ছাতকে গোবিন্দগঞ্জ কলেজের অ‌বৈধ অধ্যক্ষের অপসারনের দাবী‌তে প্রতিবাদ সমা‌বেশ

gbn

সুনামগঞ্জ প্রতিনি‌ধি,
সুনামগঞ্জের ছাতকের গোবিন্দগঞ্জ আব্দুল হক স্মৃতি কলেজের অধ্যক্ষ সুজাত আলী র‌ফি‌কের
বিরুদ্ধে ব‌্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগসহ তাঁর অপসারণের দাবীতে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত শনিবার বিকাল থে‌কে ক‌রে ৪ ঘন্টা ব‌্যা‌পি  গোবিন্দগঞ্জ কলেজের প্রধান ফটকে গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও কলেজের প্রাক্তন ছাত্র আলহাজ্ব নিজাম উদ্দিনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কলেজের প্রাক্তন ছাত্র কাজী মাওলানা আবদুস সামাদ ও যুবনেতা ছায়াদুর রহমানের  যৌথ পরিচালনায় শুরুতে পবিত্র কালামে পাক থেকে তেলাওয়াত করেন হাফেজ আমির হোসেন।
জানা যায়, গত ৩১ ডিসেম্বর গোবিন্দগঞ্জ আব্দুল হক স্মৃতি কলেজের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয় সূবর্ণজয়ন্তী ও পূনর্মিলনী। এ অনুষ্ঠানের নামে তাঁর বিরুদ্ধে অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া অধ্যক্ষের পদটি তাঁর অবৈধ বলে রায় দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল ডিভিশন।
জানা গেছে, সরকার দলীয় ক্ষমতার দাপুট দেখিয়ে অধ্যক্ষ পদটি দীর্ঘদিন ধরে দখল করে আছেন সিলেটের জেলা আ’লীগের সহ সভাপ‌তি সুজাত আলী রফিক। তার এ
পদে থাকা বৈধ নয় বলে হাইকোর্ট রায় দেয়। এ রায়ের ওপর সুজাত আলী রফিক বাদী
হয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ডিভিশনে লিভ টু আপিল করলে ও তার এ আপিলে পূর্বের রায় বহাল রাখা হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কলেজ গর্ভনিংবডি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রনালয় সুজাত আলী রফিক দেশের প্রচলিত আইনে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ ও লুটপাট করছেন অধ‌্যক্ষ সুজাত। বিত‌র্কিত এ অধ্যক্ষের বিরু‌দ্ধে ছাত্র-ছাত্রীরা এর আগেও অনেকবার বিক্ষোভ মিছিল,প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন সহ নানা কর্মসূচি পালন করেন।

এলাকাবা‌সী ও ছাত্র সমাজ, বৃহত্তর গো‌বিন্দগঞ্জবাসীর উদ্যোগে অনু‌ষ্টিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব‌্য রা‌খেন, ছাতক উপজেলা পনিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুল, সালিশ ব্যক্তিত্ব মুজিবুর রহমান, মাস্টার মাফিজ আলী, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আবদুস শহিদ মুহিত, সুন্দর আলী বুলবুল, উপজেলা স্বেচ্চাসেবকলীগের সভাপতি ওবায়দুর রউফ বাবলু, উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি আবু বক্কর রাজা, সদরুল আমীন সোহান, আশরাফুর রহমান এনাম, সাবেক মেম্বার আলী আশরাফ তাহিদ, রাজা চৌধুরী, সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক মানব সম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক এমএ গফ্ফার, ছাতক উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক জাহিদ হাসান ডালিম, কলেজ ছাত্র এমদাদুল হক ইমন ও আলী আশরাফ।
সমাবেশ চলাকালে সৎপুর কামিল মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল মাওলানা শফিকুর রহমান, ছাতক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান, লামাকাজী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া, ছাতক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবু সাদাত লাহিন, ছাতক পৌর সভার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহিদ মজনু, উত্তর খুরমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদ, জাউয়াবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হক, ছৈলা-আফজলাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান গয়াছ আহমদ, সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গরা দাবীর সাথে একমত পোষণ করে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হয়।
এসময় প্রবীন মুরব্বি এ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ (কেনু মিয়া), গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আখলাকুর রহমান, এসএম তৈয়বুর রহমান, মুরব্বি ফ‌রিদ মিয়া, শা‌হিদুর রহমান চৌধুরী,আবদুল ল‌তিফ মাষ্টারসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেনির পেশার সহস্রাধিক লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে বক্তারা ব‌লেন, অ‌বৈধ অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক কৌশ‌লে লক্ষ লক্ষ টাকা দুর্নীতি করে যাচ্ছে। সুজাত আলী রফিক একজন প্রভাষক হিসাবে ১৯৯৬ সালে প্রথম দিকে গোবিন্দগঞ্জ আব্দুল হক স্মৃতি কলেজে যোগদান করেন। ২০০৬ সালে ২৪ জুন মাসে আবেদন করে দুই মাসের ছুটি নিয়ে লন্ডনে যান। ২০০৭ সালে ৪ এপ্রিল ১৯(৭) স্মারকে সুজাত আলী রফিক পত্র
প্রাপ্তির ১০দিনের মধ্যে স্বপদে যোগদান করতে অনুরোধ করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। তি‌নি যোগদান না করায় তার বিরুদ্ধে সরকারি চাকুরী বিধি অনুযায়ী প্রযোজনী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। ২০০৮ সালে ১০জানুযারি তার পদত্যাগ পত্র গ্রহন করলেও সুজাত আলী রফিক প্রবাসে থাকায় পৌর বিজ্ঞান প্রভাষক পদটি দীর্ঘদিন ধরে শুন্য থাকে। দীঘ ৩ বছর প্রবাসে থেকে সুজাত আলী রফিক দেশে ফেরত আসে। তার অধিকৃত পূর্ববর্তী পদে পুনবহালে জোর তদবির শুরু করে ২০০৯ সালে ১৫ ডিসেম্বরে এ পদে পূনর্বহাল জন্য আবেদন করলে তার এ আবেদন কলেজ পরিচালনা পষর্দ গ্রহন করে ২০১০সালে ২০ মার্চ পুনর্বহাল করে। তার দূর্নীতি অনিয়মে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে সাধারন ছুটি ঘোঘনা করে।
কলেজের সাবেক ছাত্র ও পরিচালনা কমিটি অভিভাবক সদস্য আশিকুর রহমান আশিক বাদী হয়ে সুজাত আলী রফিক তার অনিয়ম দূর্নীতির বিরুদ্ধে হাইকোটে রিট পিটিশন
মামলা দায়ের করেন ৪৭৩৩(২০১১) হাই কোট বেঞ্চ আদেশ প্রাপ্তির ৯০দিনের মধ্যে
কলেজ পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক গৃহিত সিদ্ধান্তে বিষয়ে নির্দেশে যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ ও তদন্ত সমাপ্ত না হওয়ার পর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রনালয় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পরিচালক পদের ডিজি বরাবরে তদন্ত শেষ না হওয়ার পর্যন্ত বেতন ভাতা স্থগিতাদেশ নির্দেশ প্রদান করেন। বেতনভাতা স্থগিতাদেশ থাকার পর  প্রতি মাসে বেতনভাতা উত্তোলন করে নেন সুজাত আলী রফিক। এ আদেশে না মেনে সুজাত আলী রফিক বাদী হয়ে লিভ টু আপিল ১৬৫০(২০১১) দায়ের করলে হাইকোট পূর্বের আদেশ স্থগিত করেন। এ স্থগিতাদেশ সুযোগে তার বেতনভাতা সংশ্লিষ্ট দাপ্তরিক তদন্ত স্থগিত হলে ২০১৬ সালে ৩১ জানুয়ারি সুপ্রিম কোটের আপিল ডিভিশনে প্রধান বিচারপতি এস.কে সিনহা বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা.সৈয়দ মাহমুদ হোসেন হাসান ফয়েজ সিদ্দিকির যৌথ বেঞ্চ ৩১ জানুয়ারি এ আদেশে লিভ টু আপিলের আবেদন খারিজ করে দেয়। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোটের আপিলেট ডিভিশন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী, হাসান ফয়েজ সিদ্দিকি এবং মির্জা হোসেইন হায়দারের যৌথ বেঞ্চ ৯ এপ্রিল ২০১৮ সালের আরেক আদেশে পুনরায় লিভ টু আপিলের আদেশ আবা‌রো খারিজ করে দেন
সুপ্রিম কোটের আপিল ডিভিশন। এ আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সরকার দলীয় ক্ষমতার দাপটে অবৈধভাবে গোবিন্দগঞ্জ আব্দুল হক স্মৃতি ডিগ্রী কলেজ অধ্যক্ষ পদটি দখল করেছেন সি‌লে‌টের জেলা আ’লীগ সহ সভাপ‌তি সুজাত আলী রফিক।
বিত‌কিত অ‌বৈধ অধ্যক্ষ সুজাত আলী র‌ফিকের বিরু‌দ্ধে নানা অনিয়ম দুনীতির ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমা‌বেশ অনু‌ষ্টিত হয়ে‌ছে।

তার বিরু‌দ্ধে গো‌বিন্দগঞ্জ এলাকায় দুনী‌তিবাজ অধ‌্যক্ষ সুজাত আলীর অপসার‌নের দাবী‌তে
উত্তাল হ‌য়ে উঠে‌ছে গো‌বিন্দগঞ্জসহ এলাকাবাসীর লোকজন। এ দুনী‌তি অ‌নিয়‌মের ঘটনা নিস্প‌তি ল‌ক্ষে রাত ৮টা পয়ন্ত সি‌লেট ও সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রতি‌নি‌ধি ও দা‌য়িত্ব  নেতাকমী‌দের নি‌য়ে বৈঠক চল‌ছে সু‌ত্রে জা‌নি‌য়ে‌ছে।

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন