অন্যান্য আরও অনেক দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের আছে। ভারতের সঙ্গে আছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আছে, জাপানের সঙ্গে আছে। একেক জনের সঙ্গে সম্পর্কের গুরত্বের আলাদা আলাদা কারণ আছে। তার ফলে যত ঘন ঘন দেখা হবে, সেটাই আমরা চাই; তাও সবসময়তো হয়ে ওঠে না। ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে একটি সুযোগ গ্রহণ করে তারা কথাবার্তা বলবেন। দুই দেশের যে সম্পর্ক তাতে এ ধরনের কথাবার্তার গুরুত্ব রয়েছে অনেক।

ব্রিকস সম্পর্কিত সর্বশেষ খবর | BRICS

সাবেক এ রাষ্ট্রদূত বলেন, অনেক বিষয় আছে, যেগুলো নিয়ে হয়ত আমাদের সহযোগিতা বা এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা থাকতে পারে। সেগুলো কীভাবে দূর করা যায়। নতুন কীভাবে কোনে ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে পারি, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। ভূ-রাজনীতি নিয়ে পরস্পর পরস্পর বিনিময় করা যেতে পারে।

ব্রিকসে বাংলাদেশ যুক্ত হওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক অবস্থানে চীন। নতুন কোনো দেশকে যুক্ত করার বিষয়ে জোটটির সদস্যদের মধ্যে বিভক্তি রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্রিকসের সদস্য পদ পেতে বেইজিংকে পাশে চাইবে ঢাকা।

এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যৈষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, স্বাভাবিকভাবে আমরা চাইছি, ব্রিকসে যুক্ত হতে। প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে এ বিষয়ে চীনের সমর্থন চাওয়া হবে, যেন ব্রিকসে আমাদের যুক্ত করা হয়।

চলতি বছরের জুন মাসে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকসের সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছে। ওই মাসে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) একটি অনুষ্ঠানের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার বৈঠকের পর বিষয়টি সামনে আনেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সে সময়ে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বাংলাদেশ আগস্টে ব্রিকসের সদস্য হিসেবে যুক্ত হতে পারে।

গত বছর ব্রিকসে নতুন সদস্য বাড়াতে আগ্রহ প্রকাশ করে জোটের পাঁচ দেশ। তবে পরবর্তীতে জোটের মধ্যে মতের অমিল আর বিভক্তি দেখা যায়। বিশেষ করে, ভারত ও ব্রাজিল ব্রিকসে নতুন সদস্য নেওয়ার বিষয়ে আপত্তি তুলেছে। এতে করে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠেয় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে নতুন কোনো সদস্য জোটটিতে যুক্ত হতে পারছে না, এটাই অনেকটাই স্পষ্ট। তাই ব্রিকসে যোগ দিতে অপেক্ষায় থাকতে হবে বাংলাদেশসহ আগ্রহী দেশগুলোকে।

জিবিডেস্ক //

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন