গাইবান্ধায় তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন

gbn

 ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধাঃবর্ষা ভরা মাস আষার পেরিয়ে গেলেও দেখা নেই বৃষ্টির। একটু বৃষ্টির দেখা পেলে প্রশান্তি পেতো মানুষ। গত কয়েক দিনের চলমান তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জেলার জনজীবন। বর্ষা মাসেও কোথা দেখা নেই প্রশান্তির বৃষ্টির। জেলার আবহাওয়া গুমোট হয়ে আছে। এক দিকে তাপদাহ আর অন্যদিকে বাতাসে আর্দ্রতা কমে গেছে। জেলার শ্রমজীবী মানুষসহ সকল স্তরের মানুষ হাঁসফাঁস করছে। তাতানো রোদের ভাপেতাপে পুড়ছে উত্তরের জেলা গাইবান্ধা। প্রতিদিনই সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কড়া রোদ, সঙ্গে প্রচন্ড গরম। রাতেও বেলাও গরম অনেক বেশী থাকছে। ভ্যাপসা গরমে সর্দি, কাশি ও জ্বরসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ। জেলার প্রতিটি পরিবারের কেউ না কেউ অতিরিক্ত গরমের ফলে নানা রোগে শোকে ভুগেছে। 

 

আবহাওয়া পূর্বাভাস থেকে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার গাইবান্ধায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করেছে এবং রাতে তাপমাত্রার পারদ ছিলো ২৭ থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এসময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিলো ৫৫ থেকে ৫৬ শতাংশের বেশি এবং গতিবেগ ঘন্টায় ১০ থেকে ১৪ কি.মি। বাতাসের গতিবেগ কম এবং আর্দ্রতা বেশি থাকায় ৪১ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস গরম অনুভুত হচ্ছে মানুষের। প্রচ- তাপদাহের কারণে জ্বর, সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া, হিট স্ট্রোকসহ নানা রোগ দেখা দিচ্ছে। ফলে মানুষকে প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

 

 ঋতুবৈচিত্র্যে গতকাল ১৫ জুলাই শুক্রবার আষাঢ়ের শেষ দিন। এ সময় বৃষ্টি হওয়ার কথা থাকলেও তার পরিবর্তে ভাপসা গরমে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। সূর্যের তাপ অনেকটাই বেশি। উত্তপ্ত রোদের গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে মানুষ, হাঁপিয়ে উঠেছে জনজীবন। গরমের তীব্রতায় ছোটবড় সবার হাঁসফাঁস অবস্থা। বাসা থেকে বের হওয়ার পরপরই রৌদ্রতাপে অসহনীয় অবস্থায় পড়ছেন তাঁরা। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না অনেকে। রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল কমে গেছে। রোদের আঁচ থেকে রক্ষা পেতে অনেকেই এখন হাত-মুখসহ শরীরের বেশিরভাগ অংশ কাপড়ে ঢেকে বের হচ্ছেন। কেউ ব্যবহার করছেন ছাতা। গরমের হাত থেকে রেহাই পেতে মানুষ ঠাঁই নিচ্ছে গাছতলায় ও মাঠে। অনেকেই আশপাশের পুকুর, নদী ও খালবিলে ঝাঁপ দিয়ে শরীর ভিজিয়ে নিচ্ছেন। অন্য দিকে বিক্রি বেড়েছে ডাব, কোমলপানীয় আর আইসক্রিমের। শরবতের গ্লাসে, পানির বোতলে কিংবা শসার টুকরোতেও শান্তি খুঁজছেন বর্ষায় তাপদাহে নাকাল মানুষ। গ্রামগঞ্জেও বরফ দিয়ে তৈরি নানা রং আর স্বাদের শরবত বিক্রি হচ্ছে।

 

বিভিন্ন বয়সী মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, সকালে সূর্যের আলো ফুটতেই গরম শুরু হয়। সময় যতই গড়ায় গরমের তীব্রতাও বাড়তে থাকে। তবে দুপুর ১০ টা থেকে বিকেল ৬ টা পর্যন্ত অসহ্য গরম থাকে। বাতাস নেই। সন্ধ্যার পর অস্বস্তিকর গুমট হয়ে ওঠে পরিবেশ, রাতেও ভ্যাপসা গরম। জেলার অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে। তাতে দুর্বিষহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ঘুমানো যায় না। কেউ কেউ বলেছেন দিনে কয়েকবার করে গোসল করেও স্বস্তি পাচ্ছেন না মানুষ। অনেকে আবার মাটি কিংবা মেঝেতেও বিছানা পেতেছেন। নারী-শিশু-শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির মাত্রা অন্যদের তুলনায় বেশি।

 

অন্যদিকে গরমের কারণে মৌসুমি রোগের প্রকোপও বেড়েছে। এর মধ্যে বমি, ডায়রিয়া ও জ্বরে ভুগছেন বেশিরভাগ মানুষ। এ সময় বেশি করে পানি পান, শরবতসহ ঠান্ডা জাতীয় পানীয়, বিশেষ করে লেবুর শরবত, ডাবের পানি বেশি বেশি করে পান করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ। 

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন